ঢাকা: মিজানুর রহমান আজহারী। কথা বলেন বাংলা, আরবি ও ইংরেজিতে। বয়সে তরুণ, সুদর্শন, কেতাদূরস্ত। তাকে নিয়ে আলোচনার ঝড় চলছে চারদিকে। ওয়াজ মাহফিলের জগতে স্বল্প সময়ের বিচরণে পেয়েছেন বিপুল জনপ্রিয়তা। কেউ কেউ আবার তার সমালোচনায় মুখর। জাতীয় সংসদে যেমন ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন প্রশ্ন রেখেছেন, আজহারীকে কেন মালয়েশিয়ায় যেতে দেয়া হলো? তাকে কেন গ্রেপ্তার করা হলো না? সাঈদীর পক্ষে বলার অভিযোগ আনা হয়েছে তার বিরুদ্ধে। আজহারীর কোনো কোনো মাহফিলে সরকারি দলের নেতাদের মঞ্চে দেখা গেছে।
আবার সরকারি দলের কোনো কোনো নেতা তার সমালোচনাও করেছেন। ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ আবদুল্লাহ তাকে মনে করেন জামায়াতের প্রডাক্ট। যদিও আজহারী অত্যন্ত কড়া ভাষায় সে অভিযোগ নাকচ করেছেন।
এ খবর পুরনো যে, চলতি বছর মার্চ পর্যন্ত মিজানুর রহমান আজহারীর সব মাহফিল স্থগিত করা হয়েছে। ঠিক কী কারণে তিনি তার সব মাহফিল স্থগিত করেছেন তা পরিষ্কার করে বলেননি। তবে বিভিন্নস্থানে তার মাহফিলে বাধা আসছিলো। কোথাও কোথাও প্রশাসনের অনুমতি না থাকার কারণে তিনি মাহফিল করতে পারেননি। তিনি মালয়েশিয়ায় চলে গেছেন এমন খবরও বেরিয়েছে। কিন্তু তাকে নিয়ে আলোচনা থামছেই না। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে, ওয়াজ মাহফিলে, সংসদে তাকে নিয়ে বাহাস চলছেই। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকেই তাকে মাহফিলের ময়দানে ফিরতে দেয়ার দাবি জানিয়েছেন। ওয়াজ-মাহফিলে অনেক বক্তাই দাবি করেছেন, আজহারীকে যেন মাহফিল করতে দেয়া হয়। আবার দুই একজন বক্তা তার সমালোচনাও করেছেন। তারা বলছেন, আজহারীর কিছু ফতোয়া ইসলামের পরিপন্থী। সে যাই হোক আজহারীর আপাত থেমে যাওয়া নিয়ে যখন তুমুল আলোচনা চলছে তখন তিনি নীরবতা পালন করছেন। যদিও সর্বশেষ ফেসবুক স্ট্যাটাসেও ভক্তদের জন্য তিনি কিছু পরামর্শ দিয়েছেন। তার ভাষায়, সুপ্রিয় শ্রোতাদেরকে বলব, প্লিজ আমাকে নিয়ে অতিরিক্ত মাতামাতি করবেন না। আমাকে জড়িয়ে কোন ব্যাপারে কাউকে গালাগালি করবেন না। অন্য কোন মতাদর্শের আলেমদের হেয় বা ছোট করে কিছু বলতে যাবেন না।
মিজানুর রহমান আজহারীর মাহফিলে লাখ লাখ মানুষ হাজির হয়েছেন। যাদের একটি বড় অংশ তরুণ। অনেক বিশ্লেষকই বলে থাকেন, মূলত সহজ-সরল ভাষায় সমকালীন বিষয় নিয়ে কথা বলার কারণেই শ্রোতারা তার প্রতি আকৃষ্ট হয়েছেন। আবার কিছু কিছু মাহফিলে তার দেয়া বক্তব্যে বাহাসও তৈরি হয়েছে। কুমিল্লার ছেলে মিজানুর রহমান আজহারী দাখিল ও আলিম পরীক্ষায় কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখেন। পরে পড়ালেখা করেছেন মিশরের আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে। পিএইচডি করছেন মালয়েশিয়াতে।