গাজীপুর, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২০: স্বাধীনতা পুরস্কার ও একুশে পদক প্রাপ্ত প্রখ্যাত কথা সাহিত্যিক সেলিনা হোসেন বলেছেন, “পাঠ্যপুস্তকের শিক্ষার চেয়েও বড় শিক্ষা হচ্ছে মনুষ্যত্বের শিক্ষা, পাঠ্যপুস্তকের শিক্ষার পাশাপাশি বাইরের শিক্ষা গ্রহণ করে তোমরা মনুষ্যত্বের বিকাশ ঘটিয়ে একেকজন বড় মানুষ হবে, স্কুলে যা পড়াবে, বাড়িতে বাবা-মা যা পড়াবে তার পাশাপাশি এইসব জিনিস শিখবে, একজন বয়োজ্যেষ্ঠকে শ্রদ্ধা করবে, একজন রুগ্ন দরিদ্য মানুষকে সহায়তা করবে। বাবা-মা’র কাছ থেকে একটু কিছু নিয়ে তোমরা মানুষকে উপকার করার মাধ্যমে নিজের জগতকে পূর্ণ করবে, এভাবেই আগামীর বাংলাদেশ গড়বে। আমাদের সামনে ঐতিহ্যের দরজা খুলে দেবে। মনে রাখবে, ভালো রেজাল্ট জীবিকার জন্য কাজে লাগবে কিন্তু মনুষ্যত্বের শিক্ষা মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য।”
তিনি কচি-কাঁচাদের উদ্দেশ্যে আরও বলেন, “আমরা বাঙালি, বাংলা আমাদের মাতৃভাষা। ইংরেজি ভাষা শেখো, আরও দশটা ভাষা শেখো তাতে কোন ক্ষতি নেই, কিন্তু মাতৃভাষাকে আরও ভালো করে শিখতে হবে। মাতৃভাষার মধ্যে নিজের শেকড়ের সন্ধান পাবে। তিনি আজ (সোমবার) গাজীপুর সদর উপজেলাধীন ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কচি-কাঁচা একাডেমির ৩০ বছর পূর্তি উৎসবে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
কচি-কাঁচা একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা সাংবাদিক, শিশু-সংগঠক ও শিক্ষাবিদ প্রিন্সিপাল ইকবাল সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন গাজীপুর জেলার বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব শব্দ সৈনিক জনাব লিয়াকত চৌধুরী, ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান জনাব অসীম বিভাকর, কচি-কাঁচা একাডেমির প্রধান শিক্ষক আফরোজা খানম এবং অভিভাবকদের পক্ষ থেকে জনাব বিলকিস সুলতানা ও শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী জেরিন তাসনিম। সকালে বেলুন উড়িয়ে অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন প্রাক্তন কচি-কাঁচা ফোরামের সাবেক আহবায়ক, ইকবাল সিদ্দিকী এডুকেশন সোসাইটি’র সদস্য সচিব ও ইকবাল সিদ্দিকী স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক সিরাজুল হক।
দেওয়াল পত্রিকা ‘৩ দশে ৩০’ এর মোড়ক উন্মোচন করেন প্রাক্তন কচি-কাঁচা ফোরামের সভাপতি ডাঃ সোহানা সরকার। আলোকচিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন প্রাক্তন কচি-কাঁচা ফোরামের সাধারণ সম্পাদক আল আমিন বিন আকন্দ। এছাড়াও অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে প্রতিষ্ঠানের মেধাবী শিক্ষার্থীদেরকে কৃতিত্বপূর্ণ ফল ও শ্রেষ্ঠ উপস্থিতির জন্য পুরস্কৃত করা হয়, চিত্রাঙ্কন ও রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার প্রদান করা হয় এবং কচি-কাঁচাদের পরিবেশনায় অনুষ্ঠিত হয় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও মুকাভিনয়।
উৎসবে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, অভিভাবকসহ বিপুল সংখ্যক দর্শক উপস্থিত ছিলেন।
প্রেস বিজ্ঞপ্তি