জীবন নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন জামালপুরের সাংবাদিকরা। সন্ত্রাসীদের হামলা, নির্যাতন থেকে রক্ষা পেতে একযোগে থানায় সাধারণ ডায়রি করেছেন ৪৮ সাংবাদিক। সম্প্রতি জামালপুরের আহত সাংবাদিক শেলু আকন্দের নির্মম নির্যাতনের বিষয়ে তদন্ত করতে গিয়ে এমন তথ্য প্রকাশ করেছে বেসরকারী সংগঠন মুক্তপ্রকাশ।
রোববার সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য দেয়া হয়। সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়েন মুক্তপ্রকাশের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও আইএফজে’র বাংলাদেশ প্রতিনিধি খায়রুজ্জামান কামাল। উপস্থিত ছিলেন, মুক্ত প্রকাশের চেয়ারপার্সন ড. সৈয়দা আইরিন জামান, প্রধান উপদেষ্টা ফারুক ফয়সল, জেনারেলর সেক্রেটারী সালিম সামাদ ও আহত শেলু আকন্দের পরিবারের সদস্যরা।
লিখিত বক্তব্যে খায়রুজ্জামান কামাল বলেন, গত বছরের ১৮ই ডিসেম্বর রাতে বাংলাবাজার পত্রিকার জামালপুর প্রতিনিধি ও স্থানীয় পল্লী কণ্ঠ প্রতিদিন’র সাংবাদিক শেলু আকন্দের ওপর হামলা চালায় জামালপুর মিউনিসিপ্যালিটির কাউন্সিলর হাসানুজ্জামান খান আকা ওরফে রুনু খানের ছেলে জেলা ছাত্রলীগের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক রকিব খান ও তার বাহিনীর সদস্যরা। শেলু অপর একজন সাংবাদিককে মারধরের মামলায় দ্বিতীয় স্বাক্ষি ছিলেন।
ওই মামলায় তাকে সাক্ষ্য না দিতে বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়ে আসছিলো আওয়ামী লীগ নেতা রুনু খান। কিন্তু তার কথা না রাখায় গুন্ডা বাহিনী দিয়ে শেলু আকন্দের দুই পায়ের হাড় গুড়ো করে দেয়া হয়।
খায়রুজ্জামান কামাল বলেন, বর্তমানে শেলু আকন্দ ঢাকার জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। শুধু শেলু নয়, জামালপুরের আরো অনেক সাংবাদিকের ওপর হামলা করা হয়েছে। একের পর এক হুমকি দেয়া হচ্ছে। যার কারণে নিজেদের নিরাপত্তা চেয়ে এক যোগে ৪৮ জন সাংবাদিক থানায় জিডি করেন।
সংবাদ সম্মেলনে মুক্ত প্রকাশের নেতৃবৃন্দ বলেন, একটি জেলার সকল সাংবাদিক নিরাপত্তার জন্য এক সাথে জিডি করা কোন স্বাভাবিক বিষয় নয়। এতেই বোঝা যায় ওই জেলার সাংবাদিকদের পরিস্থিতি কতটা ভয়াবহ। মুক্তপ্রকাশ সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা ও সাংবাদিকদের নিরাপত্তার জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানায়।
সংবাদ সক্রান্ত বিষয়কে কেন্দ্র করেই জামালপুরের আওয়ামী লীগের ওই নেতার রোষানলে পড়েন সাংবাদিকরা। এ ঘটনায় শেলু আকন্দের ভাই বাদি হয়ে মামলা করেছেন। ওই মামলায় জামিন নিয়ে প্রকাশ্যে মামলার বাদি ও স্বাক্ষীদের হুমকি-ধমকি দিয়ে বেড়াচ্ছে রুনু খান। এ বিষয়ে প্রশাসনের আইনানুগ সহযোগিতা কামনা করেছেন শেলু আকন্দের পরিবার।