ঢাকা: দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কারামুক্তির দাবিতে নতুন করে আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। এই আন্দোলনের নামে কোনো নৈরাজ্য সৃষ্টি করলে দাঁতভাঙা জবাব দেয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
শনিবার সন্ধ্যায় ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে ঢাকার নবনির্বাচিত মেয়রদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
বিকালে নয়াপল্টনে দলীয় সমাবেশে আন্দোলনের ঘোষণা দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম ইসলাম আলমগীর। এ প্রসঙ্গে ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিএনপি আন্দোলনের ডাক দিতেই পারে। রাজনৈতিক আন্দোলন করতে চাইলে করবে। আন্দোলন যদি রাজনৈতিক কোনো মুভমেন্ট হয় আমরা রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করব। কিন্তু আন্দোলনের নামে যত সহিংসতা হয়, যেটা তারা বারবার করে আসছে, আদালতকেও তারা কলুষিত করেছে, সেরকম কোনো আন্দোলন যদি তারা করতে চায় সেটা কিন্তু মোকাবেলা করা হবে। দাঁতভাঙা জবাব দেয়া হবে।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘যদি মনে করেন তারা ( বিএনপি) আন্দোলন করে সরকারকে বাধ্য করবে বেগম জিয়াকে মুক্তি দিতে, সেটা পারবে না। বাধ্য করতে পারবে আদালতকে, এটা কতটা যুক্তিযুক্ত। আদালতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা এটা কোন গণতন্ত্র? ড. কামাল হোসেন সাহেবকে আমি জিজ্ঞেস করতে চাই।’
কাদের বলেন, ‘আন্দোলন তারা ( বিএনপি) করুক। তারা কার বিরুদ্ধে আন্দোলন করছে। আদালতের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছে। যাদের বিবেক আছে, তাদের কাছে আপিল করছি। আওয়ামী লীগ সরকার বেগম জিয়াকে কারাবন্দি করেনি। এই সরকার মামলাও দেয়নি। এটা রাজনৈতিক মামলাও নয়। এটা দুর্নীতির মামলা সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকার করেছে।’
সড়কমন্ত্রী বলেন, ‘রাজনৈতিক কারণে সরকার যদি বেগম জিয়াকে গ্রেপ্তার করতো, তাহলে রাজনৈতিক কারণে তাকে মুক্তি দেয়ার প্রশ্ন আসতে পারত। কিন্তু যেহেতু এটা রাজনৈতিক কারণে গ্রেপ্তার করা হয়নি কাজেই সরকারের রাজনীতি বিবেচনার কোনো এখানে সুযোগ নেই। তারা এখন আন্দোলনের হুমকি দিচ্ছে। তাদের আন্দোলনের এই হুমকিতে আমরা অভ্যস্ত। এই হুমকি আমরা বারবার শুনে আসছি। বেগম জিয়াকে আন্দোলন করে মুক্ত করবেন এটা আজকেও তারা অনেকে উচ্চারণ করেছে।’
ঢাকা সিটি নির্বাচন প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট হয়েছে। কারচুপি বা জালিয়াতি ছিল না। ভোট হয়েছে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে। ছোটখাটো ভুলত্রুটি বাদ দিলে স্বচ্ছ নির্বাচন হয়েছে, এ ব্যাপারে কারো কোনো দ্বিমত নেই। পর্যবেক্ষকরাও কারচুপির-জালিয়াতির বিষয়ে কোনো কথা বলেনি। নির্বাচনে হেরে গিয়ে বিএনপি বিষোদগার করছে। হেরে যাওয়ায় তাদের বিষোদগার আরও বেড়ে গেছে। ইভিএম পদ্ধতিতে এই নির্বাচন এত বড় এলাকায় এই প্রথম, এই অভিজ্ঞতা ভবিষ্যতে কাজে লাগবে। ছোটখাটো কিছু সমস্যা প্রথমবার হয়েছে অনভিজ্ঞতার কারণে।’
অপর এক প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, ‘সিটি ভোটের সময় এসএসসি পরীক্ষা ছিল। পরিবহন সংকট ছিল। লম্বা ছুটিতে অনেকে গ্রামে চলে গেছে। তাছাড়া আমাদের দলেরও কাঠামোগত সমস্যা আছে, দুর্বলতা ছিল। যে কারণে ভোটারদের আনার ব্যাপারটা এতটা গুরুত্ব দেয়া হয়নি।’
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ।