কালীগঞ্জে ডাকাতির ঘটনা বেড়েই চলছে

Slider গ্রাম বাংলা


মো: সাজ্জাত হোসেন, কালীগঞ্জ (গাজীপুর) প্রতিনিধিঃ গাজীপুরের কালীগঞ্জে ডাকাতের ছোঁড়া ইটের আঘাতে আব্দুল রাজ্জাক নামে এক পুলিশ কনস্টেবলের মাথা ফেটে রক্তাক্ত জখম হওয়ার সংবাদ পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ২.৩৫ মিনিটে কালীগঞ্জ উপজেলার জাঙ্গালিয়া ইউনিয়নের আজমতপুর চৌরাস্তায় এমন ঘটনাটি ঘটেছে। ডাকাতরা আজমতপুর চৌরাস্তায় আরফান ট্রেডার্সের দোকান থেকে ২৫/২৬টি গ্যাস সিলিন্ডার, ৪০/৪২টি এক লিটার মবিল ক্যান, ১৬টি ৫ লিটার মবিল ক্যান ও নগদ ৩০/৩২ হাজার টাকা লুটে নিয়ে যায়।

কালীগঞ্জ থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মামুন অর রশিদ ডাকাতের ছোঁড়া ইটের আঘাতে কনস্টেবল রাজ্জাক গুরুতর আহত হওয়ার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, রাত ২.৩৫ মিনিটে তার সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে টহলরত অবস্থায় জাঙ্গালিয়া ইউনিয়নের আজমতপুর চৌরাস্তায় যান। তখন দোকানের সামনে একটি পিকআপ দেখে তাদের সন্দেহ হয়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ৩/৪ জনের ডাকাতদল পিকআপে উঠে পড়ে। এই সময় কনস্টেবল রাজ্জাক ডাকাতদের ধরার জন্য এগিয়ে গেলে পিকআপের পেছনে থাকা এক ডাকাত একটি ইট ওই কনস্টেবলের মাথায় ছুঁড়ে মারে। ইটের আঘাতে কনস্টেবল রাজ্জাক রক্তাক্ত জখম হয়। এর ফাঁকে ডাকাতদল পিকআপে রাখা মালামাল নিয়ে গাজীপুরের দিকে পালিয়ে যায়। পরে আহত অবস্থায় ওই কনস্টেবলকে উদ্ধার করে রাতে কালীগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।

আরফান ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী মো. আরিফ বেপারী বলেন, রাতে তার দোকান থেকে ডাকাতরা ১ লক্ষ ৩৩ হাজার টাকার মালামাল লুটে নিয়েছে। এই বিষয়ে শুক্রবার বিকেলে থানায় গিয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন বলে সে জানায়।

দিন দিন কালীগঞ্জে ডাকাতির ঘটনা বেড়েই চলছে। বাজারে পাহারাদারের ব্যবস্থা থাকার পরও ডাকাতির ঘটনা ঘটছে। ডাকাতরা অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ডাকাতি করেই যাচ্ছে। বাজারে নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত নৈশ প্রহরীদের রশি ও কাপড় দিয়ে হাত, মুখ ও চোখ বেঁধে মূল্যবান মালামাল ও নগদ অর্থ লুটে নিয়ে যাচ্ছে ডাকাতদল। এ যেন ফিল্মী স্টাইলে ডাকাতি ।

রাগে ক্ষোভে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে বাজার ব্যবসায়ী ও সাধারণ লোকজন বলছে, পুলিশের ঠিকমত টহলের ব্যবস্থা না থাকায়, তাদের অবহেলার কারনেই, ডাকাতির ঘটনা একের পর এক ঘটে চলছে।

গত ৪ ফেব্রুয়ারি রাতে কালীগঞ্জ উপজেলার মোক্তারপুর ইউনিয়নের সাওরাইদ বাজারে নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত ৫ জন নৈশ প্রহরীদের রশি ও কাপড় দিয়ে হাত, মুখ ও চোখ বেঁধে জুয়েলারি, ইলেক্ট্রনিক্স দোকান, সেনেটারী দোকান, টেলিকম দোকান ও মুদি দোকানসহ ১২ টি দোকানের তালা ভেঙ্গে মালামাল লুটে নিয়ে যায় একদল ডাকাত । মঙ্গলবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে ১৪/১৫ জনের একদল ডাকাত প্রায় ১৪ লাখ টাকার মালামাল লুট করেছে বলে দাবি ভুক্তভোগীদের। কিছু বুঝে ওঠার আগেই দোকানের তালা- সাটার কেটে জিনিসপত্র নিয়ে নির্বিঘ্নে পালিয়ে যায় ডাকাত দল।

গত ৯ ডিসেম্বর কালীগঞ্জ উপজেলার নাগরী ইউনিয়নের উলুখোলা বাজারে ৭ জন নৈশ প্রহরীকে বেঁধে ৪ টি স্বর্ণের দোকানে ডাকাতি করে ডাকাতদল ৪৪ ভরি স্বর্ণ ও ৩৪০ ভরি রুপা এবং নগদ ২ লক্ষাধিক টাকা লুট করে নিয়ে যায়। উলুখোলা পুলিশ ফাঁড়ির ২শত গজের মধ্যেই বাজারে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনাটি ঘটেছিল। পুলিশ এখনোও পর্যন্ত এই ঘটনায় কাউকে আটক বা মালামাল উদ্ধার করতে পারিনি বিধায় ভু্ক্তভোগীসহ জনমনে নানা প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হচ্ছে। উলুখোলা বাজারে ডাকাতি আর সাওরাইদ বাজারে ডাকাতির পদ্ধতি একই ধরনের বলে স্থানীয়রা জানায়।

কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনর্চাজ (ওসি) একেএম মিজানুল হক বলেন, ডাকাতের ইটের আঘাতে কনস্টেবল রাজ্জাক আহত হয়েছে। ডাকাতদের ধরার অভিযান অব্যাহত রয়েছে। আর ৪ ফেব্রুয়ারি রাতে সাওরাইদ বাজারে ডাকাতির ঘটনার তদন্ত অনেক অগ্রগতি হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে এর চেয়ে বেশি কিছু বলতে তিনি রাজি নন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *