লন্ডন প্রতিনিধি | পূর্ব লন্ডনের এট্রিয়াম হলে সোমবার সন্ধ্যায় বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। ছবি: প্রথম আলোবিএনপির প্রতি ইঙ্গিত করে স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়নমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন, ‘যেহেতু আমরা অশ্লীল কথা বলতে পারি না, মিথ্যা বলতে পারি না—সেটাকে তারা দুর্বলতা মনে করে।’
গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় পূর্ব লন্ডনের এট্রিয়াম হলে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ আয়োজিত ‘গণতন্ত্রের বিজয় দিবস’ উদযাপনের সভায় এ মন্তব্য করেন সৈয়দ আশরাফ।
৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আগের দিন গত রোববার একই হলে যুক্তরাজ্য বিএনপি ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ শীর্ষক সভার আয়োজন করে। সেখানে বক্তব্য দেন বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
তারেক রহমানের নাম উল্লেখ না করে এট্রিয়াম হলের সভায় সৈয়দ আশরাফ বলেন, কালকে এমন একজন লোক এখানে বক্তৃতা দিয়েছেন, এই হলটিকে মিলাদ দিয়ে, জল দিয়ে পরিষ্কার করা প্রয়োজন ছিল।
সদ্যবিদায়ী মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান ডব্লিউ মজিনাকে ‘কাজের মেয়ে মর্জিনা’ এবং বাংলাদেশ সফরে আসা মার্কিন মন্ত্রী নিশা দেশাইকে ‘দুই আনার মন্ত্রী’ বলে সমালোচনার জন্ম দেওয়া আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দাবি করেন, অনেক সময় অনেক কথা বলতে ইচ্ছা করলেও শালীনতার জন্য তাঁর মুখ দিয়ে তা আসে না।
সৈয়দ আশরাফ বলেন, ‘আজকে খালেদা জিয়া গণতন্ত্রের মহারানী। কারে শিখাইতে চান? বারবার মিথ্যা কথা বললেই কি সত্য মিথ্যা হয়ে যাবে? আপনাদের এ দেশের মানুষ চিনে না? কীভাবে আপনার স্বামী ক্ষমতায় আসলেন? কীভাবে তিনি বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত ছিলেন? বারবার তিনি বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে হত্যা করেছেন—সেই ইতিহাস কি বাংলাদেশের কেউ জানে না?’
জিয়াউর রহমান ও এইচ এম এরশাদকে স্বৈরশাসক আখ্যা দিয়ে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, ‘স্বৈরশাসকেরাই আজকে আমাদেরকে গণতন্ত্র শিখায়। আপনারা কি মনে করেন, সারা বাংলাদেশের মানুষ আহাম্মক?’
সৈয়দ আশরাফ বলেন, ‘শেখ হাসিনা রাতের অন্ধকারে বন্দুক নিয়ে সালাম দিয়ে ক্ষমতায় আসেন নাই। এটা খালেদা জিয়ার জামাই করেছে, রওশন এরশাদের জামাই করেছে।’
বঙ্গবন্ধুর পথ ছাড়া বাংলাদেশের অন্য কোনো বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কারও বাকস্বাধীনতা কেড়ে নেননি বলে দাবি করেন আওয়ামী লীগের এই নেতা। তাঁর দাবি, পৃথিবীর খুব কম দেশই আছে, যেখানে বাংলাদেশের মতো এত বাকস্বাধীনতা আছে।
সৈয়দ আশরাফ বলেন, আইয়ুব খান, ইয়াহিয়া খান, জিয়াউর রহমান ও এরশাদের আমলসহ দীর্ঘ সামরিক শাসনের কারণে যে বদ্ধ পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছিল, তা থেকে এখনো পুরোপুরি বের হয়ে আসা সম্ভব হয়নি। রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক—সবাই এখনো গণতন্ত্র শেখার পর্যায়ে রয়েছে।
সভায় সভাপতিত্ব করেন যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জালাল উদ্দিন। সভা পরিচালনা করেন যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী।