কূটনৈতিক রিপোর্টার: দূতাবাসের বাংলাদেশি স্টাফদের ‘আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক’ বানিয়ে বিদেশি মিশনগুলো আইন ভঙ্গ করেছে বলে অভিযোগ তুলেছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। এ অবস্থায় নির্বাচন পর্যবেক্ষণে অনুমতি পাওয়া দূতাবাসগুলোর স্টাফদের ভোট কেন্দ্রে না পাঠানোর আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, যদিও পুরো বিষয়টি নির্বাচন কমিশনের এখতিয়ারে। তারপরও এখানে মিশনগুলোর দায়-দায়িত্ব রয়েছে। তারা বাংলাদেশের আইন জানেন। সরকারের তরফেও তাদের বিদ্যমান আইনের বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দেয়া হয়েছে। সুতরাং এখন তাদের দায়িত্ব নিতে হবে। তারা তাদের যেসব বাংলাদেশি কর্মচারীকে ‘আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক’ বানিয়েছেন, তাদেরকে অবশ্যই সেন্টারে পাঠানো উচিত হবে না। শুক্রবার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ বিষয়ক এক বৈঠক শেষে মন্ত্রী উপস্থিত সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে এ সব কথা বলেন।
বাংলাদেশে থাকা কূটনীতিকদের সর্বাবস্থায় আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং দায়বদ্ধতা থাকা উচিত বলেও মন্তব্য করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। নির্বাচনের ভোট গ্রহণ শুরু হওয়ার আর অল্প ক’ঘন্টা বাকী। দূতাবাসগুলোর পর্যবেক্ষণ টিমে থাকা ৪৬ বিদেশির সঙ্গে তাদের সহায়ক হিসাবে ২৮ জন বাংলাদেশির (প্রত্যেকের) আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক কার্ড ইস্যু করেছে নির্বাচন কমিশন। এই সময়ে তাদের থামানো যায় কি-না? এমন প্রশ্নেও আসে। তবে সব প্রশ্নকে ছাড়িয়ে যে বিষয়টি প্রধান্য পায় তা হলোÑ আইনী বাধা সত্ত্বেও বাংলাদেশিদের কীভাবে ‘আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক’ হিসাবে নিয়োগ হলো? জবাবে মন্ত্রী বলেন, এটি আমি জানি না। তবে আমরা মনে করি এখানে যেসব বিদেশি সংস্থা বা দূতাবাস আছে তারা তাদের কোড অফ কনডাক্ট জানে। আইন মতে, আমাদের দেশে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক যারা হন তারা কেউ বাংলাদেশি নাগরিক হতে পারেন না। আন্তর্জাতিক নির্বাচন পর্যবেক্ষককে অবশ্যই অ-বাংলাদেশি হতে হয়। কিন্তু দুঃখজনকভাবে এখানে বিদেশি দূতাবাসগুলো তাদের বাংলাদেশি কর্মচারীদের আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক হিসাবে নিয়োগ দিয়েছে। এতে আইন ভঙ্গ হয়েছে। আইন অনুযায়ী আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক হওয়ার শর্ত অবশ্যই ‘বিদেশি নাগরিক’ হতে হবে- এমনটা পূনর্ব্যক্ত করে মন্ত্রী বলেন, দূতাবাসগুলো বিদেশি নাগরিককে এনে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক বানাক, এতে কারও কোন আপত্তি নেই। অথবা বাংলাদেশিদের তারা ‘আভ্যন্তরীণ পর্যবেক্ষক’ বলুক, এতেও কোনো সমস্যা নেই। দূতাবাস প্রতিনিধি বা রাষ্ট্রদূতরা বড় রাজনৈতিক দল বা প্রার্থীর সঙ্গে আলাপেও কোন বাধা নেই। কিন্তু তারা কোন অবস্থাতেই আমাদের সিস্টেম, আইন এবং নিয়ম-নীতিমালা ভঙ্গ করতে পারে না।