ঢাকা: লক্ষ্মীপুরে একদল ডাকাত কর্তৃক স্কুলছাত্রী স্মৃতি নাথ সীমা ধর্ষনের পর হত্যার মামলায় ৮ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। মঙ্গলবার বিচারপতি ভবানী প্রসাদ সিংহ ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের আপিল আবেদন শুনানি শেষে এ রায় দেন। আদালতে আসামিদের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ছিলেন ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন। পলাতকদের পক্ষে ছিলেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী এ এস এম শফিকুল ইসলাম কাজল ও মো. হাফিজুর রহমান খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আমিনুল ইসলাম।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলো- কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলার হিরণ (২৪), নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার দহরপাড়া গ্রামের মানিক (৩০), তালিতপুর গ্রামের রাশেদ (২৫), রুদ্রপুর গ্রামের সুমন (২০), সুধারামের লক্ষ্মীনারায়ণপুর গ্রামের হেদায়েত উল্যা হেদু (৫০), চাটখিল উপজেলার ধর্মপুর গ্রামের নুরনবী (২৭), সোনাইমুড়ি উপজেলার ধন্যপুর গ্রামের সাদ্দাম হোসেন ওরফে রুবেল (১৯) ও লক্ষ্মীপুর সদরের শ্রীরামপুর গ্রামের নুর আলম ওরফে নুরু (২২)। আসামিদের মধ্যে মানিক, রাশেদ, সুমন ও রুবেল এখনো পলাতক। এছাড়া মৃত্যুদণ্ড থেকে হাইকোর্টে যাবজ্জীবন দণ্ড পাওয়া দুই আসামি হলেন, নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার অনন্তপুর গ্রামের আনোয়ার হোসেন (২৩) ও একলাশপুর গ্রামের সোহেল। এদের মধ্যে আসামি সোহেল পলাতক।
এর আগে, ২০১৪ সালের ১৬ই সেপ্টেম্বর লক্ষ্মীপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালত ১০ জনকে মৃত্যুদণ্ড ও ১৫ আসামিকে বেকসুর খালাস দেন। এরপর মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য (ডেথ রেফারেন্স) যাবতীয় নথি হাইকোর্টে পাঠানো হয়। কারাবন্দী আসামিরাও আপিল করেন।
যেভাবে হত্যা করা হয়: ২০১২ সালের ১৮ জুলাই রাত সাড়ে ১১টার দিকে ১৪-১৫ জন মুখোশপরা সশস্ত্র ডাকাত লক্ষ্মীপুরের বসুদহিতা গ্রামের কৃষ্ণ লাল দেবনাথ (৬৫) বাড়িতে ঢোকে। তারা অস্ত্রের মুখে পরিবারের সদস্যদের বেঁধে ফেলে। এ সময় তারা কুপিয়ে কৃষ্ণ লাল দেবনাথ, তার স্ত্রী গীতা রানী (৬০) ও সীমার চাচী মিনতী বালা দেবীকে (২৭) জখম করে। একপর্যায়ে তারা সীমাকে একটি কক্ষে নিয়ে ধর্ষণ করে। এরপর স্বর্ণালংকারসহ প্রায় ৮০ হাজার টাকা মূল্যের মালামাল নিয়ে চলে যায়। ডাকাতরা চলে যাওয়ার পর আশপাশের লোকজন সীমা ও আহতদের উদ্ধার করে স্থানীয় চন্দ্রগঞ্জ ন্যাশনাল হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাতেই সীমা মারা যায়। এ ঘটনায় পরদিন কৃষ্ণ লাল দেবনাথ বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় ১৪-১৫ জনকে আসামি করে ডাকাতি, ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগে সদর থানায় মামলা করেন। তদন্ত শেষে পুলিশ ২০১৩ সালের ২৫শে মে মামলায় ২৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।