ঢাকা:ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান সমন্বয়ক আমির হোসেন আমু বলেছেন, রোববার বিএনপির প্রচারণা করার কোন শিডিউল প্রোগ্রাম ছিল না। এধরনের কোন শিডিউল প্রোগ্রাম আগে জানানো হয়নি। আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর বক্তব্যে এটা পরিষ্কার, এটা তাদের একটা সুপরিকল্পিত ঘটনা। এটা আগামী দিনে নির্বাচন বানচালের একটি ইঙ্গিত। রোববার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন। দুপুরে হামলার ঘটনার পর জরুরি বৈঠকে বসেন নির্বাচন পরিচালনা সংশ্লিষ্ট নেতারা। আমির হোসেন আমু বলেন, তারা গণতান্ত্রিক ধারায় ফিরে আসছে, গণতান্ত্রিক ধারা সুষ্ঠভাবে চলবে এটাই আমাদের আশা-আকাঙ্খা ছিল। কিন্তু নির্বাচনী প্রচারণায় তারা অনির্বাচনের ধারার ব্যাপারে কথাবার্তা বলা শুরু করল।
তারা স্বপ্নে দেখা শুরু করল নির্বাচন সুষ্ঠ হবে না, অবাধ হবে না, নিরপেক্ষ হবে না। তারা বলা শুরু করল, সন্ত্রাসী কার্যকলাপ হতে পারে। তিনি আরও বলেন, তারা (বিএনপি) নিজেরা চ্যালেঞ্জ দেয়ার ঘোষণা দিল, তারা শেষ পর্যন্ত দেখে নেবে। এই সমস্ত কথাবার্তার মধ্য দিয়েই আমরা একটু আঁচ করতে পারছিলাম, তারা আসলে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার মধ্যেই সুষ্ঠভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না, নির্বাচন বানচাল করবে। পাশাপাশি বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় লক্ষ্য করলাম, সারাদেশে বিএনপি-জামায়াতের ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা সন্ত্রাসবাহিনীকে ঐক্যবদ্ধভাবে সমবেত করা হচ্ছে। তখন আমাদের সন্দেহ আরও প্রকট আকার করেছিল। আজকে তারই একটি বহিঃপ্রকাশ, দুঃখজনকভাবে আমরা লক্ষ্য করলাম। আইনশৃংখলা বাহিনী কর্তৃপক্ষ বলেছে, ওখানে বিএনপির আজকে কোন প্রচারণা করার কোন শিডিউল প্রোগ্রাম ছিল না। এধরনের কোন শিডিউল প্রোগ্রাম তাদেরকে আগে জানানো হয়নি। যদিও দুই-একদিন আগে দুই-একটা মারপিট হয়েছে। কিন্তু আজকে কয়েক রাউন্ড গুলি ছোঁড়া হয়েছে এবং আমাদের প্রায় ৫০ জন ছেলে (আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের নেতৃবৃন্দ) আহত হয়েছে। অনেকেই অল্প আহত। তাদের কয়েকজন আপনাদের সামনে উপস্থিত আছে এবং কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক, ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি আছে। তিনি বলেন, আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। আমরা মনে করি, সারাদেশের মানুষের যে আশা-আকাঙ্খা সেটা বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে তাদের এখনো শুভবুদ্ধির উদয় হবে। এখনো তারা সক্রিয়ভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন গণতান্ত্রিক পন্থায়। নির্বাচন বানচাল করার জন্য নয়, নির্বাচনকে সুষ্ঠভাবে অংশগ্রহণ করবে এটাই আমাদের আশা-আকাঙ্খা। আমির হোসেন আমু বলেন, দেশবাসীও আশা করে দেশে সুষ্ঠ, অবাধ নির্বাচন হবে। আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বারবার ঘোষণা দিয়েছেন নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠভাবে হবে। কাজেই নির্বাচন বানচাল করার উদ্দেশ্য হচ্ছে দেশের নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে ধ্বংস করা। বিগত দিনেও বিএনপি হয় নির্বাচন বয়কট অথবা অংশগ্রহণের মাধ্যমে পেট্রোল বোমা মেরে মানুষ হত্যা, বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। আজকে তারই একটি অংশ আবার তারা নতুন করে শুরু করেছে। এই ঘটনায় যারা সতিক্যারের দোষী তাদের ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনের কাছে বিধি-বিধান অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবি জানান আমু। পাশাপাশি আইনশৃংখলা পরিস্থিতি যাতে সুষ্ঠভাবে থাকে, এদেশের মানুষ যাতে সঠিকভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে তার জন্য আইনশৃংখলা বাহিনীকে আরও সতর্ক হতে হবে, সজাগ হতে হবে এবং কার্যকরি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। এই হামলার ঘটনায় দলীয়ভাবে কোন মামলা করা হয়েছে কি না জানতে চাইলে আমির হোসেন আমু বলেন, আমাদের যারা আহত হয়েছে, তাদের পক্ষ থেকে মামলা করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের কাছে আমাদের পক্ষ থেকেও প্রতিবাদ দেয়া হবে। তারপর নির্বাচন কমিশন যেটা ভাল মনে করে সেটা করবে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ, উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ দক্ষিণের সভাপতি আবু আহম্মেদ মান্নাফী, সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির, কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মঈনুল হোসেন খান নিখিল প্রমুখ।