জৈন্তাপুরে বালুখেকু চক্রের থাবায় হুমকীর মুখে বেড়ীবাঁধ

Slider জাতীয় সিলেট

সিলেট প্রতিনিধি :: সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলায় বালুখেকু চক্রের থাবায় হুমকীর মুখে পরেছে বেড়ীবাঁধ ও করস্থান। একটি অসাধু চক্র বড় নয়াগাং নদীর পাড় কেটে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন করছে। ফলে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন প্রকল্পের বেড়ীবাঁধ ধস এবং গ্রামবাসীর করস্থান ভাঙ্গনের মুখে পড়েছে। উপজেলার লক্ষীপ্রসাদ হাওর, রুপচেং ফেরীঘাট এলাকাবাসী উপজেলা নির্বাহী ও পুলিশ প্রশাসনের নিকট লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে।

উল্লেখ্য, সিলেটের জৈন্তাপুরের নিজপাট ইউপির বড় নয়াগং নদীর খেয়াঘাট নামক এলাকার নদীর মধ্যে ভাগ রেখে নদীর দুই পাড় কেটে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন করছে একটি প্রভাবশালী চক্র। বর্ষার সময়ে বড় নয়াগাং নদীর প্রবল স্রোতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সারী-গোয়াইন প্রকল্পের বেড়ী বাঁধটি ভেঙ্গে যাওয়ার সমুহ সম্ভাবনা রয়েছে।

অভিযোগ উঠেছে ছিফত উল্লাহ উরফে কুড়কুড়ি মোল্লা, মো. রফিক আহমদ, মো. আমিন আহমদ, ট্রাক চালক ফয়জুল ইসলাম, নজরুল ইসলাম, রুহুল আমিন, কবির আহমদ, শেখর বাবু, আলমাছ উদ্দিন, মিসিরাই মিয়া, বতাই মিয়া, কুটি মিয়া, মিজানুর রহমান, বশির আহমদ উরফে বস্তা বশির এর নেতৃত্বে নদীর পাড় কেটে এবং পানি উন্নয়ন বেড়ীবাঁধের পাড় কেটে ৩০-৪০ ফুট গভীর থেকে বালু উত্তোলন করছে।
অভিযুক্ত ছিফত উল্লাহ উরফে কুড়কুড়ি মোল্লা ও মিসিরাই মিয়াকে এ ব্যপারে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা নদীর পাড় কাটার সাথে জড়িত নয় বলে জানান। তারা বলেন, অন্যরা নদীর পাড় কেটে বালু উত্তোলন করেছে। আমরা লিজ নিয়ে বড় নয়াগাং নদী থেকে বালু উত্তোলন করছি।

লিজের কাগজপত্র দেখতে চাইলে উপস্থিত দেখাতে পারেনি। বড়গাং ও সারীগাং নদী আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকায় সরকার ইজারা বাতিল রেখেছে প্রশ্ন করা হলে কোন সদুত্তর পাওয়া যায়নি। নদীর মধ্য অংশের পাশাপাশি পানি উন্নয়ন বেড়ীবাঁধের পাড় কেটে বালু উত্তোলনের ফলে আগত বর্ষার পাহাড়ী ঢলের ফলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়ীবাঁধ ভেঙ্গে লক্ষীপ্রসাদ, লক্ষীপ্রসাদ হাওর, রুপচেং, ফেরীঘাট, লামনীগ্রাম, ভিত্রিখেল, ভিত্রিখেল ববরবন্দ সহ ১০-১৫টি গ্রামের বসতবাড়ী, ফসলী জমির ক্ষতি সাধিত হবে বলে আশংঙ্কা রয়েছে। ইতোপূর্বে ১৯৮৮সনের পাহাড়ী ঢল ও আকস্মীক বন্যায় এই বেড়ীবাঁধের বিভিন্ন অংশে ভাঙ্গনের ফলে অত্রাঞ্চলের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয় বলে উল্লেখ করেন বাঁধের ভিতরে বসবাসকারীরা। রাত হলে ৩ টনা ট্রাক, ডিআই ট্রাক, পিকআপ যোগে রাত ভর বালু নিয়ে যাচ্ছে চক্রটি।

এদিকে বাঁধের তীরবর্তী ও ভিতরের বাসিন্ধারা অবৈধ বালু উত্তোলন কারীদের হাত থেকে নদীরপাড়, কবরস্থান ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়ী বাঁধ রক্ষার দাবীতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে এলাকাবাসী।

এ বিষয়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) লুসিকান্ত হাজং জানান, বড়গাং নদী হতে বালু উত্তোলনে আদালতের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। আমরা কাউকে লীজ দেইনি। বিষয়টি আপনাদের মাধ্যমে জানতে পারলাম, কেউ এখনও লিখিত অভিযোগ নিয়ে আসেনি। অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *