ঢাকা:আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন,‘আমরা রাজনীতিকরা নির্বাচনের আগে মানুষকে কাছে টানি, প্রতিশ্রুতির রঙ্গিন বেলুন উড়াই। মনে হয় আমরা কত আপন, কত জনদরদী! নির্বাচন শেষ হলে আমরা অবলীলায় সব ভুলে যাই। ভুলে যাই প্রতিশ্রুতির কথা। নির্বাচনের সময় মানুষের কাছে গিয়ে জনদরদীর মতো যে অভিনয় করি নির্বাচনের পরে সত্যিকারের যে পরিচয় সেটা মানুষ বুঝতে পারে।’
বুধবার চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি মেহেরুন্নেছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে প্রধানমন্ত্রীর পরলোকগত সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মিয়া মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীন বীরবিক্রম, পিএসসি‘র নাগরিক শোকসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি উক্ত কথাগুলো বলেন।
তিনি আরো বলেন, ‘মেজর জেনারেল মিয়া মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীন সব সংকটের সময় নেত্রীর আশেপাশে ছিলেন। ক্রাইসিসে আবেদীন ছুটে আসতেন। তিনি দলের কর্মীদের সাথে, জনগণের সাথে গণভবন ও সরকারের সাথে সেতুবন্ধন রচনা করেছিলেন। তিনি বিনয়ী ছিলেন। কোন অহংকার ছিল না তার। একজন সৈনিক হয়েও পেশাগত জীবনের গন্ডি পেরিয়ে জনগণের সাথে অবাধে মিশে যেতে পারতেন।’
শোকসভায় সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী আরো বলেন, জেনারেল আবেদীনকে আমি শ্রদ্ধা করি, স্যালুট করি। তিনি চলে গেছেন কিন্তু রেখে গেছেন বহু র্কীতি। তিনি তাঁর গ্রামে বিদ্যুতের আলো ও শিক্ষার আলো ছড়িয়েছেন। সাধারণ মানুষের জন্য গড়ে তোলেছেন হাসপাতাল। তিনি অসাধারণ গুণাবলী, চারিত্রিকি বৈশিষ্ট্যের অধিকারী ছিলেন । মানুষের প্রতি তার ভালবাসার কোন তুলনা হয় না। তিনি তার কর্মকান্ডের মধ্য দিয়ে দেশবাসীর হৃদয়ে আজীবন বেঁচে থাকবেন।’
সভায় সড়ক পরিবহণ ও সেতু মন্ত্রী বীর বিক্রম জয়নুল আবেদীন উচ্চ বিদ্যালয়কে বিশেষ বিবেচনায় এমপিও ভূক্তির ঘোষণা দেন এবং এলাকার জন্য তার ভবিষ্যত পরিকল্পনা সমূহও বাস্তবায়নের কথা জানান।
মরহুমের বড়ভাই মুহাম্মদ ইসমাইল মানিকের সভাপতিত্বে লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার তৌছিফ আহমদের উপস্থাপনায় শোকসভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এমপি, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ্ব মোছলেম উদ্দিন আহমেদ এমপি, চট্টগ্রাম-১৫ আসনের (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) সংসদ সদস্য প্রফেসর ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী, সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি ওয়াসিকা আয়েশা খান, চট্টগ্রাম সিটি মেয়র আজম নাছির উদ্দিন, সাইমুম সরওয়ার কামাল এমপি, আশিক উল্লাহ রফিক এমপি, সিডিএর সাবেক চেয়ারম্যান এম এ সালাম, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান প্রমখ।
এতে আরো উপস্থিত ছিলেন শোকসভা উপদযাপন পরিষদের সদস্য সচিব ও লোহাগাড়া উপজেলা চেয়ারম্যান জিয়াউল হক চৌধুরী বাবুল, উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি খোরশেদ আলম চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক মো: সালাহ উদ্দিন হিরু প্রমূখ। শোকসভা শুরুর আগে সামরিক সচিবের কবর জেয়ারত করেন প্রধান অতিথিসহ অন্যান্যরা। সভার শুরুতে দাড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
উল্লেখ্য, মেজর জেনারেল মিয়া মোহাম্মদ জয়নুল আদেীন বীরবিক্রম, পিএসসি গত ১৭ ডিসেম্বর মঙ্গলবার বিকেল ৫টা ১৩ মিনিটে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন। চুনতির সিকদার পাড়াস্থ চুনতি জামে মসজিদ কবরস্থানে মায়ের কবরের পাশে তাকে দাফন করা হয়।