টঙ্গী: আহসান উল্লাহ মাষ্টার হত্যা মামলায় দণ্ডিতকে জাপায় পদ দেওয়ায় কুশপুত্তুলিকা দাহ করেছে ছাত্রলীগ। গতকাল সোমবার গাজীপুর ও টঙ্গীতে পৃথক পৃথকভাবে এই প্রতিবাদ হয়।
জানা যায়, প্রয়াত শ্রমিক নেতা শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার হত্যা মামলার ফাঁসির দণ্ড পাওয়া ফেরারি আসামি নুরুল ইসলাম দিপুকে জাতীয় পার্টির (জাপা) যুগ্ম মহাসচিব পদ দেওয়ার প্রতিবাদে টঙ্গীতে বিক্ষোভ মিছিল ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করেছে টঙ্গী থানা ছাত্রলীগ।
এসময় বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা নুরুল ইসলাম দিপুর কুশপুতুল জ্বালায়। অবরোধের কারণে সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। সোমবার বেলা সাড়ে এগারটার দিকে টঙ্গীর কলেজ গেইট এলাকা থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি বের হয়। পরে মিছিলটি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে চেরাগআলী গিয়ে প্রতিবাদ সভায় মিলিত হয়।
টঙ্গী থানা ছাত্রলীগের সভাপতি মেহেদী হোসেন কানন মোল্লার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মোশিউর রহমান সরকার বাবুর সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন গাজীপুর মহানগর আওয়ামীলীগের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক জাকির হোসেন খোকন, সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর রাখি সরকার, গাজীপুর মহানগর আওয়ামীলীগের উপদেষ্টা কাজী মোহাম্মদ সেলিম, টঙ্গী থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি নাসির উদ্দীন, টঙ্গী থানা যুবলীগ নেতা আমান উদ্দিন সরকার, লিটন উদ্দিন সরকার, টঙ্গী সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি কাজী মঞ্জুর, মহানগর মহিলা আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক ও শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টারের ছোট বোন নাজমা হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক আয়েশা আক্তার আশা, ৫৬নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান পিংকু, ৪৬নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সভাপতি শাহাজাদা সেলিম লিটন, ৪৭নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন সুজন, ৪৩নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সভাপতি প্রার্থী কামরুজ্জামান সুমন।
বক্তারা অবিলম্বে ফাঁসির আসামি নুরুল ইসলাম দিপুকে দেশে ফিরিয়ে এনে সাজা কার্যকর ও জাতীয় পার্টি থেকে অব্যাহতি দেওয়ার জোর দাবি জানান।
এদিকে গাজীপুর শহরে ছাত্রলীগ মিছিল করে দিপুর পদ বাতিলের দাবী জানায়।
প্রসঙ্গত: গত শুক্রবার জাপার চেয়ারম্যান জি এম কাদের ১৪ জন যুগ্ন মহাসচিবের নাম ঘোষণা করেন। ওই তালিকায় তিন নম্বর যুগ্ম মহাসচিব পদে ইন্টারপোলের রেড এলার্ট জারি করা ফেরারি আসামি নুরুল ইসলাম দিপুর নাম রয়েছে।
২০০৪ সালের ৭ মে প্রকাশ্যে শ্রমিকনেতা আহসান উল্লাহ মাস্টার এমপিকে গুলি করে হত্যার পর ইউরোপে পালিয়ে যায় দিপু। ঘটনার পরদিন আহসান উল্লাহ মাস্টারের ছোট ভাই মতিউর রহমান টঙ্গী থানায় জাতীয় পার্টির ছাত্রসংগঠন জাতীয় ছাত্রসমাজের তৎকালীন কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম দিপুসহ ১৭ জনের নাম উল্লেখসহ চেনা আরও ১০-১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
ওই মামলায় ২০১৬ সালের ১৫ জুন হাইকোর্ট নুরুল ইসলাম দিপুসহ ছয়জনকে মৃত্যুদণ্ড দেন। যাবজ্জীবন দেন ৯ জনকে।
মামলাটি বর্তমানে উচ্চ আদালতে বিচারাধীন। এই মামলায় বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা নুরুল ইসলাম সরকারসহ আসামীরা কারাগারে রয়েছেন।