নোয়াখালী: রাজধানীর কুর্মিটোলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। এই ঘটনার প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়ে সারাদেশে, গ্রেপ্তার করা হয় সিরিয়াল রেপিস্ট মজনুকে। তবে পুলিশের দেয়া তথ্য অনুযায়ী মজনুর পরিবারের কোনো খোঁজ মেলেনি। এ কারণে নোয়াখালীর হাতিয়ায় লোকজনের মাঝে চলছে নানা ধরনের আলোচনা।
এ বিষয়ে উপজেলার জাহাজমারা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মাছুম বিল্লাহ বলেন, ‘কয়েকদিনে পুলিশ ও সাংবাদিকের ফোনে অতিষ্ঠ হয়ে যাই। এরপর গত ২ দিন ধরে ৯ ওয়ার্ডের ৭ মেম্বার ও চৌকিদার, দফাদার নিয়ে তন্ন তন্ন করে খোঁজ করি। কিন্তু এরপরও হাতিয়ার-জাহাজমারা গ্রামে মজনু, পিতা- মৃত মাহফুজুর রহমান, মা- সখিনা খাতুন নামের কাউকে পাইনি।’
তিনি আরো বলেন, ‘১২ বছর আগের তথ্য ইউনিয়ন পরিষদে নেই। স্ত্রী মারা গেছে, বাবা মারা গেছে, মা দেশের বাড়িতে থাকে। এ ধরনের কোন অস্তিত্ব নেই।’
এ নিয়ে সাপ্তাহিক হাতিয়া কণ্ঠ ডট.কম সম্পাদক দিলদার উদ্দিন বলেন, ‘বহুল আলোচিত ধর্ষণ ঘটনাটি ধামা চাপা দিতে ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলার মতো জজ মিয়া নাটকের আভাস পাওয়া যাচ্ছে।’ এছাড়াও রেজাউল হক বাবু নামের একজন দাবি করেন, ঢাবি ছাত্রী ধর্ষণের অভিযুক্ত আসামি নোয়াখালীর হাতিয়ায় নয়।
এদিকে হাতিয়া প্রেস ক্লাবের সহ-সভাপতি ইসমাইল হোসেন কিরন বলেন, আমরা গণমাধ্যম কর্মীরা সরেজমিন অনুসন্ধান করে ধর্ষক মজনুর কোন ঠিকানা আবিষ্কার করতে পারিনি। প্রেস ক্লাবের সেক্রেটারি ফিরোজ উদ্দিন বলেন, ‘ইলেকট্রনিক মিডিয়া ও ক্যামেরাম্যানদের নিয়ে হাতিয়ার জাহাজমারার ৯নং ওয়ার্ডের মানুষের সাক্ষাৎকার গ্রহণকালেও এ ধরনের নাম, ঠিকানা জীবনে কোনদিন শুনেননি।’
বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন এসোসিয়েশনের নোয়াখালী দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক কবি ফারুক আহমেদ বলেন, ‘পাপ করলে তার জীবন শেষ। আর না করলে অবশ্যই জজ মিয়ার মতো তিনি আবার সরকারের ক্ষতিপূরণ নিয়ে বের হয়ে আসবেন আশা করছি।’ স্থানীয় সাংবাদিক বদিউজ্জামান তুহিন বলেন, ‘আমরা আর জজ মিয়া নাটক চাই না।’
এ বিষয়ে দৈনিক নোয়াখালী সময়’র নির্বাহী সম্পাদক মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘ঢাবি ছাত্রী ধর্ষণের বেগবান আন্দোলনকে থামাতে এ নাটকের অবতারণা হয়েছে।’
বেগমগঞ্জ প্রেস ক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক আবু রায়হান সরকার বলেন, ‘সিরিয়াল রেপিস্ট মজনুকে নিয়ে যে কৌতূহলের সৃষ্টি হয়েছে তা যত নাটকই করুক না কেন মানুষের মনে সন্দেহের দাগ কাটছে না।’
এ প্রসঙ্গে হাতিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল খায়ের বলেন, ‘আমরা দুদিন ধরে শুধু জাহাজমারা নয়, পুরো হাতিয়ায় ধর্ষক মজনুর নাম-ঠিকানার সত্যতা যাচাইয়ের চেষ্টা করছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোথাও ওই ঠিকানায় ওই নামের কাউকে পাইনি।’