রাজধানীর কুর্মিটোলা এলাকায় এক ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় উত্তাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যম্পাস। এ ঘটনায় নিন্দা, ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিচারের দাবিতে রাত থেকেই দফায় দফায় ক্যাম্পাসে মিছিল করে শিক্ষার্থীরা। আজ সকাল থেকে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা পৃথক পৃথক মিছিল, প্রতিবাদ সমাবেশসহ নানা কর্মসূচি পালন করছে।
সকাল সাড়ে ১১টায় রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে প্রতিবাদী মানববন্ধন করে ছাত্রলীগ। পরে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। হাজার হাজার শিক্ষার্থীর মিছিলে কেঁপে ওঠে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যম্পাস। মিছিলটি রাজু ভাস্কর্যের সামনে থেকে শুরু হয়ে ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে। এর আগে কর্মসূচীতে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণের অনুরোধ জানিয়ে ডাকসুর এজিএস ও ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন ফেসবুকে লিখেছিলেন, ‘ধর্ষণ কিংবা নারীর ওপর যেকোন নিপীড়নের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই জারি রয়েছে।
আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সঙ্গে যা হয়েছে তার বিরুদ্ধে আমাদের প্রতিরোধ, সকল নারীর ওপর পুরুষতান্ত্রিক নিষ্পেষণের বিরুদ্ধে প্রতিরোধেরই অংশ। আজকের ঘটনার বিচার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জেগে থাকবে- এ আমাদের দৃঢ় অঙ্গীকার।
আজ সকাল ১১টায় রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দেয় শামসুন্নাহার হলের ভিপি শেখ তাসনিম আফরোজ ইমি। ফেসবুকের একটি ইভেন্টের মাধ্যমে তিনি এ ডাক দেন। ইমির ডাকা এ প্রতিবাদী কর্মসূচীতে অংশ নিচ্ছে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ। এই প্রতিবাদ কর্মসূচি থেকে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম-আহবায়ক মুহাম্মদ রাশেদ খান।
এর আগে গতরাত পৌনে চারটার দিকে সংগঠনের সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসনের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে মিছিল বের করে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ। মিছিলটি রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এসে শেষ হয়। সেখানে সংগঠনটির নেতাকর্মীরা সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন। আখতার হোসেন বলেন, এ ঘটনায় যাদের অবহেলা আছে, তাদের প্রত্যেককে আইনের আওতায় আনতে হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে যে বর্বরতম ঘটনা ঘটেছে, তা বাংলাদেশের বিচারহীনতার কারণেই ঘটেছে। ধর্ষকদের বারবার ছাড় দেয়া হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সঙ্গে এমন ঘটনা আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে মেনে নিতে পারি না। সেজন্য আমরা এখানে একত্রিত হয়েছি।
জানা যায়, রোববার রাতে রাজধানীর কুর্মিটোলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস থেকে নামার পর গণধর্ষণের শিকার হন দ্বিতীয় বর্ষের এক ছাত্রী। পরে রাত ১২টার দিকে ওই ছাত্রীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেয়া হয়। খবর পেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম গোলাম রব্বানী, সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক সাদেকা হালিম, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়, সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য, ডাকসুর এজিএস সাদ্দাম হোসেন ও সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ঢামেক হাসপাতালে যান।