জাতীয়তাবদী ছাত্রদল রাজশাহী মহানগর ও জেলা ছাত্রদলের আয়োজনে রাজশাহীতে গতকাল বিকেল সাড়ে ৩টায় বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ১ জানুয়ারী ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে সারাদেশে হামলার প্রতিবাদে এবং দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নি:শর্ত মুক্তির দাবিতে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। নগরীর মালোপাড়াস্থ বিএনপি কার্যালয়ে সামনের রাস্তা দিয়ে তারা মিছিল নিয়ে সামনের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ বাধা দেন। পুলিশি বাধায় সামনের দিকে অগ্রসর হতে না পেরে সেখানেই তারা বিক্ষোভ সমাবেশ করেন। সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক, রাজশাহী মহানগর বিএনপি’র সভাপতি ও সাবেক রাসিক মেয়র মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল বলেন, এই সরকারের আমলে দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব বিনষ্ট হয়ে গেছে। এমন কোন অপকর্ম নাই যে তারা করছেনা। বতর্মান অবৈধ প্রধানমন্ত্রীর কুলাঙ্গার ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা প্রতিটি শিক্ষাঙ্গনে অস্থিতিশীল পরিস্থির সৃষ্টি করে রেখেছে। তারা খাতা কলম ছেড়ে শিক্ষার্থীদের একের পর হত্যা, ধর্ষন, যৌন হয়রানী ও র্যাগিং করেই চলছে। এছাড়াও টেন্ডার ও চাঁদাবাজিতে সকলকে ছাড়িয়ে গেছে। এদের হাত থেকে শিক্ষকগণও রেহাই পাচ্ছেনা বলে জানান তিনি।
বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারকে রাজাকারের সরকার বলে আখ্যায়িত করে তিনি আরো বলেন, সরকারের ঘোষিত ১০হাজার রাজাকারের তালিকায় ৮০৮৭জন আওয়ামী লীগের। আওয়ামী লীগ স্বাধীনতার পক্ষের সরকার বললেও কাজে হচ্ছে স্বাধীনতা বিরোধী। স্বাধীনতা যুদ্ধে কোন নেতাই এ দেশে ছিলেন না। তারা ভারতের বিলাসবহুল হোটেলে আমদ ফুর্তিতে দিন কাটিয়েছে। এ জন্য আওয়ামী লীগের মধ্যে কোন প্রকার বীরউত্তম, বীরবিক্রম কেউ নাই। এই সরকারকে ২৯ তারিখের রাতের সরকার উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকার আইন শৃংখলা বাহিনীর উপর ভর করে ক্ষমতায় এসেছে। এখনো তারা তাদের উপর নির্ভর করে দেশ পরিচালনা করছে। এই আইন শৃংখলা বাহিনীই একদিন বর্তমান সরকাকে গিলে খাবে বলে তিনি বলে তিনি উল্লেখ করেন। ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে নগ্ন হামলার তীব্র প্রতিবাদসহ গ্রেফতারকৃত সকল ছাত্রদলের নেতাকর্মীর মুক্তি দাবী করেন তিনি। এছাড়াও বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলনে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের অগ্রনী ভূমিকা পালনের আহবান জানান প্রধান অতিথি।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক সহ-সম্পাদক ও মহানগর বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট শফিকুল হক মিলন বলেন. এই সরকার ক্ষমতায় আসার পরেই ছাত্রদলের এক নেতাকে ড্রিল মেশিন দিয়ে ছিদ্র করে হত্যা করে ছাত্রলীগ। তারা আজীবন সন্ত্রাসী সংগঠন বলে উল্লেখ করেন তিনি। তিনি বলেন, বর্তমানে যুবলীগ ক্যাসিনো স¤্রাট, স্বেচ্ছাসেবক লীগ টেন্ডারবাজী সম্্রাট ও আওয়ামী লীগ রাজাকারের দল ও সম্্রাট। এই সরকারের আমলে কোন কিছুই ভাল হতে পারেনা। চলতি মাসেই ঢাকা সিটি কর্পোরেশন। এর মধ্যে পুলিশ লীগ বিএনপি’র কাউন্সিলর প্রার্থীসহ নেতাকর্মীদের গণ গ্রেফতার শুরু করেছে। বিগত রাজশাহীসহ অন্যান্য সিটি কর্পোরেশন ও জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ন্যায় রাতের ভোটে সরকারী দলের প্রার্থীদের বিজয়ী করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। তবে এবার যদি ঢাকা সিটি নির্বাচনে একই রকমভাবে ভোট চুড়ি ও ডাকাতী করে সরকারী দলের প্রার্থীদের বিজয়ী করা হয় তাহলে সেদিন থেকেই এই সরকারের পতনের জন্য কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে হুঁশিয়ারী দেন মিলন। এই আন্দোলনে সকলকে জীবনবাজি রেখে রাজপথে থাকার আহবান জানান তিনি।
সভাপতির বক্তব্যে আসাদুজ্জামান জনি উপস্থিত সকল ছাত্রদলের নেতৃবৃন্দকে ধন্যবাদ জানান। সেইসাথে ছাত্রদল নেতৃবৃন্দ আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত আছে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলন ঘোষনা করার জন্য বিএনপি নেতৃবৃন্দদের অনুরোধ করেন তিনি।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি আসাদুজ্জামান জনি। বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা যুবদলের সভাপতি মোজাদ্দেদ জামানী সুমন, মহানগর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রবি, জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম জনি, মহানগর ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি বিপুল, যুগ্ম আহবায়ক নাহিন আহম্মেদ, রাবি ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুলতান আহম্মেদ রাহী ও জেলা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি রবিউল ইসলাম কুসুম। সমাবেশ সঞ্চালনা করেন মহানগর ছাত্রদলের যুগ্ম আহবায়ক আকবর আলী জ্যাকি।
আরো উপস্থিত ছিলেন মহানগর সেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তারেক বিন খালেদ, জেলা ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি শাহরিয়ার আমিন, সহ-সভাপতি রানা শেখ, যুগ্ম আহবায়ক সাহেব জাদা ও সিটি কলেজ ছাত্র নেতা এমদাদুল হক লেমনসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ইউনিটের ছাত্রদলের নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
প্রেস বিজ্ঞপ্তি