ডেস্ক: মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে হিম আতঙ্ক। সিরিয়া, ইয়েমেন, ইরাকে অশান্তি, গৃহযুদ্ধ। লেবাননেও পরিস্থিতি ভাল নয়। ফিলিস্তিনিরা তো নির্যাতিত হচ্ছে যুগের পর যুগ ধরে। ইরান-ইরাক প্রায় ৯ বছর যুদ্ধ করে অবশেষে ক্ষান্তি দিয়েছে। কাতারকে একপেশে করে রাখা হয়েছে। এমন এক অস্থির পরিবেশে ইরান-যুক্তরাষ্ট্র সম্ভাব্য যুদ্ধ নিয়ে চারদিকে বিরাজমান আতঙ্ক। একের পর এক ঘটনাপ্রবাহ দুটি দেশকে শেষ পর্যন্ত যেন সেদিকেই নিয়ে যাচ্ছে।
কুদস ফোর্সের কমান্ডার কাসেম সোলাইমানিকে হত্যার মধ্য দিয়ে যেন অনানুষ্ঠানিকভাবে সেই যুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে। এ হত্যার ভয়াবহ বদলা নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে ইরান। জাতিসংঘকে জানানো হয়েছে, আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে আত্মরক্ষার অধিকার আছে ইরানের। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ইরানের শীর্ষ সামরিক কমান্ডার কাসেম সোলাইমানিকে হত্যা করা হয়েছে যুদ্ধ থামাতে। যুদ্ধ শুরু করতে তাকে হত্যা করা হয় নি। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি।
শুক্রবার বাগদাদ বিমানবন্দরে হামলায় সোলাইমানি নিহত হওয়ার পর ট্রাম্প বলেছেন, সন্ত্রাসের রাজত্ব শেষ হয়ে গেছে। কিন্তু ইরান কি শুধু হুমকি দিয়ে, ভয় দেখিয়েই নিবৃত্ত থাকবে! মনে হয় না। কারণ, এ হত্যার জন্য যে বা যারাই জড়িত তাদের বিরুদ্ধে কঠোর প্রতিশোধের প্রত্যয় ঘোষণা করেছে ইরান। এমনিতেই ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজমান। তার মধ্যে কুদস ফোর্সের প্রধানকে হত্যায় সেই উত্তেজনা চরম আকার ধারণ করেছে। ইরান প্রতিশোধ নিতে হয়তো হামলা বা যুদ্ধ শুরু করতে পারে। তাই পূর্ব সতর্কতা হিসেবে মধ্যপ্রাচ্যে বাড়তি ৩০০০ সেনা মোতায়েন করবে যুক্তরাষ্ট্র।
ওদিকে ইরাকের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন বলেছে, কাসেম সোলাইমানিকে হত্যার ২৪ ঘটনার মধ্যে আবার বিমান হামলা হয়েছে। এই হামলার বিষয়ে ওয়াশিংটন থেকে কিছু বলা হয় নি। তবে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে ইরাকের একটি সেনা সূত্র বলেছেন, এই হামলায় নিহত হয়েছেন কমপক্ষে ৬ জন। স্থানীয় সময় শনিবার ভোরে ইরাকি মিলিশিয়াদের একটি বহরে ওই হামলা চালানো হয়।
ওদিকে শুক্রবারের হামলায় সোলাইমানি নিহত হওয়ার পর ফ্লোরিডায় অবকাশ যাপন কেন্দ্র মার এ লাগোতে সংবাদ সম্মেলন করেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী একটি ত্রুটিহীন হামলা চালিয়েছে। তাতে সারা বিশ্বের এক নম্বর ‘ওয়ান্টেড’ কাসেম সোলাইমানি নিহত হয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের কূটনীতিক ও সামরিক ব্যক্তিত্বদের ওপর অবিলম্বে বড় ধরনের হামলার পরিকল্পনা করছিল। কিন্তু তার মাঝেই আমরা তার টুঁটি চেপে ধরেছি এবং তাকে শেষ করে দিয়েছি।
ওদিকে সোলাইমানি নিহত হওয়ার পর কড়া ভাষায় বিবৃতি দিয়েছেন ইরানের সুপ্রিম নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি। তিনি বলেছেন, আল্লাহর ডাকে তিনি (সোলাইমানি) চলে যাওয়ার অর্থ এই নয় যে তার পথ অথবা তার মিশন শেষ হয়ে গেছে। কিন্তু অপরাধীদের জন্য অপেক্ষা করছে এক শক্তিশালী প্রতিশোধ। এই প্রতিশোধ তাদের বিরুদ্ধে যাদের হাতে লেগে আছে তার ও অন্য শহীদদের রক্ত। ওদিকে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে একটি চিঠি লিখেছেন ইরানের রাষ্ট্রদূত মাহিদ তাখত রাভানছি। তাতে তিনি বলেছেন, আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে আত্মরক্ষার অধিকার আছে তেহরানের।