এক বছরে রাঙামাটিতে ৪৩ খুন

Slider চট্টগ্রাম জাতীয়


রাঙামাটি: বিগত ২০১৯ সালে পার্বত্য জেলা রাঙামাটিতে আধিপত্যের লড়াইয়ে সশস্ত্র তৎপরতায় লিপ্ত থাকা পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের মধ্যে হামলা-পাল্টা হামলায় অন্তত ৪৩ জন নিহত হয়েছেন। জেলার অরণ্যে ঘাপটি মেরে থাকা বেপরোয়া এ সকল আঞ্চলিক সন্ত্রাসীদের হাতে সেনাবাহিনীর সদস্যকেও প্রাণ দিতে হয়েছে।

এছাড়া নিহত অপর ব্যক্তিরা প্রায় সকলেই অত্রাঞ্চলের স্থানীয় উপজাতীয় সম্প্রদায়ের বাসিন্দা এবং তথাকথিত অধিকার আদায়ের নামে সশস্ত্র তৎপরতায় লিপ্ত থাকা আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলগুলোর সক্রিয় সদস্য ও সমর্থক।

মূলত: ভাতৃঘাতি সংঘাত ও চাঁদাবাজিকে কেন্দ্র করে সংগঠিত সশস্ত্র হামলার মাধ্যমে ২০১৯ সালের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সময়ে এই হত্যাকা-গুলো ঘটানো হয়। এর মধ্যে জানুয়ারিতে ২ জন, ফেব্রুয়ারিতে ৪ জন, মার্চে ১০ জন, এপ্রিলে ৭ জন, মে-তে ২ জন, জুনে ১ জন, জুলাইয়ে ২ জন, আগস্টে ৪ জন, সেপ্টেম্বরে ২ জন, অক্টোবরে ২ জন, নভেম্বরে ৩ জন এবং ডিসেম্বর মাসে ৩ জনসহ সর্বমোট ৪২ জনকে হত্যা করা হয়েছে। রাঙামাটি জেলার পুলিশ বাহিনী, বিভিন্ন সংস্থাসহ নিরাপত্তাবাহিনীর দায়িত্বশীল সূত্রে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

প্রতিনিয়ত রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের কারণে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে পাহাড়ের গ্রামগুলোতে। বৃদ্ধি পাচ্ছে একটার পর একটা আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলের সংখ্যা। যার ফলে পাহাড়ে অবৈধ অস্ত্র ও চাঁদাবাজি, খুন, গুম ও বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা বেড়েই চলেছে। পার্বত্য বিশেষজ্ঞদের মতে, পক্ষগুলোর মধ্যে সংঘাত যতটা না আদর্শিক কারণে, তারচেয়ে বেশি এলাকার দখলদারিত্ব, দখল নিয়ন্ত্রণে রাখা, চাঁদাবাজির পয়েন্টগুলো নিয়ন্ত্রণ, বিশাল সশস্ত্র গ্রুপের কর্মীদের ভরণপোষণের ব্যয়ভার আদায়, প্রতিপক্ষের কর্মসূচিতে বাধা প্রদান, পাল্টা প্রতিরোধ এসবই তিনটি রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে বিরোধের কারণ।

নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন, পার্বত্য জেলাগুলো থেকে সেনা প্রত্যাহার করা হলে নিরাপত্তা শূন্যতা তৈরি হবে।
তাদের মতে এমনিতেই পাহাড়ে বর্তমানে সুষ্ঠু পরিস্থিতি নেই। এখনো চাষাবাদ, পণ্য পরিবহনসহ প্রতিটি ক্ষেত্রেই সশস্ত্র গ্রুপগুলোকে চাঁদা দিতে হয়। কাঙ্খিত চাঁদা না পেলে তারা খুন, অপহরণসহ নানা অপকর্মে লিপ্ত হয়। সুতরাং সঙ্গত কারণে স্থানীয় জনগণের নিরাপত্তার স্বার্থেই সেখানে সেনা সদস্যদের উপস্থিতি প্রয়োজন।

নিরাপত্তা বাহিনীর এক উর্ধতন কর্মকর্তার মতে, চুক্তি শর্ত অনুযায়ী পার্বত্য জেলার দূর্গম অঞ্চল থেকে বেশ কিছু সেনা ক্যাম্প প্রত্যাহার করা হয়েছে। স্থানীয় জনগণের স্বার্থেই সব ক্যাম্প প্রত্যাহার করা মোটেও উচিত হবে না। বেসামরিক জনগণের নিরাপত্তার জন্যই সেখানে সেনা ক্যাম্প রাখা প্রয়োজন। সব সেনা সরিয়ে নিলে পার্বত্য জেলায় নিরাপত্তা শূণ্যতা তৈরি হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *