৪৮ বছর পরেও এই দেশের মানুষ স্বাধীন নয় বলে মন্তব্য করেছেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বুধবার মহানগর নাট্যমঞ্চে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে বিএনপি আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে খুবই হতাশার সঙ্গে বলতে হচ্ছে, আমরা যে বিচার বিভাগের প্রতি সবচেয়ে বেশি নির্ভর করি, সকল অত্যাচার অবিচার থেকে বাঁচার জন্য আদালতের কাছে ন্যায় বিচারের আশা করি, সেখানে কোন মানুষ আজ ন্যায় বিচার পায় না। সেখানেও উপরের নির্দেশে বিচার করা হয়। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রায়ে একটা বিষয় পরিস্কার হয়ে গেছে যে, বিচার বিভাগ আজ স্বাধীন নয়। তাহলে আমরা কিভাবে বলতে পারি, আমাদের বিজয় অর্জন হয়েছে। ৪৮ বছর পরেও আমাদের বলতে হচ্ছে আমরা স্বাধীন নই। আমাদের স্বাধীনতা ছিনিয়ে নিয়ে গেছে।
এই আওয়ামী লীগ সরকার গণতন্ত্র বিশ্বাস করে না বলেই আমাদের জনগণের সকল স্বাধীনতা ছিনিয়ে নিয়েছে।
বেগম খালেদা জিয়াকে আটকে রাখার পেছনে গভীর ষড়যন্ত্র রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে আটকে রাখা এটা নিচক আটকে রাখা নয়। এর পেছনে গভীর ষড়যন্ত্র রয়েছে। সেই ষড়যন্ত্রই হচ্ছে বাংলাদেশকে একটা বিরাজনীতিকরণের ষড়যন্ত্র। তারা জানে দেশনেত্রীকে যদি বাইরে রাখে তাহলে তারা ক্ষমতায় থাকতে পারবে না। তাদের ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করার জন্যই ওনাকে আটকে রাখা হয়েছে। অতীতে যেভাবে স্বৈরাচারের পতন হয়েছে, আগামী দিনে একইভাবে স্বৈরাচারের পতন ঘটানো হবে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, আজকে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব নিয়ে আমরা চিন্তিত। মেরুদণ্ডহীন সরকার কোনো প্রতিবাদ করতে পারছে না। ভারত এনআরসির মাধ্যমে বাংলাদেশকে বিপদগ্রস্ত করছে। কিন্তু সরকার কোনো প্রতিবাদ করছে না। এছাড়া বিজয় দিবসের আলোচনার থেকে খালেদা জিয়ার মুক্তির শপথ নিতে নেতাকর্মীদের আহ্বান জানান মোশাররফ। ভারতের এনআরসি বাস্তবায়ন প্রসঙ্গে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, আমরা ভারতকে শত্রু মনে করি না। কিন্তু তাদের কথা বার্তায় মনে হয় তারা আমাদের শত্রু মনে করে। তারা বাংলাদেশের শত্রু, শুধু আওয়ামী লীগের বন্ধু। এনআরসি এটা ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় নয়, অন্য দেশের জাতীয় স্বার্থে আঘাত লাগলে অভ্যন্তরীণ বিষয় বলে চাপা দেয়া যাবে না। আমাদের প্রতিবাদ করতে হবে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেন, যে গণতন্ত্রের জন্য বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল, কেন আজকে সেই গণতন্ত্র অপসারিত হয়ে স্বৈরতন্ত্র কায়েম হয়েছে। তা এই সরকারকে জবাব দিতে হবে। গত ১০ বছরে দেশের মানুষের জন্য কোনো বিনিয়োগ হয়নি। উচ্চ সুদে বিদেশীদের বিনিয়োগে শুধু ফ্লাইওভার হয়েছে। দেশের মানুষের কোনো উন্নয়ন হয়নি।
বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানী ও সহ প্রচার সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলীমের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু, আবদুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, হাবীব উন নবী খান সোহেল, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশার, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েল, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা রহমান, ছাত্রদলের সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন প্রমুখ।