বাংলাদেশে কৃত্রিম বৃষ্টি সৃষ্টির কাজ করা প্রয়োজন —–কৃষিমন্ত্রী

কৃষি, পরিবেশ ও প্রকৃতি

DSC00583

গাজীপুর: কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী এমপি বলেছেন, বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে কম খরচে বেশি উৎপাদন করার জন্য বিশ্বে আকাশে মেঘনিশিয়াম সালফাইড ব্যবহার করে কৃত্রিম বৃষ্টি সৃষ্টির কাজ চলছে। কিন্তু বাংলাদেশে ওই কাজটি এখনো শুরু করা হয়নি। অবিলম্বে কৃত্রিম বৃষ্টি সৃষ্টির কাজ শুরু করে উন্নয়নের ক্ষেত্রে আরেকটি বৈপ্লবিক পরিবতন আনা প্রয়োজন।

 

বুধবার(৩১ডিসেম্বর) দুপুরে বাংলাদেশ ধান গবেষনা ইনন্টিটউট (বারি)অডিটরিয়ামে ৬দিনব্যাপী ব্রি বাষিক গবেষনা পযালোচনা কমশালা ২০১৩-২০১৪ এর শুভ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষনে তিনি এসব কথা বলেন।

 

মতিয়া চৌধুরী বলেন, সাফল্য ও উন্নয়নের এমন জায়গায় আমরা আছি যে, বিভিন্ন দেশ আমাদের দিকে চেয়ে থাকে। আমরা ভাতে মাছে বাঙালী। জননেত্রী শেখ হাসিনা ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের ক্ষুদা ও দারিদ্রমুক্ত টেকসই বাংলাদেশ গড়ার কাজ করছি আমরা। খাদ্য উৎপাদনে আমরা স্বয়ং সম্পুন হয়েছি।

 

মন্ত্রী বলেন, মফস্বলে শ্রমের বিপরীতে টাকা যেন যায় তার ব্যবস্থা করতে প্রধানমন্ত্রী নিদেশ দিয়েছেন। কৃষকদের দেয়া একটি কাডের কারণে গ্রামে মহাজন শব্দটা নেই। মহাজনেরা এখন সামাজিক ব্যবসার দিকে চলে যাচ্ছেন। মহাজনদের নামের আগে ডক্টরেটও ব্যবহৃত হচ্ছে।

 

 

গত চার দশকের বেশী সময়ে দেশের জনসংখ্যা বেড়ে দ্বিগুন হলেও মূলত ব্রি উদ্ভাবিত উচ্চ ফলনশীল ধানের জাত সহ উন্নত চাষাবাদ প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে দেশে ধান উৎপাদন বেড়েছে তিন গুনেরও বেশী।

 

বিজ্ঞানীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর বিজ্ঞানীদের প্রতি বিশেষ মমত্ববোধ রয়েছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় গত ৫ বছরে আপনারা গবেষনা ও উদ্ভাবনের মাধ্যমে ওই মমত্ববোধ আপনার স্পশ করতে পারেননি। আগামীতে আশা করি আপনপদের কমকান্ডের মাধ্যমে এদেশের মানুষের জন্য নতুন কিছু সৃষ্টি করতে পারবেন। যা বিগত দিনের ব্যথতা পুষিয়ে দিতে পারেন।

 

কৃষি মন্ত্রনালয়ের সচিব ড. এস এম নাজমুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী।

 

অনুষ্ঠানে বাষিক রিপোট ও মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ ধান গবেষনা ইনন্টিটউটের (বারি) মহাপরিচালক ড.জীবন কৃষ্ন বিশ্বাস। স্বগত বক্তব্য রাখেন প্রতিষ্ঠানের পরিচালক(প্রশাসক ও সাধারণ পরিচযা)) ড. শাহজাহান কবির।

 

বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ কৃষি গবেষনা কাউন্সিলের নিবাহী চেয়ারম্যান ড. আবুল কালাম আজাদ, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ জেড এম মমতাজুল করিম ও ব্রি’ র পরিচালক(গবেষনা) ড. মোঃ আনছার আলী।

 

অনুষ্ঠানে ব্রি, বারি,বিএআরসি,ডিইউ, ইরি সহ বিভিন্ন সরকারী বেসরকারী প্রতিষ্ঠান ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞ পযায়ের প্রতিনিধিরা যোগদেন।পাঁচ দিনব্যাপী এই কমশালায় গত বছরের ব্রির ১৯টি গবেষনা বিভাগ ও নয়টি আঞ্চলিক কাযালয়ের গবেষনা ফলাফল সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের মাঝে উপস্থাপন করা হয়।

 

আয়োজকরা জানান, ২০১৩-২০১৪ অথ বছরে সাতটি উফশী ধানের জাতসহ বেশ কিছু নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও উন্নয়ন করা হয়েছে। উদ্ভাবিত এ জাতগুলোর মধ্যে রয়েছে লবনাক্ততা সহনশীল বোরো জাত ব্রি ধান৬১, ব্রি ধান৬৭, জিঙ্ক সমৃদ্ধ ব্রি ধান৬২, ব্রি ধান৬৪, ঐতিহ্যবাহী বালাম চালের অনুরুপ বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন এবং সরু বালাম নামে পরিচিত জাত ব্রি ধান৬৩, সরাসরি বপনযোগ্য আগাম আউশ ধানের জাত ব্রি ধান-৬৫, খরা সহনশীল ও উচ্চ মাত্রার প্রোটিন সমৃদ্ধ বোরো জাত ব্রি ধান৬৬, বোরো মৌসুমের আদশ উফশী জাত ব্রি ধান৬৮ এবং কম খরচে আবাদযোগ্য উফশী জাত ব্রি ধান৬৯।

 

আয়োজক সূত্র আরো জানায়, সাম্প্রতি সময়ে ব্রি উদ্ভাবিত বিভিন্ন জাতের ব্রি ধান ২৯, ব্রি ধান৫৮,বিআর১১,সমতুল্য ব্রি ধান৪৯। এসকল জাতের মধ্যে সুর ও সুগন্ধযুক্ত বোরো মৌসুমের জাত ব্রি ধান৫০ বা বাংলামতি রফতানির জন্য সম্ভাবনাময়। বতমানে বাংলাদেশ ধান গবেষনা ইনস্টিটউটের ৮হাজার জাতের ধান রয়েছে। দেশের ৮০ ভাগ জমিতে ব্রি উদ্ভাবিত ধানের জাতের চাষাবাদ হয় এবং এ থেকে আসে দেশের মোট ধান উৎপাদনের শতকরা ৯১ভাগ।

 

 

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *