দিরাই (সুনামগঞ্জ): সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার কালধর গ্রামে দু’পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় প্রতিপক্ষের বন্দুকের গুলিতে ঘটনাস্থলেই আমির উদ্দিন নামে একজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় ১৩ জন গুলিবিদ্ধসহ আহত হয়েছেন আরও ২০ জন। নিহত আমির উদ্দিন কালধর গ্রামের সাইদ উল্লার পুত্র।
আজ সকালের দিকে গ্রামের মনু মিয়ার বাড়ির সামনে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে দিরাই থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে এবং হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে গ্রামের মৃত হাজী আবদুল অলীর পুত্র ফারুক মিয়াকে বন্দুকসহ আটক করে থানা হেফাজতে নিয়েছে।
গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হওয়া দেলোয়ার হোসেন (৩০), রাজেল মিয়া (৩২), এলাইছ মিয়া (৫২), শহিদ মিয়া (৩৬), চন্দন মিয়া (৩০), মিলন মিয়া (৩০), করম আলী (৫২), বিল্লাল মিয়া (২৯), জাকারিয়া (২৫), ছাদ হোসেন (২৯), মাহবুব মিয়া (১৮), জুয়েল মিয়া (১৯), কুতুব মিয়া (৩০) কে সিলেট এমএজি ওসমানী হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
গ্রামবাসী ও পুলিশ সুত্রে জানা যায়, গ্রামের ফারুক মিয়া, মনু মিয়া ও আওয়াল মিয়ার কাছে গ্রামের উন্নয়ন ফাণ্ডের প্রায় ১০-১২ লাখ টাকা রয়েছে। এ টাকা নিয়ে গ্রামবাসীর সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে তাদের বিরোধ চলে আসছিলো।
ইউপি চেয়ারম্যানসহ এলাকাবাসী কয়েকবার সালিশ বৈঠকের মাধ্যমে বিষয়টি সমাধানেরও চেষ্টা করেছেন। কিন্তু তারা ব্যর্থ হন।
আজ রোববার সকালের দিকে গ্রামের শফিক মিয়া, আইয়ুব মিয়া ও জুয়েল মিয়া মোটরসাইকেল যোগে দিরাই যাওয়ার পথে মনু মিয়ার বাড়ির সামনে মনু মিয়া, মিলিক মিয়া ও ফারুক মিয়াসহ তাদের লোকজন হামলা চালায়। এ খবর পেয়ে গ্রামের লোকজন তাদের উদ্ধারে এগিয়ে আসলে ফারুক মিয়ার নেতৃত্বে আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়।
এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান আমির উদ্দিন। গ্রামের সাবাজ মিয়া জানান, আজ তিন বছর ধরে গ্রামের উন্নয়ন ফাণ্ডের প্রায় ১০-১২ লাখ টাকা ফারুক মিয়া, মনু মিয়া ও আউয়াল মিয়ার কাছে রয়েছে। গ্রামবাসী টাকার হিসাব চাইলে তারা বিভিন্ন টালবাহানা ও মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রামবাসীকে হয়রানী করেন।
ইউনিয়ন চেয়ারম্যান শিবলী আহমেদ বেগ জানান, বিষয়টি সমাধানের জন্য একাধিকবার চেষ্টা করা হলেও সমাধান হয়নি। দিরাই থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কেএম নজরুল ইসলাম জানান, পুলিশ ঘটনাস্থলে রয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ফারুক মিয়াকে তার বন্দুকসহ আটক করে থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে। গ্রামের পরিবেশ এখন শান্ত রয়েছে। নিহত আমির উদ্দিনের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য সুনামগঞ্জে প্রেরণ করা হয়েছে।