সিরাজগঞ্জে সংঘর্ষের ঘটনায় বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা, গ্রেপ্তার ৬

Slider জাতীয় বাংলার মুখোমুখি


সিরাজগঞ্জ: সিরাজগঞ্জে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সংঘর্ষ চলাকালে পুলিশের ওপরে হামলা, মারপিট ও সরকারি কাজে বাধা দেয়ার অভিযোগে শতাধিক বিএনপি নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। রোববার রাতে সদর থানার এসআই জয়দেব কুমার বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। তবে, সোমবার সকাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগ বা সরকারি কলেজের পক্ষ থেকে কোন মামলা হয়নি বলে ওসি জানিয়েছেন। এদিকে বিজয় র‌্যালীতে হামলার ঘটনার প্রতিবাদে আজ সোমবার সকালে মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্যোগে শহরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ কর্মসুচি পালিত হয়েছে।

রোববার সকালে সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজের উদ্যোগে বিজয় র‌্যালী বের করা হলে শহরের ইবি রোড এলাকায় এ সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী এ সংঘর্ষ চলাকালে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির অন্তত: ৪০ নেতাকর্মী আহত হয়।

সদর থানার এসআই তরিকুল ইসলাম জানান, সংঘর্ষ চলাকালে ৪-৫ জন পুলিশ সদস্য আহত হন। এ ঘটনায় ১১৭ জনের নাম উল্লেখ ও ৪০-৪৫ জন অজ্ঞাতনামা বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। সংঘর্ষ চলাকালে ঘটনাস্থল থেকে আটক ৬ জনকে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, শহরের হোসেনপুর মহল্লার ঈদুল, ধানবান্ধি মহল্লার টিপু সুলতান, পুঠিয়াবাড়ির আনোয়ার হোসেন, গয়লা এলাকার শুভ, বিপ্লব ও সোহেল।

মামলায় শীর্ষ পর্যায়ের আসামীরা হলেন, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান বাচ্চু, সহ-সভাপতি মজিবুর রহমান লেবু, নাজমুল হাসান তালুকদার রানা, অমর কৃষ্ণ দাস, আনিসুজ্জামান পাপ্পু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাশেদুল হাসান রঞ্জন, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা মোস্তফা জামান, পৌর বিএনপির আহবায়ক এড. ইন্দ্রজিত সাহা, জেলা যুবদলের সভাপতি মির্জা আবদুল জব্বার বাবু, সাধারণ সম্পাদক মুরাদুজ্জামান মুরাদ, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক আনোয়ার হোসেন রাজেশ, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি জুনায়েত হোসেন সবুজ ও সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম সিরাজ।

এদিকে, হামলার ঘটনার প্রতিবাদে আজ সকালে মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্যোগে শহরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ কর্মসুচি পালিত হয়েছে।
সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিট কমান্ড কার্যালয়ের সামনে সমাবেশে আয়োজন করা হয়। সাবেক জেলা কমান্ডার গাজী সোহরাব হোসেন সরকারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে মুক্তিযোদ্ধা আবু ইউসুফ সূর্য্য, মুক্তিযোদ্ধা এড. কেএম হোসেন আলী হাসান, মুক্তিযোদ্ধা এড. বিমল কুমার দাস, সাবেক কমান্ডার গাজী শফিকুল ইসলাম শফি, মুক্তিযোদ্ধা জগলু চৌধুরী ও জেলা মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের সভাপতি মামুনুর রশিদ বক্তব্য রাখেন। বক্তারা বিজয় র‌্যালীতে হামলার জন্য বিএনপিকে দায়ী করে অবিলম্বে তাদের গ্রেপ্তার ও শাস্তি চান।

সমাবেশ শেষে একটি মিছিল শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে সরকারি কলেজ চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। সিরাজগঞ্জ-২ আসনের এমপি প্রফেসর হাবিবে মিল্লাত মুন্নার নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত মিছিলে মুক্তিযোদ্ধা ছাড়াও আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকমীরা অংশ নেন।

অপরদিকে, সংঘর্ষের ঘটনার জের ধরে রোববার রাতে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান বাচ্চুর পুরাতন পোস্ট এলাকায় অবস্থিত বহুতল আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবনে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।

এ বিষয়ে সাইদুর রহমান বাচ্চু বলেন, রাত ১১টার দিকে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে হামলা চালিয়ে বসতবাড়ির দরজা-জানালা ও আসবাবপত্র এবং ভাড়ায়চালিত ল্যাব কেয়ারের সাইনবোর্ড ভাঙচুর করেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *