ভিপি নুরুল হকের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগে ‘লজ্জিত’ ছাত্রলীগের প্যানেল থেকে নির্বাচিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) প্রতিনিধিরা। এই অভিযোগে ডাকসুর ভিপি পদ থেকে নুরুলের পদত্যাগ দাবি করেছেন দুর্নীতির অভিযোগে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক পদ হারানো ডাকসুর জিএস (সাধারণ সম্পাদক) গোলাম রাব্বানীসহ ২৩ জন ছাত্র-প্রতিনিধি৷
রোববার (৮ ডিসেম্বর) ডাকসুর সভাকক্ষে সংবাদ সম্মেলন করেন ডাকসুর নেতৃবৃন্দ। ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নুরের টেন্ডারবাজি, তদবির বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক লেনদেনের প্রতিবাদে নিন্দাজ্ঞাপন, ভিপি পদ থেকে নুরকে পদত্যাগের আহবান এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ কর্তৃক আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন এমন দাবি করেন ডাকসুর ২৫ সদস্যের ২৩ জন। ডাকসু প্যানেলের ২৫ জনের মধ্যে ২৩ জনই ছাত্রলীগ থেকে নির্বাচিত।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ডাকসুর জিএস গোলাম রাব্বানী, এজিএস সাদ্দাম হোসেন, সাংস্কৃতিক সম্পাদক আসিফ তালুকদার, প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আরিফ ইবনে আলি, পরিবহন সম্পাদক শামসই নোমান, সদস্য রকিবুল ইসলাম ঐতিহ্য, তিলোত্তমা সিকদার, তানভীর হাসান সৈকতসহ সবাই।
গোলাম রাব্বানি বলেন, ‘আমরা ডাকসু পরিবার এই অপকর্মের দায়ভার নিতে চাইনা, নুর যদি পদত্যাগ না করে, তবে সংখ্যাগরিষ্ঠের ভিত্তিতে আমরা ভিসি স্যারকে আহবান জানাই, যাতে দ্রুত তাকে বহিষ্কার করে ডাকসুকে কলঙ্কমুক্ত করা হোক।’
এসময় দুর্নীতির দায়ে ডাকসুর জিএসকে নিজ দল থেকে সরিয়ে দেয়া হলেও ডাকসু জিএসের পদত্যাগ চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেনি ডাকসুর নেতৃবৃন্দরা? এমন প্রশ্নের উত্তরে রাব্বানী বলেন, ‘আমি নিজ দল থেকে অব্যাহতি নিয়েছি। আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ প্রমাণিত না হলেও আমি সংগঠনের স্বার্থে পদত্যাগ করেছি। আমার মতো ভিপিও পদত্যাগ করুক সেটি আমি চাই।’
সাদ্দাম হোসেন, ‘ডাকসুর ভিপি তার পদকে ব্যাবহার করে মৌলবাদি ফায়দা নিচ্ছেন। আমরা তার নিন্দা জানাচ্ছি এবং অনতিবিলম্বে তার পদত্যাগ দাবী করছি।’
লিখিত বক্তব্যে রকিবুল ইসলাম বলেন, ‘নুর জাতির সামনে শিক্ষার্থীদের লজ্জিত করেছেন। তার জন্য যে পাঁচ লাখ টাকা বরাদ্দ ছিল তা ৯ মাসেও কোনো উন্নয়নে খরচ করেননি। এছাড়াও নুরুল হকের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের মধ্যে রয়েছে, ডাকসুতে সময় না দিয়ে লোক দেখানোর জন্য বনানীর অগ্নিকাণ্ডে সেলফি তুলেছেন, খালেদা জিয়ার মুক্তিতে সোচ্চার, রেজিস্টার অফিসে একাধিক টেন্ডারবাজি, প্রকাশিত ইশতেহারের কোনো কিছুই পূরন করেননি।’
তিনি বলেন, ‘আজকের সম্মেলনের প্রধান দাবি হলো, নুরের আন্টির সাথে যে ব্যবসার কথা হয়েছে তার সব বিবরণ দিতে হবে।’ এছাড়া নিজের অক্ষমতার কথা স্বীকার করে পদত্যাগ করা এবং দুর্নীতি দমন কমিশনকে নুরের কর্মকাণ্ডের তদন্ত করতে আহবান জানান ডাকসুর অন্যান্য নেতাকর্মীরা।
উল্লেখ্য, ডাকসু ভিপি নুরুল হক বরাবরের মতই শুরু থেকে অস্বীকার করে আসছেন এই দায়। তিনি বলছেন, এটা তার ব্যবসার লেনদেন। এছাড়াও যে নিজেই দুর্নীতির দায়ে নিজ দল থেকে বহিষ্কৃত তার মুখ থেকে এসব বের হওয়া ‘ভূতের মুখে রাম নাম’ বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি।