ডেস্ক | পূর্ব আফ্রিকায় দুই মাসব্যাপি অবিরাম ভারী বর্ষণে সৃষ্ট বন্যা ও ভূমিধসে অন্তত ২৬৫ জন নিহত হয়েছেন। ডুবে গেছে বহু গ্রাম। আবহাওয়াবিদরা সতর্ক করেছেন, পরিস্থিতি আরো খারাপের দিকে এগুচ্ছে।
বার্তা সংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি দশকের অন্যতম প্রাকৃতিক দুর্যোগের শিকার পূর্ব আফ্রিকা। কেনিয়া, সোমালিয়া, বুরুন্ডি, তানজানিয়া, দক্ষিণ সুদান, উগান্ডা, জিবুতি ও ইথিওপিয়াজুড়ে এখন পর্যন্ত এ দুর্যোগে আক্রান্ত হয়েছেন ২০ লাখের বেশি মানুষ। ভেসে গেছে লাখ লাখ গৃহপালিত পশু।
বুধবার এক ভূমিধসের ঘটনায় বুরুন্ডিতে এখন পর্যন্ত ৩৮ জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে। আহত হয়েছেন অনেকে। নিখোঁজ রয়েছেন অন্তত ১০ জন।
সোমালিয়ায় ভারী বর্ষণ অব্যাহত রয়েছে। সেখানে বন্যায় আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৬ লাখে দাঁড়িয়েছে। দেশটির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে শক্তিশালী এক ঝড়। পানিবাহিত রোগ বৃদ্ধির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। হাজার হাজার একর জমির শস্য ধংস হয়ে গেছে। আসন্ন দিনগুলোয় সেখানে খাদ্য সংকট দেখা দেয়ার আশংকা রয়েছে।
এদিকে, কেনিয়ায় এখন পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছে ১৩২ জন। বাস্তুচ্যুত হয়েছেন ১৭ হাজারের বেশি। সরকারের মুখপাত্র সাইরাস অগুনা মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, বন্যায় ডুবে গেছে স্কুল, রাস্তা-ঘাট, স্বাস্থ্য কেন্দ্র সহ বহু গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। পুরো দেশ জলনিমগ্ন হয়ে রয়েছে।
জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর জানিয়েছে, দক্ষিণ সুদানে বন্যায় আক্রান্ত হয়েছে প্রায় ১০ লাখ মানুষ। কোথাও কোথাও পুরো শহর বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। তানজানিয়ায় এখন পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন ৫৫ জন। উগান্ডায় বন্যা ও ভূমিধসে নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে আট জনে। বাস্তুচ্যুত হয়েছেন আরো ৮০ হাজার। ইথিওপিয়ায় অক্টোবরে এক ভূমিধসে নিহত হয়েছেন ২২ জন। জিবুতিতেও অস্বাভাবিক পরিমাণে ভারী বর্ষণ অব্যাহত রয়েছে। জাতিসংঘ জানিয়েছে, সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোয় দেশটির কোথাও কোথাও এক দিনে দুই বছরের সমপরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন ‘ভারত মহাসাগর ডিপোল’ নামের বিশেষ জলবায়ু ব্যবস্থার জন্য এরকম বিরূপ আবহাওয়ার শিকার হচ্ছে পূর্ব আফ্রিকার দেশগুলো। মহাসাগরটির পশ্চিম ও পূর্ব অঞ্চলে সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রার মধ্যে পার্থক্যের কারণে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়। তবে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, সাম্প্রতিক ওই বিরূপ আবহাওয়া নজিরবিহীন। বহু দশক ধরে এমন পরিস্থিতি দেখা যায়নি।