হলি আর্টিজান মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জঙ্গি রাকিবুল হাসান রিগ্যানসহ মোট তিনটি টুপি এনেছিলো জঙ্গিরা। এর মধ্যে দু’টি সাদা এবং আরেকটি কালো। জঙ্গিরা টুপি তিনটি কারাগার থেকেই এনেছিলো। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জঙ্গির মাথায় আইএস টুপি বিষয়ে তদন্ত কমিটির প্রধান ঢাকা মহানগর পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (ডিবি) মাহবুব আলম এ কথা বলেন।
আজ দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমরা ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করেছি। কারাগার থেকে বের হওয়ার সময় তল্লাশি করা হয়েছে। তবে তাদের কাছে যে টুপি ছিলো তা রেখে দেয়া হয়নি বরং নির্বিঘেœ তাদের টুপি নিয়ে আসতে দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, মোট তিনটি টুপি এসেছিলো, এর মধ্যে দুইটি সাদা ও একটি কালো টুপি ছিলো। তবে কোনো লোগো ফুটেজে ধরা পড়েনি।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কারাগারে কর্মরত কারারক্ষীরা হয়তো বুঝতেই পারেনি এটা খুবই তাৎপর্যপূর্ণ (সিগনিফিকেন্স)।
টুপি তো নামাজের অংশ। তাই হয়তো তারা ছেড়ে দিয়েছে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জঙ্গিদের কাছে এভাবে একাধিক টুপি আসতে পারে। লোগো থাকতেও পারে, আবার নাও থাকতে পারে। তবে আমাদের তদন্তে ধরা পড়েনি। এমনও হতে পারে, তারা যে টুপি কারাগার থেকে এনেছিলো, আদালতে রায় শোনার পর তা তারা উল্টে পরেছে।
রিগ্যানের বিষয়ে তিনি বলেন, আইএস টুপি বিতর্কের পর তদন্তের স্বার্থে তাকে অনেক সংস্থাই জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। রিগ্যান কারাগারে এক ধরনের বক্তব্য দিয়েছে, গোয়েন্দা পুলিশের কাছে আরেক ধরনের বক্তব্য দিয়েছে আবার আদালতে গিয়ে ভিন্ন ধরনের বক্তব্য দিয়েছে।
আদালতের নিরাপত্তার বিষয়ে তিনি বলেন, সেদিন আদালতে নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছিলো। এরপরও আদালতে রিগ্যান বলেছে, ভিড়ের মধ্যে কেউ একজন তাকে টুপি দিয়েছে। সেদিন পুলিশ, সাংবাদিক আর আইনজীবী ছাড়া কেউ ছিলেন না। সাংবাদিক এবং আইনজীবীর বিষয়টি আদালতে একটা ফ্রেমে আনা দরকার। এমন কোনো সিস্টেম দাঁড় করানো দরকার যাতে আইনজীবী তার পেশায় থাকতে পারে আর সাংবাদিক যাতে তার রিপোর্ট কাভার করতে পারে। পুলিশ তার নিরাপত্তার দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে পারে।
আইএস টুপির বিষয়ে তদন্তের জন্য ডিএমপির পক্ষ থেকে একটি কমিটি গঠন করা হয়। সেই কমিটির প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পান গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মাহবুব আলম। কমিটি দু’একদিনের মধ্যেই কমিশনারের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবেন বলে জানা গেছে।
এর আগে ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার (ডিবি) মো. মাহবুব আলম জানিয়েছিলেন, হলি আর্টিসান রেস্তোরাঁয় হামলা মামলার রায়ের দিন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত রিগ্যানসহ দুই জঙ্গির মাথায় যে টুপি ছিলো সেটা কারাগার থেকেই আসছে বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে।
অন্যদিকে কারা অধিদপ্তর থেকে যে প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়েছে, তাতে বলা হয়েছে- জঙ্গি রিগ্যানের মাথায় যে আইএস লোগো সম্বলিত টুপি দেখা গেছে, তা কারাগার থেকে যায়নি।