পিয়াজের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে ভোক্তাদের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে সরকার দলীয় সিন্ডিকেট বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, বাজারে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রনের দায়িত্ব সরকারের, কে কি খাবে তা নির্ধারন করা সরকারের দায়িত্ব নয়। মঙ্গলবার রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই মন্তব্য করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, নিত্য পণ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকারের ব্যর্থতায় দেশবাসী হতাশ ও ক্ষুব্ধ। তিনি আরও বলেন, সরকার ও ব্যবসায়ীদের সদিচ্ছার উপর দ্রব্যমূল্য নির্ভল করে। সরকারের লাগাতার দখলদারিত্বের কারণেই দাম বাড়ছে বলেও অভিযোগ করেন এই নেতা। সরকার দলীয় স্বার্থে অর্থনীতি ও রাজনীতি দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রন করতে পারছে না বলেও জানান মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। দ্রব্যমূল্যের বাজারকে অসহনীয় করার জন্য দায়ী ভোটারবিহীন সরকার। দলীয় ব্যবসায়িদের সিন্ডিকেট না ভাংতে পারলে এবং টিসিবিকে নিয়ন্ত্রন করতে না পারলে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়।
এসময় দ্রব্যমূল্যের উধ্বর্গতি রোধে সবাইকে এর বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের আহবান জানান মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের দৈনন্দিন জীবনের এই ভয়াবহ চিত্র রূপায়িত করার জন্য যারা দায়ী তারা হচ্ছেন, বর্তমান ভোটারবিহীন অবৈধ সরকার।
তাদের দুর্নীতি, টাকাপাচার, লুটপাটের মাধ্যমে পাহাড়সমান সম্পদ অর্জনের ফলশ্রুতিতে দৈনন্দিন নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি আকাশ্চুম্বি হয়েছে । এর পেছনে প্রধান কারণ অবশ্য দ্রব্যমূল্যের ভয়াবহতার নূন্যতম আঁচ তাদের উপর লাগেই না।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, দ্রব্যমূল্যের এই অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির পেছনে যেসব বিষয় ও ঘটনা প্রধান অনুঘটক হিসেবে ভূমিকা রেখে আমাদের সাধারণ সমগ্র জনজীবনকে বিপর্যস্ত করে ফেলেছে তার মধ্যে প্রধান কারণ হচ্ছে জগদ্দল পাথরের ন্যায় জাতির ঘাড়ে বর্তমান ভোটারবিহীন সরকারের লাগাতার দখলদারিত্ব। অবৈধ দখলদার সরকার রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে সমাজের সকল ক্রিয়াশীল অংশকে বিকল করে রেখেছে। যার ফলশ্রুতিতে সমাজে নিয়তই বেড়ে চলেছে ঘুষ, দুর্নীতি, টাকা পাচার, লুটপাট, চাঁদাবাজি, সিন্ডিকেট বাণিজ্য। ঠুটো জগন্নাথ পার্লামেন্ট কেবলই সরকারের ক্ষমতার একটি লেবাস। ফলে সরকারের নেই কোন জবাবদিহিতা জনগণের প্রতি নেই কোন দায়বদ্ধতা। আর এই জবাবদিহিতা বিহীন পরিস্থিতি নিশ্চিত করতেই দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে অন্যায় ভাবে কারাবন্দি করে রেখেছে এই স্বৈরাচারী সরকার।
তিনি বলেন, রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে দেশের ক্রিয়াশীল ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিচ্ছে সরকার। দ্রব্যমূল্যসহ জনজীবনের সকল স্বাভাবিক জীবনযাত্রাকে সহনীয় মাত্রায় রাখতে হলে আমাদের গড়ে তুলতে হবে একটি জবাবদিহিতা মূলক সরকার। দেশের স্বাধীনতা, সার্বোভৌমত্ব ও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা রক্ষা করার জন্য অবিলম্বে এই অবৈধ ভোটারবিহীন তথাকথিত নির্বাচনের ফলাফল বাতিল করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন করে তার পরিচালনায় সকল দলের অংশ গ্রহণে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে সরকারকে বাধ্য করতে হবে। অন্যথায় শুধু দ্রব্যমূল্য ভিত্তিক মানুষের দৈনিন্দন জীবনের সমস্যাই নয় জাতির গোটা ভবিষ্যত জীবন আরো অসহনীয় ও দুর্বিষহ হয়ে উঠবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন – বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, প্রচার সম্পাদক শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যনী, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মির সরাফত আলী সপু, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ প্রমুখ।