আইন মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, খালেদা জিয়া এতিমের টাকা চুরি করার কারণে প্রথমে বিচারিক আদালতে এবং পরে উচ্চ আদালতে দণ্ডিত হয়েছেন। আবার জিয়া অর্ফানেজ ট্রাস্টের টাকা আত্মসাত করার জন্য তিনি দণ্ডিত হয়েছেন। এখানে সরকারের প্রতিহিংসার কোন প্রশ্নই ওঠেনা। তার জামিনের বিষয়টিও আদালতের এখতিয়ারে। সরকারের এখানে হস্তক্ষেপ করার কোনো প্রশ্নই ওঠেনা। তিনি বলেন, বিএনপি আমলে আদালতকে যেভাবে নিজেদের পকেটে রাখা হতো সেই অবস্থা এখন আর নাই। বিচার বিভাগ এখন সম্পূর্ণ স্বাধীন। মঙ্গলবার ঢাকায় বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে জিপি (সরকারি কৌশুলী) এবং পিপিদের (পাবলিক প্রসিকিউটর) জন্য আয়োজিত ২১তম বিশেষ প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতা শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।
ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনাল আইন সংশোধনের বিষয়ে তিনি বলেন, জাতীয় সংসদের আগামী অধিবেশনে এই আইন সংশোধনের জন্য উত্থাপন করা হবে।
তিনি বলেন, বর্তমানে একজন যুগ্ম জেলা জজ ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালের বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। আইনটি সংশোধন হলে যুগ্ম জেলা জজের পাশাপাশি সিনিয়র সহকারী জজ ও সহকারী জজরাও এই মামলা গুলোর বিচার করতে পারবেন। এতে করে মামলা নিষ্পত্তির হার বাড়বে।
এর আগে অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, একসেস টু জাসটিসকে বিস্তৃত করার ক্ষেত্রে জিপি- পিপিগণকে সেবার মানসিকতা নিয়ে দায়িত্ব পালন করতে হবে। সর্ব অবস্থায় আদালতের নির্দেশনা পালন করে আদালতের মামলা ব্যবস্থাপনা প্রক্রিয়াকে সহায়তা করতে হবে। তিনি বলেন, প্রায়শই শুনা যায় কোন কোন জিপি-পিপি বিভিন্ন অজুহাতে আদালতে সময়ের দরখাস্ত দাখিল করে থাকেন যা মোটেই ঠিক না। বলেন, মামলা দ্রুত নিস্পত্তি করতে অবশ্যই আদালতের সময় ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত সকল নির্দেশনা মেনে চলতে হবে। আদালতে সঠিক সময়ে সাক্ষী হাজিরসহ নির্ধারিত তারিখে সাক্ষী পরীক্ষা করার ক্ষেত্রে সচেষ্ট হতে হবে। এক্ষেত্রে কোন ঢিলেঢালা বা গড়িমসি মনোভাব কাম্য নয়।
মামলার জট কমিয়ে আনার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার কতিপয় উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেওয়ানী কার্যবিধি এবং অর্থঋণ আদালত আইন সংশোধনের মাধ্যমে বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির বিধান অন্তর্ভুক্ত করে দ্রুত বিচার নিষ্পত্তির সহায়ক আইন করা হয়েছে। জিপি- পিপিদেরকে এ আইনের বিধানগুলো অনুসরণ করতে হবে এবং বিচারপ্রার্থী জনগণ সহ আইনজীবীগণকে এ বিষয়ে উৎসাহ প্রদান করতে হবে।
তিনি বলেন, সরকার সরকারি কৌশুলী এবং পাবলিক প্রসিকিউটরগণের সার্ভিসকে একটি সুনির্দিষ্ট আইনের আওতায় এনে যুগোযোযোগী করার কথা ভাবছে। খুব সহসাই সরকার এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনার আলোকে পদক্ষেপ গ্রহণ করব।
বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় আইন সচিব মো. গোলাম সারোয়ার বলেন, ন্যায়বিচার শুধু করলেই হবে না, সেটি অবশ্যই দৃশ্যমান হতে হবে। বর্তমানে প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে নতুন নতুন অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে। এ নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বিচারকদের পাশাপাশি সরকারি আইন কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে।
বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক বিচারপতি খোন্দকার মূসা খালেদ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।