শতাব্দী আলম: শেখ হাসিনা বিশে^র এক নম্বর নারী নেত্রী। শেখ হাসিনা বিশে^র সেরা প্রধানমন্ত্রী। শেখ হাসিনাই বিশে^র এক নম্বর মানবতাবাদী নেতা। একথা হলফ করে বলা যায় শেখ হাসিনাই বর্তমান বিশে^র সেরা সুদক্ষ সংগঠক। বাংলাদেশ এবং বিশে^র বাংলা ভাষাভাষি মানুষের গর্বের ঠিকানা শেখ হাসিনা।
ভবিষ্যতের নেতৃত্ব নিয়ে বলতে বর্তমান ছাড়াতো এগুনো যাবে না। তাই আওয়ামী লীগের বর্তমান নেতৃত্ব বলয় নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা। আওয়ামী লীগের বর্তমান অবস্থানে আসতে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে টানা দুই যুগ লাগলো। পথ কতটা বন্দুর ছিল ভয়াল ২১ আগষ্টের উদাহরণই তা বুঝাতে যথেষ্ট। এখন প্রত্যন্ত গ্রামের মানুষটির মুখেও উচ্চারিত হতে শুনা যায়, ‘যতদিন শেখ হাসিনার হাতে দেশ, পথ হারাবে না বাংলাদেশ’। শেখ হাসিনার দৃঢ় মনোবল এবং জাতির জন্য গভির ভালবাসার জোড়ই সবথেকে বড় শক্তি। একথা বিভিন্ন সময় তিনি নিজেই বলেন। সাম্প্রতিক রাজনীতি বিশ্লেষন করলে আরও একটি বিষয় সামনে আসে। তা হলো শেখ হাসিনার পরে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বেও কয়েক ডজন জনমুখী রাজনীতিবিদ। বর্তমানে দলীয় প্রধান হিসাবে শেখ হাসিনার বলয়ে একনিষ্ঠ এবং নিবেদিত প্রাণ নেতারা আছেন। নাম লিখতে গেলে বেশ দীর্ঘই হবে এই তালিকা। শেখ হাসিনার নেতৃত্বের কাছাকাছি থেকে, তাঁর কর্মকান্ড দেখে এবং তার দেখানো পথে হেটেই এইসব নেতা নিজেদের যোগ্যতা অর্জন করেছেন। এখানেই শেখ হাসিনা অনন্য সাংগঠনিক দক্ষতার নজির সৃষ্টি করেছেন। প্রিয় পাঠক আপনারাও অনেকে হয়ত আমার সাথে একমত হবেন ‘‘শেখ হাসিনা- আধুনিক বাংলাদেশের জনক’’ হিসেবে ইতিহাসে স্মরণীয় হবেন। প্রকৃতির অমোঘ নিয়মেই ভবিষ্যতের রাজনীতি নিয়ে ভাবতে হবে। নেতৃত্বের এই বলিষ্ঠ ধারা অব্যাহত রাখাই আওয়ামী লীগের সবথেকে বড় চ্যালেঞ্জ। পাশাপাশি নেতৃত্ব বলয়।
লক্ষণীয় হচ্ছে অত্যন্ত দক্ষতার সাথে শেখ হাসিনা পরবর্তি প্রজন্মের নেতা সজিব ওয়াজেদ জয়কে দীক্ষা দিচ্ছেন। জয় দীর্ঘদিন যাবৎ দলের তৃণমূল কর্মকান্ডে সম্পৃক্ত। উপদেষ্টা হিসাবেও মর্যাদার সাথে নিজের যোগ্যতার সক্ষর রাখছেন। আমি মনে করি, সজিব ওয়াজেদ জয়ই আওয়ামী লীগের পরবর্তি নেতৃত্বের জন্য উপযুক্ত ব্যক্তি। বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ট সহচর এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক হিসাবে যারা ছিলেন সেইসব মহান নেতৃবৃন্দ এখনো আওয়ামী লীগ সভাপতির ভরসার কেন্দ্রস্থল। আজ যারা শেখ হাসিনার নেতৃত্ব বলয়ে তারাও পরবর্তি প্রজন্মের নেতাকে ঠিক একইভাবে সাহচার্য দিবেন। পথ দেখাবেন।
আওয়ামী লীগের অংগ সংগঠনের সম্মেলন হয়েছে। ছাত্রলীগ, যুবলীগ, কৃষকলীগ, তাতীলীগ, মৎসজীবি লীগ, শ্রমীক লীগ, মহিলা আওয়ামীলীগ প্রতিটি সংগঠনে তুলনামূলক স্বচ্ছ ভাবমূর্তির ব্যক্তিদের নেতৃত্বে আনা হয়েছে। নেতৃত্বে দূর্বৃত্ত্বায়ন এবং শুদ্ধি অভিযান নিয়ে নতুন করে আর বলার কিছু নেই। দূর্ণীতি সন্ত্রাস এবং মাদকের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনা জিরো টলারেন্স নীতিতে অটল। নিজ দলের নেতাদের শাস্তির আওতায় এনেছেন। একইসাথে নতুন নেতৃত্বে স্বচ্ছ ভাবমুর্তির মানুষ নির্বাচিত করায় ভবিষ্যৎ রাজনীতি আরও বেশী সুষ্ঠু ও জনমুখি হবে। আওয়ামী লীগের কাউন্সিলেও পরবর্তী প্রজন্মের নেতৃত্ব বলয়কে আরও বলিষ্ঠ করার এখনই সময়। বিশ^বিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র নেতা এবং জেলা গুলো থেকে তরুণ প্রজন্মের স্বচ্ছ ও ত্যাগীদের কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে আরো বেশী বেশী সম্পৃক্ত করা উচিত।
যদি সজিব ওয়াজেদ জয়কে নেতা মানি তাহলে তার বলয় কেন্দ্র করে এখন থেকেই দল সাজানো উচিত। ইতমধ্যেই ব্যরিষ্টার মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, এনামুল হক শামিম, সুজিত রায় নন্দীসহ একঝাক তরুণ নেতা কেন্দ্রীয় কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করছেন। আমি গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে নৌকা মার্কার মিডিয়া কো অর্ডিনেটর হিসাবে দায়িত্ব পালনকালে এসব নেতাদের সাথে কাজ করার সৌভাগ্য হয়েছে। তাদের সাথে কাজ করে আমার তখনই মনে বদ্ধমূল বিশ^াস জন্মেছে এই আওয়ামী লীগ অদূর ভবিষ্যতে অনেক দিন বাংলাদেশের পতাকা বহন করবে। বিশেষভাবে একজনের কথা বলতেই হবে, তিনি নওফেল ভাই। একজন কুশলী নির্বাচন বিশেষজ্ঞ। উদারনৈতিক রাজনীতিবিদ। একইসাথে দুরদৃষ্টিসম্পন্ন।
আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব ঘিরে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এমন রাজনীতিকদের তুলে আনতে হবে। আমি ঢাকার মানুষ হলেও বর্তমানে গাজীপুরে বসবাস। রাজনীতি এবং ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব নিয়ে যখনই ভাবি প্রথমেই গাজীপুর সিটির মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের কথা মনে আসে। সৎ, নির্লোভ, কর্মঠ, দানবীর, শিক্ষানুরাগী, কর্মীবান্ধব এবং স্বপ্নবাজ মানুষ। দেশে ডেঙ্গু জ¦র ও এডিস মশা নিয়ে যখন চারিদিকে চরম আতঙ্ক। তখন তিনি দ্রুত সিঙ্গাপুর থেকে ঔষধ এনে সারাদেশে দিয়েছেন। রোহিঙ্গাদের সাহায্যে দিয়েছেন কয়েক’শ টন খাদ্য দ্রব্য। জাতীয় রাজনীতিবিদ হয়ে উঠার মত সব গুনই তার মাঝে আছে। শেখ হাসিনা এমনি এমনিইতো তাকে নিজের হাতে রোপণ করা চারাগাছের সাথে তুলনা করেননি। জয়ের নেতৃত্ব বলয়ে জাহাঙ্গীরের মত তরুণ প্রজন্মের নেতাদের কেন্দ্রের সাথে সম্পৃক্ততা জরুরী। নওফেল বা জাহাঙ্গীরের মত কুশলী সংগঠক যখন ভবিষ্যৎ আওয়ামী লীগ নেতৃত্বের বলয়ে থাকবে তখন তা চারটি স্তম্ভের মত হবে। দেশের রাজনীতির জন্যও তা মঙ্গলজনক।
সম্মানিত পাঠক, বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে লিখলে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম আসবেই। তবে শেখ হাসিনা নিজেকে এমন উচ্চতায় প্রতিষ্ঠিত করেছেন যেখান থেকে অদুর ভবিষ্যতে বিশ^ রাজনীতিতে আলাদাভাবে শেখ হাসিনার নাম উচ্চারিত হবে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশকে আরও বহুদূর যেতে হবে। শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ দেশেকে এগিয়ে নিচ্ছে। ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব এবং রাজনীতি এই ধারা অব্যহত রাখতে পারলে অর্জিত হবে অভিষ্ট লক্ষ্য। জয় এবং বিজয় অবশ্যম্ভাবী।
শতাব্দী আলম
সাংবাদিক ও সাহিত্যিক
০১/১২/২০১৯