সবাইকে কাঁদিয়ে শেষ বিদায় নিল শাহজাহানপুরের সেই জিহাদ। ৪০০ ফুট গভীর পাইপে আটকে থাকার পর শনিবার বিকাল ৩ টার দিকে উদ্ধারকৃত মৃত জিহাদের লাশ আজসন্ধ্যা ৬টায় শরীয়তপুরের গোসাইরহাটের পূর্বেরচর গ্রামে দাদা বাড়ির পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। এর আগে, নাগেরপাড়া বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে শিশু জিহাদের জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়।
ঢাকা থেকে একটি অ্যাম্বুলেন্সে জিহাদের মরদেহ বিকাল ৫টায় নাগেরপাড়া বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে পৌঁছে। শিশু জিহাদকে শেষবারের মতো দেখার জন্য সেখানে কয়েক হাজার মানুষ অপেক্ষা করেন। মরদেহ পৌঁছার পর শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক রাম চন্দ্র দাস জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দাফন কাফনের জন্য জিহাদের বাবা নাসির ফকিরকে ২০ হাজার টাকা দেন। এ সময় গোসাইরহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুন্নাহার, এএসপি সুমন দেব, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সোহাগ হাওলাদার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আসর নামাজের পর জানাজা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও মরদেহ আসতে দেরি হওয়ায় বিকাল সাড়ে ৫টায় নাগেরপাড়া বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে শিশু জিহাদের জানাজার নামাজ হয়। জানাজা শেষে সন্ধ্যা ৬টায় জিহাদকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
জিহাদের দাদা আজিজ ফকির বলেন, ‘জিহাদ আমাদের সকলের খুব প্রিয় ছিল। প্রায় মোবাইল ফোনে ঢাকা বেড়াতে যেতে বলতো। মানুষের এমন উদাসীনতা ও অসর্তকতায় আর যেন কারও স্বজনকে না হারাতে হয়। আমরা তার মৃত্যুর ঘটনার বিচার চাই।’
শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক রাম চন্দ্র দাস বলেন, ‘শিশু জিহাদের দাফন কাফনের জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২০ হাজার টাকা সহায়তা দেয়া হয়েছে।
নাগেরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান এনায়েত করিম বলেন, ‘জিহাদের এমন করুণ মৃত্যুতে এলাকার সব মানুষ শোকে কাতর। রেলওয়ে কর্মকর্তা ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের উদাসীনতায় আমরা ক্ষুব্ধ। জিহাদের এ করুণ পরিণতির জন্য যারা দায়ী, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত।’
গত শুক্রবার বিকেল চারটার দিকে অন্য শিশুদের সঙ্গে বাসার পাশেই রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত পানির পাম্পের কাছে খেলতে গিয়ে দেড় ফুট ব্যাসের ৪০০ ফুট গভীর পাইপে পড়ে যায় জিহাদ। ফায়ার সার্ভিসের দীর্ঘ ২৩ ঘণ্টার শ্বাসরুদ্ধকর অভিযানে শিশু জিহাদকে উদ্ধার করা যায়নি। শেষ পর্যন্ত গতকাল শনিবার বেলা তিনটার দিকে একদল উদ্যমী তরুণের চেষ্টায় জিহাদকে উদ্ধার করা হয়। হাসপাতালে নেওয়ার পরে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।