শতাব্দী আলম: গাজীপুরে আওয়ামী লীগ প্রতিনিধি সভা প্রাণবন্ত নেতকর্মীদের মিলন মেলা বসেছিল। ১৯ নভেম্বর নগরের ঐতিহাসিক শহীদ বরকত স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়েছে ২০১৯ সালের প্রতিনিধি সভা। মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিটি করপোরেশণের মেয়র আলহাজ¦ এ্যাডভোকেট মোঃ জাহাঙ্গীর আলমের প্রাণবন্ত সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সড়ক যোগাযোগ ও সেতুমন্ত্রী মোঃ ওবায়দুল কাদের এমপি।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আ ক ম মোজাম্মেল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের শুরুতেই তিনি শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন। মন্ত্রী জেলা ও মহানগরের সকল প্রতিনিধিদের উদ্দেশ্যে দিক নির্দেশনা মূলক বক্তব্য রাখেন।
প্রধান অতিথি ওবায়দুল কাদের বলেন, এই গাজীপুর থেকে সূচিত হয়েছিল বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ। শহিদ তাজউদ্দিন. ময়েজ উদ্দিন, আহসান উল্লাহ মাষ্টারের স্মৃতি বিজরিত এই গাজীপুর। এই গাজীপুর আওয়ামী লীগের দূর্জয় ঘাটি, দূর্ভেদ্য ঘাটি।
প্রধান অতিথি আরও বলেন, এই প্রতিনিধি সভা এত স্বতস্ফুর্ত এবং এত উপস্থিতি আমাদেরকে অভিভুত করেছে।
এর পূর্বে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দদের উদ্দেশ্যে মেয়র বলেন, আমরা গাজীপুর আওয়ামী লীগকে সুসংগঠিত ও সুন্দর করে সাজাতে চাই। আমরা আপনাদের দুয়া চাই সহযোগীতা চাই। কোন লুটকারী, কোন অন্যায়কারী কোনভাবে আশ্রয় প্রশ্রয় পাবে না। তিনি প্রধান অতিথির কাছে জয়দেবপুরে একটি ফ্লাইওভার নির্মাণের দাবি করেন।
বিশেষ অতিথি যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক তার বক্তব্যে তৃণমুল নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন করার কথা বলেন।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক আব্দুর রহমান বলেন, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে গাজীপুর আওয়ামী লীগের উদাহরণ দিয়ে থাকি। এই প্রতিনিধি সভার শৃঙ্খলা অন্যদের জন্য অনুকরনীয় দৃষ্টান্ত।
কেন্দ্রীয় ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক শ্রী সুজিত রায় নন্দী বলেন, আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ। মানবতার মা জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী রাখতে সকলকে একসাথে কাজ করতে হবে।
প্রতিনিধি সভায় জেলা, মহানগর, ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, উপজেলা, পৌরসভা আওয়ামী লীগ কমিটির কার্যকরী পরিষদের সদস্যরা অংশগ্রহন করে। ২ টায় নির্ধারিত সভার সময় হলেও বেলা ১১ টা বাজতেই নগরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নেতা কর্মীরা আসতে শুরু করে। ২ টার পূর্বে ২০ হাজার নির্ধারিত আসন কানায় কানায় পূর্ণ। প্রত্যেক নেতাকর্মীরা অত্যন্ত আদবের সাথে ছিল।
প্রতিনিধি সভা হলেও বিকেলে তা জনসমাবেশে পরিণত হয়। মহানগরের আওয়ামী লীগ ও অংগ সংগঠনের সব স্তরের নেতা কর্মীর ঠিকানা তখন শহীদ বরকত স্টেডিয়াম। স্টেডিয়ামের গ্যালারীসহ সম্পূর্ণ মাঠই ততক্ষণে লোকে লোকারণ্য। কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের বক্তব্যে বার বারই এমন সুন্দর ও সুশৃঙ্খল সভা আয়োজনের জন্য গাজীপুর নেতৃবৃন্দের প্রশংসা উচ্চারিত হয়েছে।
৫৪ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা ও হাজী কসিম উদ্দিন পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ এম এম হেলাল উদ্দিন প্রতিনিধি হিসাবে বেলা ১২ টায় সভাস্থলে ছিলেন। আঞ্চলিক ও কেন্দ্রীয় সব নেতাকে কাছে পেয়ে তার চোখে মুখে ছিল অপার আনন্দের ঝিলিক। গাজীপুর সদরের বাসিন্দা আইনজীবি জাকির হোসেন বলেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে ছোট খাট সভা সমাবেশ হলেও সেখানে কোন না কোন অপ্রতিকর পরিবেশ সৃষ্টি হয়। কিন্তু গাজীপুরে আজকের সভা সত্যিকারভাবেই শৃঙ্খলার ঐতিহাসিক নজির সৃষ্টি করেছে। তার ভাষ্যমতে মহানগর সাধারন সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এমন সম্ভব হয়েছে। আর অভিভাবক হিসাবে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী ও মহানগর সভাপতি আজতম উল্লাহ খান সার্বক্ষণিক পাশে ছিলেন।
গভায় অন্যান্যের মধ্যে সাংগঠনিক সম্পাদক ও শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিষ্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, যুব ও ক্রিড়া প্রতিমন্ত্রী মোঃ জাহিদ আহসান রাসেল, সিমিন হোসেন রিমি এমপি, মেহের আফরোজ চুমকি এমপি, ইকবাল হোসেন সবুজ এমপি, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য মোঃ আক্তারুজ্জামান, কেন্দ্রীয় সদস্য ও মহানগর সভাপতি আজমত উল্লাহ খান বক্তব্য রাখেন।
তাছাড়া কেন্দ্রীয় সদস্য গোলাম কবির রব্বানী (চিনু), আনোয়ার হোসেন, আমিনুল ইসলাম, সাবেক এমপি কাজী মোজাম্মেল হক, টঙ্গী থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ ফজলুল হকসহ মহানগর ও জেলার সকল নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।