সকালে ‘অনুপ্রবেশ’ করে বিকেলে সভাপতি!

Slider জাতীয় রাজনীতি


কক্সবাজার: আওয়ামী লীগের চলমান তৃণমূল সম্মেলনে কক্সবাজার মহেশখালীতে ঘটেছে বিস্ময়কর ঘটনা। সকালে আওয়ামী লীগে নাম লিখিয়ে বিকালেই তিনি হয়ে গেছেন ওয়ার্ড কমিটির সভাপতি। ফেরদৌস ওয়াহিদ শামীম নামের জামায়াত-শিবির পরিবারের এ ‘কীর্তিমান’ সন্তান নিয়ে স্থানীয়ভাবে চলছে সরস আলোচনা। মহেশখালী দ্বীপের হোয়ানক ইউনিয়নে ৭ নম্বর ওয়ার্ডে রবিবার এ কমিটি গঠন করা হয়।

সূত্র জানায়, দুর্ধর্ষ শিবির ক্যাডার আকতার হামিদ ছিলেন জামায়াতের প্রয়াত আমীর অধ্যাপক গোলাম আযমের দেহরক্ষী। আকতার হামিদ ৩৫ টি মামলার পলাতক আসামি। ৩০ বছরের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত হামিদের চাচাতো ভাই নব্য আওয়ামী লীগ নেতা ফেরদৌস ওয়াহিদ শামীম। নির্বাচিত সভাপতি শামীমসহ পরিবারের সদস্য ও আত্মীয় মিলে রবিবার সকালে ৬৪ জন আওয়ামী লীগের কাউন্সিলর হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। আলোচিত ওয়ার্ডটিতে কাউন্সিলরের সংখ্যা ১৫১ জন হলেও পরে তা বাড়িয়ে ২১৫ জন করা হয়। এদিন কাউন্সিলর হওয়া বেশির ভাগই আগে দলের সাথে যুক্ত ছিলেন না বলে অভিযোগ রয়েছে। পারিবারিক প্রভাব বজায় রাখতে তারা আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছেন।

মহেশখালী দ্বীপের হোয়ানক ইউনিয়নের অধিকাংশ বাসিন্দা ‘জামায়াত ঘেষা’ বলে পরিচিতি আছে। ৩০ অক্টোবর এই ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডে ‘কৌশলী’ নির্বাচনের মাধ্যমে এক রাজাকার পুত্রকে ওয়ার্ড সভাপতি ও বিএনপি পরিবারের সন্তানকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়। আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে ভোট কেন্দ্র ঘিরে রাখছে জামায়াত-শিবির পরিবারের সদস্যরা। তারা প্রভাব খাটিয়ে পদ দখল করে নিচ্ছে তৃণমূল কমিটিতে।

কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান এ বিষয়ে বলেন, ‘দলে কৌশলী নির্বাচনের মাধ্যমে অনুপ্রবেশ করা জামায়াত-শিবির, বিএনপি ও ইয়াবা কারবারিদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যে যেসব লোকজন দলে ঢুকে পড়েছে তাদের কমিটিও বাতিল করার পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।’

হোয়ানক ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক জাফর আলম জফুর বলেন, ‘ আমার ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডটিতে জামায়াত-শিবির পরিবারের প্রভাব আছে। যিনি সভাপতি হয়েছেন তাকে দলে নতুন তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। তিনি নির্বাচন করবেন না বলে কথা হয়েছিল। কিন্তু আকস্মিক প্রার্থী হওয়ায় আর কিছুই করার ছিলনা।’

মহেশখালী থানার ওসি প্রভাষ চন্দ্র ধর বলেন, ‘ হোয়ানক ইউপির ৭ নম্বর ওয়ার্ডে নির্বাচিত সভাপতি জামায়াত পরিবারের সন্তান। শামীমের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা রয়েছে। তার পিতা মোহাম্মদ ফেরদৌসের নামেও হত্যা, অপহরণ, মারামারিসহ অর্ধ ডজন মামলা রয়েছে। গোলাম আযমের দেহরক্ষী হিসাবে পরিচিত আকতার হামিদ এ পরিবারেরই সন্তান।’

নব নির্বাচিত সভাপতি ফেরদৌস ওয়াহিদ শামীম সকল অভিযোগকে মিথ্যা দাবি করেছেন। তিনি বলেন,’ আমার ও পরিবারের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ সত্য নয়।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *