পিয়াজের বিকল্প হতে পারে চিভ

Slider কৃষি, পরিবেশ ও প্রকৃতি জাতীয়


গাজীপুর| ভারত থেকে রপ্তানি বন্ধ হওয়ার পর থেকে পিয়াজের দাম বেড়েই চলেছে। দফায় দফায় দাম কয়েকগুণ বেড়ে ২৪০ থেকে ২৮০ টাকা কেজি পর্যন্ত ওঠেছে। পিয়াজের দাম যখন লাগামহীন, তখন এর বিকল্প হিসেবে চিভ নামে পাতাজাতীয় এক ধরনের মসলা ব্যবহারের কথা ওঠে আসছে। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীদের উদ্ভাবিত এই মসলা জাতীয় ফসল নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে। সারা বছর ধরেই এটি চাষাবাদ ও ব্যবহার করা যাবে। আর তাতে করে পিয়াজের ওপরও চাপ কমে যাওয়ার সম্ভবণা রয়েছে।

গাজীপুর অবস্থিত বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট এর মসলা গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মু. শহীদুজ্জামান চিভ সম্পর্কে বলছেন, এর স্বাদ পুরোপুরি না হলেও অনেকটা পিয়াজের মতো। তবে এটিতে পিয়াজের মতো গুটি বা দানা হয় না। শুধু পাতা জাতীয় ফসল।
মাটির ওপরের অংশই খাওয়া যায়। এর চারা লাগানোর ৬৫-৭০ দিনের মধ্যে ফসল সংগ্রহ শুরু হয়। বছরে ৪-৫ বার তা উত্তোলন করা সম্ভব। এর পাতা, কাণ্ড ও কাঁচা ফুল মসলা হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এ মসলার চাষযোগ্য উচ্চফলনশীল জাত বারি চিভ-১ জাত ইতিমধ্যেই অবমুক্ত করা হয়েছে।

মশলা বিভাগের অপর একজন বিজ্ঞানী ড. রুম্মান আরা জানান, তিনি নিজেও এটি তরকারীতে ব্যবহার করেছেন। এর স্বাদ ও গন্ধ অনেকটা পিয়াজ ও রসুনের মতো। এর অনেক গুণাগুণ আছে। স্যুপ, সালাদ, তরকারি ও চাইনিজ এর ভেজিটেবল আইটেমে এটি ব্যবহার করা যায়।

এটি এখন একটা সম্প্রসারণ পর্যায়ে রয়েছে। খুবই সহজে এবং তুলনামূলক কম খরচে এটি চাষাবাদের যোগ্য। একবার পাতা-কাণ্ড কেটে নিলে আবার গজায়। বাড়ির আঙিনায় বা টবেও চাষ করা যায়। দেশের সব অঞ্চলের উঁচু জায়গায় এটি চাষাবাদ সম্ভব বলে জানান প্রতিষ্ঠানটির মহাপরিচালক ড. আবুল কালাম আযাদ।

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট এর মহাপরিচালক ড. আবুল কালাম আযাদ বলেন, পিয়াজের বিকল্প হিসেবে এই চিভস জাতের অবমুক্ত করা হয়েছে ২০১৭ সালে। এটা ব্যবহার করে পিয়াজের চাহিদা অনেকটা কমানো সম্ভব। এর উৎপাদনও অনেক সহজ। চিভের গুণাগুণ হলো, এটা হজমে সাহায্য করে এবং বিভিন্ন রোগ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। এছাড়া এতে ক্যান্সার প্রতিরোধী গুণাগুণ রয়েছে। এতে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, ভিটামিন বি-১, ভিটামিন বি-২, নায়াসিন, ক্যারোটিন ও খনিজ উপাদান। এর পাতা লিনিয়ার আকৃতির, ফ্লাট, কিনারা মসৃণ, বাল্ব লম্বাটে। এটি সাধারণত উৎপাদিত হয়ে থাকে সাইবেরিয়া-মঙ্গোলিয়া ও নর্থ-চায়না অঞ্চলে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *