ঢাকা: নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের ৭১তম জন্মদিন ছিল গতকাল বুধবার। নানা আয়োজনে রাজধানী, গাজীপুর, নেত্রকোনা ও ময়মনসিংহের গৌরীপুরে উদযাপন করা হয় দিনটি।
প্রয়াত এই কথাসাহিত্যিকের জন্মদিনে তার সাবেক স্ত্রী গুলতেকিন খানের বিয়ের খবর ভাইরাল হয়েছে।
জাতীয় একটি দৈনিকে ‘অবশেষে বিয়ে করলেন গুলতেকিন’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সেটি ভাইরাল হয়ে যায়।
থাইল্যান্ডে বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তা শাহনাজ গাজী প্রতিবেদনটি শেয়ার করে কবি গুলতেকিনকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন।
কেউ কেউ বলছেন, শেষ পর্যন্ত তিনি (গুলতেকিন) সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তবে আরও আগেই বিয়ের সিদ্ধান্ত নিলে ভালো হতো।
অনেকেই বলেছেন, আমাদের সমাজে জীবনের এই পর্যায়ে এটা করতে যথেষ্ট সাহসের প্রয়োজন। এটা অনেককে উৎসাহ যোগাবে।
একটি সূত্রের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, ‘কবি গুলতেকিন খান বিয়ে করেছেন অতিরিক্ত সচিব ও কবি আফতাব আহমেদকে। দুই সপ্তাহ আগে ঢাকায় ছোট পরিসরে গুলতেকিনের বাসায় তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়।
বিয়ের পর গুলতেকিন আমেরিকায় চলে গেছেন। দুই সপ্তাহ পর ফিরে বন্ধু-বান্ধব সবাইকে আমন্ত্রণ জানিয়ে বিবাহোত্তর সংবর্ধনা অনুষ্ঠান করবেন। গুলতেকিন জনপ্রিয় লেখক হুমায়ূন আহমেদের প্রথম স্ত্রী ছিলেন।
বিয়ের পর তার নাম হয়ে যায় গুলতেকিন আহমেদ। হুমায়ূন শাওনকে বিয়ে করার আগে তাদের মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটে। তারপর সন্তানদের নিয়েই জীবন কাটছিল গুলতেকিনের। কখনও আমেরিকা কখনো ঢাকায়। নিয়মিত কবিতাও লিখছিলেন।
গত ৭/৮ বছর ধরে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ে অতিরিক্ত সচিব কবি আফতাব আহমেদের সঙ্গে তার বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। বন্ধুত্ব ধীরে ধীরে গভীর সখ্যতা থেকে প্রেমে গড়ায়। নিয়মিত সন্তানদের নিয়েও আফতাব আহমেদের সঙ্গে তার সুন্দর সময় কাটতে থাকে।
আফতাব আহমেদ তার ব্যারিস্টার স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদ ঘটান ১০ বছর আগে। তার একমাত্র সন্তান লন্ডনে লেখাপড়া করছেন।
২৫ অক্টোবর গুলতেকিন তার ফেসবুক পেজে যৌথ ঘোষণা শিরোনামে ‘এবার বাতাস উঠুক তুফান ছুটুক’ স্ট্যাটাস দেন।
এতে তার প্রিয়জনরা তাকে অভিনন্দিত করেন এবং তার ভালোবাসাময় জীবনের শুভ কামনা করে অসংখ্য মন্তব্য করেন।
এদিকে ৫ নভেম্বর আফতাব আহমেদ তার ফেসবুকে ইংরেজিতে যে স্ট্যাটাস দেন তার অর্থ হলো- ‘তিনি আমাকে তার সামনে বসালেন এবং আমার হাতে হাত রেখে বললেন’, ‘প্রত্যেকেরই মৃত্যুর স্বাদ পেতে হবে। কিন্তু আমি তোমাকে ছেড়ে যেতে চাই না। আমি নিঃশ্বাস নিতে চাই। তবে নিশ্চিত নই ভবিষ্যৎ কোন নিয়তিতে গাঁথা।’
আফতাব আহমেদ জবাবে বললেন, আমি চেষ্টা করব তোমাকে বাঁচাতে কিন্তু তোমাকে বিয়ে করা ছাড়া এটা আমার পক্ষে সম্ভব নয়।’
এ সময় একটু বিরতি নিয়ে গুলতেকিন বললেন, তুমি কি আমাকে বিয়ে করবে? এবং আমি অনুমান করতে পারি, আমরা দুজনেই কোনো কারণ ছাড়া এক সঙ্গে হতে পারব না।
নিউইয়র্ক থেকে সূত্র জানায় তার পারিবারিক নিকট আত্মীয়াকে গুলতেকিন বলেছেন, আফতাব আহমেদ মনের দিক থেকে একজন সুন্দর মানুষ, তার মানবিক মন তাকে জয় করেছে।
১৯৭৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়নের তরুণ শিক্ষক হুমায়ূন আহমেদকে কিশোরী গুলতেকিন প্রেমে পড়ে বিয়ে করেছিলেন। তাদের বিচ্ছেদ হয় ২০০৩ সালে। তাদের ঘরে এক পুত্রসহ তিন কন্যা সন্তান রয়েছেন।
২০১২ সালে হুমায়ূন আহমেদ তুমুল জনপ্রিয়তা নিয়ে ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াই করে ইন্তেকাল করেন। ২০০৫ সালে শাওনকে হুমায়ূন বিয়ে করলেও গুলতেকিন আর বিয়ে করেননি। গুলতেকিন খানের বয়স এখন ৫৬ বছর। নিয়মিত কবিতা লেখায় মনোযোগী। গুলতেকিনের কাব্যগ্রন্থ চৌকাঠ প্রকাশিত হয়েছে।’