ফরেনসিক রিপোর্টে হ্যাপির দৈহিক সম্পর্কের প্রমাণ মিলেছে। তিন পৃষ্ঠার ফরেনসিক রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, একজনের সঙ্গে হ্যাপির দৈহিক সম্পর্ক হয়েছে। তবে সেই সম্পর্ক রুবেলের সঙ্গেই হয়েছে কিনা, তা প্রমাণ করতে তারও (রুবেল) ডিএনএ পরীক্ষা করতে হবে।
রোববার মিরপুর থানা পুলিশ অভিনেত্রী নাজনীন আক্তার হ্যাপির ফরেনসিক রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। রিপোর্টে এসব তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে বলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মাসুদ পারভেজ ও হ্যাপি নিজেই নিশ্চিত করেছেন।
গত বুধবার ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগ হ্যাপির পুর্ণাঙ্গ ফরেনসিক প্রতিবেদন মিরপুর থানায় পাঠায়। তদন্ত কর্মকর্তা মাসুদ পারভেজ ছুটিতে থাকায় এসআই আল মামুন ওইদিন প্রতিবেদনের নোট প্রকাশ করেছিলেন। তাই রোববার পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট প্রকাশ করলো মিরপুর থানা পুলিশ।
পূর্নাঙ্গ রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর হ্যাপি জানান, ‘আমি তিন পৃষ্ঠার ফরেনসিক রিপোর্টের কপি হাতে পেয়েছি। প্রথম পৃষ্ঠায় হ্যাপির শারীরিক সম্পর্ক একজনের সঙ্গেই হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু কার সঙ্গে হয়েছে তা উল্লেখ করা নেই। এটি প্রমাণ করতে হলে রুবেলের ডিএনএ টেস্ট করতে হবে। তাই আগামী ১১ জানুয়ারি রুবেলের ডিএনএ পরীক্ষার জন্য আদালতে আবেদন করবেন বলে তিনি জানান।
হ্যাপি জানান, রিপোর্টের দ্বিতীয় পৃষ্ঠায় তার চুলের রং, শরীরের কোথায় তিল আছে, রক্তের গ্রুপ ও বয়স ১৮ বছর ১০ মাস উল্লেখ আছে। শেষ পৃষ্ঠায় উল্লেখ করা হয়েছে, ‘দ্যা ভিকটিম হ্যাজ নো ফাউন্ড রিসেন্টলি সেক্সচুয়াল ইন্টারকোর্স অন হার বডি।’
হ্যাপি বলেন, অনেক মিডিয়া পুর্নাঙ্গ রিপোর্ট না জেনেই ঢালাওভাবে মনগড়া রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। আসল বিষয় না জেনে রিপোর্ট প্রকাশ করা কতটুকু নৈতিক তা হয়তো ওই গণমাধ্যমগুলোর জানা নেই। একাধিক পুরুষের সঙ্গে তার শারীরিক সম্পর্ক হয়েছে বলে কোনো কোনো পত্রিকা লিখেছে। কিন্তু ফরেনসিক রিপোর্টের কোথাও এমন তথ্য উল্লেখ নেই। তাই গণমাধ্যমগুলোর প্রকাশিত খবর মিথ্যা বলে প্রমাণ হয়েছে বলে তিনি জানান।
তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মাসুদ বলেন, ‘এখনই কোনো চার্জশিট দেওয়া হবে না। আরো অনেক বিষয় আছে, যা তদন্ত করতে হবে। আমি ছুটিতে থাকায় তদন্ত কাজ পিছিয়ে গেছে। তাছাড়া ৬০ কার্যদিবসের মধ্যে আদালতে চার্জশিট দাখিল করার নির্দেশনা রয়েছে। তাই ৬০ দিনের মধ্যেই তিনি আদালতে চার্জশিট দাখিল করতে পারবেন বলে তিনি জানান।’
তিনি বলেন, ‘হ্যাপি কিছু আলামত জমা দিয়েছেন। সেগুলোর কেমিক্যাল রিপোর্টের প্রয়োজন রয়েছে। সেগুলো পরীক্ষার জন্য আদালতে আবেদন করা হবে। আদালত অনুমোদন দিলে আলামতগুলোর ক্যামিক্যাল রিপোর্ট করানো হবে। হ্যাপি আবার রুবেলের ডিএনএ টেস্টের আবেদন করলে তারও রিপোর্ট হাতে পেতে হবে। সবমিলিয়েই সময় লাগবে।’
গত ১৩ ডিসেম্বর বিকেলে চলচ্চিত্র অভিনেত্রী নাজনীন আক্তার হ্যাপি জাতীয় ক্রিকেট দলের পেসার রুবেল হোসেনের বিরুদ্ধে মিরপুর থানায় ধর্ষণ মামলা করেন। হ্যাপিকে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর পাঠানো হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগে। ফরেনসিক পরীক্ষা শেষে মিরপুর থানায় তাকে মামলাসংক্রান্ত জিজ্ঞাসাবাদ করে তাকে বাসায় পাঠানো হয়।
রুবেল হোসেনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়না জারির পর তিনি চার সপ্তাহের আগাম জামিনে রয়েছেন।