আনজুম সানি
ব্যস্ত নগরী। ধুলোময় ফুটপাত। চারপাশে কোলাহল। আকাশবিদারী গাড়ির হর্ন। হকারগুলো পণ্যের রকমারি গুণাগুণ ব্যাখ্যায় ব্যস্ত। ফুটপাত ধরে হেটে যাচ্ছে একটা মেয়ে। আজ তার ব্যাগ ছিনতাই গেছে। হাতে থাকা বইয়ের ভাজে শুধু দশ টাকার একটা নোট আছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছে, হলে থাকে। একটা টিউশনি করে। মা তাঁতে কাপড় বোনে টাকা পাঠায়। বাবা যে কবে মারা গেছেন তা আর মনে পড়ে না, ঝাপসা সে স্মৃতি।
মিঠি প্রতিদিন ভোরে একটা কাজ করে। তা হল নিজেকে চিঠি লেখে। তারপর সবুজ বেলুনে বেধেঁ উড়িয়ে দেয় আকাশে। এটা করার পর মনটা হালকা হয় যেনবা ফুঁ দিলেই তুলোর মত উড়বে। মন হালকা করারও দরকার আছে।
মাঝে মাঝে বুকের ভেতর একটা নদী কলকলিয়ে বয়। কখনও সেখানে জোরে হাওয়া বয়। আজও হচ্ছে। এখন মিঠির ক্লাসে যাবার সময়। কিন্তু খুব মনে পড়ছে রিমনের কথা। রিমন তার ডিপার্টমেন্টেই স্নাতক শেষ করেছে এ বছর। ছেলেটাকে সে ভালবাসে কিনা জানে না। রিমনের মুখটা দেখলে ওর কেমন যেন একটা তৃপ্তি হয়।
বড় রাস্তার মোড়ে ফুলের দোকান। মিঠি দশটাকায় একটা গোলাপের কুড়ি কিনল। মনটা কেমন হয়ে গেল যেন।
আজ আর ক্লাসে যাওয়া হল না। এখন বিকেল।পাখিরা নীড়ে ফিরছে।ফুলটা নেতিয়ে গেছে। মিঠি হলের পথে পা বাড়াল। পরদিন ভোরে সে রিমনকে একটা চিঠি লিখল- ‘ভালবাসি আপনাকে, অনেক অনেক ভালবাসি…’
চিঠিটা একটা নীল বেলুনে বেঁধে দিল। সাথে সেই ফুলটাও। আর স্বগতোক্তি করল, “সবার সব সাধ থাকতে নেই।-আনজুম সানি