মোঃ জাকারিয়া: বোঝাপড়া না করে কাজ শুরু করার অপরাধে আনোয়ারা উপজেলায় অবস্থিত কেইপিজেডে চলমান গ্যাসের পাইপ লাইন নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় শওকত ওসমান ও শরীফ সিদ্দিকী নামের দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে। কাজ চলাকালে সাইটে গিয়ে কাজ বন্ধ রাখার জন্য কর্মরত শ্রমিকদের নির্দেশ দেন, অন্যাথায় পিটিয়ে হত্যা করার হুমকিরও অভিযোগ রয়েছে।
মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) নিরাপত্তা চেয়ে কর্ণফুলী থানায় জিডি করেছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি একেএম অলিউল্লা হক।
থানায় করা অভিযোগে বলা হয়, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স এ. ছালাম এন্ড এ্যাসোসিয়েটস কেইপিজেড শিল্প জোনে প্রচলিত বিধান মোতাবেক কার্যাদেশ প্রাপ্ত হয়ে গ্যাস পাইপ লাইন নির্মাণ কাজে গত ১৫ অক্টোবর থেকে পাইপ লাইন নির্মাণ কাজ শুরু করে। কাজ শুরু করার পর মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) দুপুরে শরিফ সিদ্দীকি নামের এক ব্যক্তি তাদের অনুমতি ছাড়া কাজ চালু করার কারণে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি একেএম অলিউল্লা হককে মুঠোফোনে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে।
এসময় প্রকল্পের কাজ কেন চালু করা হল তার কৈফিয়ত চেয়ে বলেন, কেইপিজেডে আমাদের সাথে বোঝাপাড়া, অনুমতি ছাড়া অতীতে কেউ কোনো প্রকার কাজ চালু করতে সাহস পায়নি এবং করেনি। আগামীকাল বুধবারের মধ্যে বোঝাপড়া না করলে সাইটের কাজ বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দেন। এরপর সাইটে গিয়ে সেখানে নিয়োজিত কর্মীদেরও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে চেইন দিয়ে পিটিয়ে হত্যার হুমকি দিয়ে কাজ বন্ধ রাখতে নির্দেশ দেন।
এ ঘটনার পরে অলিউল্লা হক কেইপিজেড সাইটে পাইপ লাইন স্থাপনের জন্য মাটি কাটার কাজে নিয়োজিত সাব কন্ট্রাকটার মো. জালাল উদ্দিনকে বিষয়টি জানালে তিনি হুমকিদাতার মোবাইল নাম্বার (০১৬৭৯-৪৪২২৫১) এ কল করে পাইপ লাইন নির্মাণ কাজের প্রকল্পের সাইটে এসে হুমকি দাতার পরিচয় কী, কেন হুমকি দিয়েছে তার কারণ জানতে চান। হুমকিদাতা কোনো সদুত্তর না দিয়ে লাইন কেটে দিলে কিছুক্ষণ পর ০১৮৮৬-৪৮৩৭৯০ নাম্বার থেকে জালাল উদ্দিনকে ফোন করে নিজেকে আনোয়ারা থানা যুবলীগের আহ্বায়ক শওকত ওসমান পরিচয় দিয়ে হুমকি প্রদানকারী শরিফ সিদ্দিকী তার লোক বলে জানান এবং কেন তার কাছে কৈফিয়ত চাওয়া হলো তার কারণ জানতে চেয়ে কীভাবে কাজ করে গ্যাস লাইনে তা দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। পরে ১৫-২০ জনের একটি গ্রুপ সাইটে গিয়ে প্রকল্পের কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে জানান অলিউল্লা হক।
তিনি আরও জানান, ২৬ অক্টোবর থেকে তারা হুমকি দিয়ে আসছেন। তারপর মঙ্গলবার কাজ বন্ধ করে দেন। থানায় জানালে পুলিশ গিয়ে কাজ চালু করতে সহযোগিতা করে। কিন্তু পুলিশ চলে আসার পর তারা সেখানে দল বেঁধে গিয়ে সাইটে কাজ করা শ্রমিকদের হুমকি দিয়ে আসছেন। যার কারণে মঙ্গলবার কাজ ছেড়ে তিন জন চলে গেছে। এভাবে হলে তো আমরা কাজ করতে পারবো না। বলেন অলিউল্লাহ
এ বিষয়ে কর্ণফুলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ঈসমাইল বলেন, অভিযোগ পেয়ে আমাদের টিম গিয়েছিল ঘটনাস্থলে, সেখানে স্বাভাবিকভাবে কাজ চলছে। আর কেউ চাঁদা দাবি করে কাজ বন্ধ করবে, সে যুগ এখন আর নেই। অভিযোগের বিষয়ে খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আনোয়ারা উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক শওকত ওসমান জানান, বিষয়টি আমি জানি না। দুপুরে আমাকে দক্ষিণ জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান ফোন করে বিষয়টি জানান। পরে বিষয়টি নিয়ে আমি শরীফের সাথে কথা বলেছি, তার বাড়ি রায়পুর। সে সিটি কলেজে ছাত্রলীগ করে। তার কাছে ঘটনা কী জানতে চাইলে সে জানায়, তারা নাকি কাজটি চেয়েছিল, যার কারণে ৫০ হাজার টাকা খরচও করেছে। কিন্তু কাজটি তারা পায়নি। যার কারণে ক্ষুব্ধ হয়ে এটা করেছে। আমি তাদের সতর্ক করে দিয়েছি যেন এ ধরনের কাজ আর না করে। কারণ তারা করলে সেটা আমাদের নাম হবে। তাকে ষড়যন্ত্র করে জড়ানো হচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি।