ডেস্ক | রাজধানীর মিরপুরের রূপনগরের আবাসিক এলাকায় গ্যাস সিলিন্ডার বিষ্ফোরণে ৫ শিশু নিহত হয়েছে। এলাকার একটি স্কুলের পাশে গ্যাস বেলুন তৈরির সময় এ বিষ্ফোরণ ঘটে। নিহত ছাড়াও বেশকজন শিশু আহত হয়েছে এ বিষ্ফোরণে। তাদের অবস্থা গুরুতর। হতাহতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে ধারণা করছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।
জানা যায়, দুপুরে আমার ছোট বোনের সাথে ভাত খেয়ে আমি ঘুমিয়ে ছিলাম। ঘুমের মধ্যে হঠাৎ বিকট শব্দে ঘুম ভেঙে যায়। বাইরে এসে দেখি কান্নাকাটির আওয়াজ। আর রক্তের স্রোত। আমার ছোট বোনটার মরহেদ রাস্তায় পড়ে আছে। তার সাথে আরো লাশ পড়ে আছে। কেউ কেউ আহত অবস্থায় কান্নাকাটি করছে।
এভাবেই বলছিলেন রূপনগর আবাসিক এলাকার শিয়ালবাড়ি বস্তিতে বেলুন ফোলানোর সিলিন্ডার বিস্ফোরণে নিহত ফারজানার ভাই শিহাব উদ্দিন।
নিজত ফারজামার ভাই আরো বলেন, লাশ সাথে সাথে আমি ঘরে নিয়ে আসি এরপর পুলিশ নিয়ে গেছে। লাশটা আমরা ভালোভাবে দেখতেও পারিনি। দুপুরে একসাথে ভাত খেয়েছি। আমি এই কষ্ট কিভাবে ভুলবো? এই ঘটনা কিভাবে ঘটলো জানি না। আমি এখন কি করবো কিছুই বুঝতে পারছি না।
এ ঘটনার লোমহর্ষক বর্ণনা দিচ্ছিলেন আরেক প্রত্যক্ষদর্শী সোহাগ। তিনি বলেন, হঠাৎ বিকট শব্দ শুনে যখন ঘর থেকে বেরিয়ে বাইরে আসি দেখি-বাচ্চারা রাস্তায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে। কেউ মরা, কেউ জীবিত, কেউ গোংড়াচ্ছে।
সোহাগ বলেন, ভাবছিলাম আমরা কারেন্টের চোরাই লাইন ব্যবহার করি। সেটার ট্রান্সমিটার বাস্ট করেছে। দেখি আমার ঘর কাঁপছে। পরে বাইরে আইস্যা দেখি রাস্তায় রক্ত আর মাংস ছিটিয়ে রয়েছে। চারদিকে ধোঁয়া আর ধোঁয়া।
সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. উত্তম কুমার বড়ুয়া জানান, এক নারী ও তিন শিশুসহ চারজনকে মৃত অবস্থায় এই হাসপাতালে আনা হয়। আহতদের মধ্যে চারজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বিস্ফোরণে নিহতদের শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ক্ষতবিক্ষত হয়। এ চারজনের দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদের ঢাকা মেডিক্যালে রেফার করা হয়।
এর আগে বেলুনের সিলিন্ডার বিস্ফোরণে আজ বুধবার বিকেলে রাজধানীর রূপনগরে তিন শিশু ও এক নারীসহ কমপক্ষে পাঁচজন নিহত ও বেশ কয়েকজন আহত হন। আহতদের ঢাকা ও সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।