ঢাকা: আইসিসির কোড অব কন্ডাক্টে বলা আছে, বাজিকরদের কাছ থেকে ম্যাচ বা স্পট ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব পেলে সংশ্লিষ্ট বোর্ডকে জানাতে হবে। না হয় আইসিসির দুর্নীতি দমন সংস্থা- আকসুকে অবহিত করতে হবে। সে খবর নিজে লুকিয়ে রাখলে সেটা শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে গণ্য হবে। সাকিব তার কোনোটাই করেননি। এই কারণেই দেশের ক্রিকেট ভক্তদের জন্য এসেছে নতুন দুঃসংবাদ। সাকিবকে দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এর মধ্যে এক বছর স্থগিত নিষেধাজ্ঞা। অপরাধ স্বীকার করে নেওয়ায় সাকিবকে এ শাস্তি দিয়েছে আইসিসি। অফিসিয়াল ওয়েব পেজের মাধ্যমে এক বিবৃতি দিয়ে এই তথ্য নিশ্চিত করে আইসিসি।
আইসিসি বিবৃতিতে জানায়, দুই বছরের জন্য সাকিবকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তবে তার মধ্যে এক বছর নিষেধাজ্ঞা স্থগিত রয়েছে। অপরাধ স্বীকার করে নেওয়ায় তাকে এক বছর পরই খেলার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে যদি তিনি এই ধরনের কোনো অপরাধ করেন তাহলে আবারো শাস্তি পেতে হবে। আইসিসি, জানিয়েছে ২৯ অক্টোবর ২০২০ থেকেই সাকিব আন্তার্জাতিক ক্রিকেটে পুনরায় খেলা শুরু করতে পারবেন।
ওয়েব পেজে প্রকাশিত বিবৃতিতে সাকিব আল হাসানের একটি বক্তব্য প্রকাশ করে সংস্থাটি। সেখানে তিনি বলেন, আমার ভালোবাসার খেলাটি থেকে নিষিদ্ধ হওয়ায় আমি অত্যন্ত বিষণ্ণ। তবে জুয়াড়ির প্রস্তাব বিষয়ে আইসিসিকে না জানানোর ফলে আমার বিরুদ্ধ যে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে সেটা আমি মেনে নিচ্ছি। দুর্নীতির বিরুদ্ধে ভূমিকা পালনের জন্য আইসিসির এসিইউ খেলোয়াড়দের ওপর আস্থা রাখে। কিন্তু আমি এক্ষেত্রে আমার দায়িত্ব পালন করতে পারিনি। তিনি বলেন, বিশ্বব্যাপী ক্রিকেটার এবং ফ্যানদের মতো আমিও চাই দুর্নীতিমুক্ত ক্রিকেট। আমি আইসিসির এসিইউ টিমের শিক্ষা প্রোগ্রামে অংশ নিয়ে তাদের সহযোগিতা করতে চাই এবং আমি যে ভুলটি করেছি তা যেনো আর কোনো তরুণ ক্রিকেটার না করেন সেটি নিশ্চিত করতে সহযোগিতা করতে চাই।
আইসিসির দুর্নীতিবিরোধী কোডের তিনটি আইন লঙ্ঘনের অপরাধে তাকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে। আকসুর ধারা ২.৪.৪ আর্টিকেলের মধ্যেই তিনটি অপরাধ করেছিলেন সাকিব। সেগুলো হলো-
প্রথমত, ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে শ্রীলঙ্কা, জিম্বাবুয়ের ত্রিদেশীয় সিরিজ বা ২০১৮ আইপিএলে প্রথম ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব পান সাকিব। কিন্তু এ বিষয়ে তিনি আইসিসির অ্যান্টি করাপশন ইউনিটকে বিস্তারিত কোনো তথ্যই দেননি।
দ্বিতীয়ত, একই ধারার অধীনে ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে ত্রিদেশীয় সিরিজের সময়ই আরো একটি ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব পেয়েছিলেন। কিন্তু সে বিষয়েও তিনি আইসিসিকে কিছুই জানায়নি। কোনো ধরনের কিস্তারিত তথ্য সাকিব জানাননি।
তৃতীয়ত, ২০১৮ সালে আইপিএল খেলা চলাকালে সানরাইজার্স হায়দরাবাদ এবং কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের মধ্যকার ম্যাচেও ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব পান সাকিব। কিন্তু সে বিষয়েটিও তিনি লুকিয়ে রেখেছিলেন। আইসিসি কিংবা সংশ্লিষ্ট দুর্নীতি দমন সংস্থাকে কোনো ধরনের তথ্য জানাননি সাকিব।