মেহেদুল হাসান আক্কাছ, গোয়ালন্দ(রাজবাড়ী): রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে দ্রুত গতির দুই মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে গুরুতর আহত হয় দুই মোটরসাইকেল আরোহী। এসময় বিপ্লব হোসেন (৩০) নামে একজনের জুতার ভেতর থেকে বেরিয়ে পড়ে ১৮টি স্বর্ণের বার। ঘটনাটি ঘটেছে রোববার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের দৌলতদিয়া সাইন বোর্ড এলাকায়।
বিপ্লব হোসেন মানিকগঞ্জ জেলার সিংগাইর উপজেলার গোবিন্দল গ্রামের ফরহাদ হোসেনের ছেলে। তবে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিপ্লব স্বর্ণের বারগুলো বৈধ দাবি করে জানান, ১৮টি নয় ২০টি স্বর্ণের বার ছিল তার জুতার ভিতর। দ্রুত এবং দুষ্কৃতিকারীদের সন্দেহের বাইরে থাকার জন্য তিনি তার মালিকের পরামর্শে এ উপায় বেঁছে নিয়েছিলেন।
বিপ্লব ঢাকার তাঁতী বাজারের সুরঞ্জিত নামের এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীর কর্মচারী। তিনি স্বর্ণের বারগুলো যশোরের ইব্রাহিম নামক এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীর নিকট নিয়ে যাচ্ছিলেন বলে হাইওয়ে পুলিশ জানায়।
আহত বিপ্লব হোসেন দাবী করেন, তার কাছে ২০টি স্বর্ণের বার ছিলো। স্বর্ণগুলো বৈধ এবং এর কাগজপত্র রয়েছে।
দূর্ঘটনায় শান্ত (৩৩) নামের অপর মোটরসাইকেল আরোহী গুরুতর আহত হয়েছেন। তিনি গোয়ালন্দ পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের কুমড়াকান্দি গ্রামের জনাব আলীর ছেলে।
এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৫জনকে গোয়ালন্দ ঘাট থানা পুলিশ তাদের হেফাজতে নিয়েছে। তারা হলেন-বিপ্লবের মোটরসাইকেলের যাত্রী মানিকগঞ্জ জেলার সিংগাইর উপজেলার গোবিন্দল গ্রামের দেওয়ান মো. জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে দেওয়ান মো. ইসমাইল হোসেন (২৬), দৌলতদিয়ার আঞ্জু বেগম (৪০), আব্দুর রাজ্জাক (৪৫), আব্দুল করিম শেখ, মো. বাদশা মিয়া (৪৫)।
এদের মধ্যে বিপ্লবের মোটরসাইকেলের যাত্রী দেওয়ান ইসমাইল হোসেন জানান, বিপ্লব আমার এলাকার ছেলে এবং ঘনিষ্ঠ পরিচিত বলে মহাসড়ক থেকে তার মোটরসাইকেলে উঠি। আমি কুষ্টিয়াতে বিএডিসি’র চাকুরীতে যোগদানের জন্য যাচ্ছিলাম। ইচ্ছা ছিলো গোয়ালন্দ মোড় পর্যন্ত তার সাথে এসে সেখান থেকে কুষ্টিয়ার বাসে উঠে যাবো। কিন্তু তার আগেই দৌলতদিয়া ঘাটে এ দূর্ঘটনাটি ঘটলো। স্বর্ণের বার সম্পর্কে আমি কিছুই জানি না।
স্থানীয় আঞ্জু বেগম জানান, দৌলতদিয়ার সাইন বোর্ড এলাকায় দুইটি দ্রুত গতির পালসার মোটর সাইকেলের সংর্ঘষ হয়। এতে মোটর সাইকেল দুটি দুমরে মুচরে যায়। স্থানীয়রা এগিয়ে এসে আহতদের উদ্ধার করে গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠায়। পরে থানা পুলিশ আসলে রাস্তার উপর পড়ে থাকা চামড়ার জুতার ভেতর থেকে পাওয়া ১৮ পিস স্বর্ণের বার তারা পুলিশকে দেন।
গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি রবিউল ইসলাম জানান, দূর্ঘটনার শিকার মোটরসাইকেল আরোহীর জুতার ভেতর থেকে ১৮ পিস স্বর্ণের বার উদ্ধার করেছে স্থানীয়রা। স্বর্ণের বারের বিষয়ে কোন বৈধ কাগজপত্র এখনো পাননি তারা। স্বর্ণের বার বহনকারী বিপ্লব গুরুতর আহত থাকায় তার চিকিৎসা চলছে। দুইটি স্বর্ণের বার হারিয়ে যাওয়ায় স্থানীয় কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। প্রতিটি বারের ওজন ১০০গ্রাম করে হবে বলে তিনি ধারনা করেন।