ডেস্ক | মারা গেছেন বিশ্বের সবচেয়ে বড় জঙ্গি নেতা আবু বকর আল বাগদাদি। শনিবার সিরিয়ার ইদলিব প্রদেশে চালানো এক মার্কিন হামলার সময় নিজের তিন সন্তানসহ আত্মহত্যা করেছেন জঙ্গি গোষ্ঠী আইএসের প্রধান। রোববার বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭:২৪ মিনিটের (মার্কিন সময় রোববার সকাল ৯টা ২৪) দিকে এক ঘোষণায় এমনটা জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। বাংলাদেশ সময় রোববার সকাল থেকেই আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে উঠে আসে মার্কিন হামলায় বাগদাদি নিহতের খবর। সারাদিন শেষে সন্ধ্যায় খবরটির সত্যতা নিশ্চিত করেন ট্রাম্প।
ট্রাম্প জানান, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জানান, অভিযানটি পরিচালনার জন্য রুশ আকাশসীমা ব্যবহার করেছে মার্কিন সেনারা। নিজের ঘোষণায় রাশিয়া, সিরিয়া, তুরস্ক, ইরাক ও সিরীয় কুর্দদের অভিযানে সহায়তার জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি। বলেছেন, সিরীয় কুর্দরা অভিযানটি পরিচালনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ সহায়তা প্রদান করেছে।
অভিযানটি পরিচালনার নির্দেশ দিয়েছিলেন ট্রাম্প নিজে।
নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে পুরো অভিযানটি দেখেছেন তিনি। তিনি বলেন, অভিযানটি খুবই বিপজ্জনক ছিল। স্থানীয়দের পক্ষ থেকে বাধাপ্রাপ্ত হয়েছে সেনারা। তাদের উদ্দেশ্য করে গুলি চালিয়েছে স্থানীয়রা। পাল্টা গুলিতে ওইসব স্থানীয়দের মেরে ফেলা হয়েছে। অভিযানে কোনো মার্কিন সেনা হতাহত হয়নি।
যেভাবে মারা গেলেন বাগদাদি
বিগত কয়েক সপ্তাহ ধরে বাগদাদির ওপর নজরদারি করা হচ্ছিল। শনিবারের অভিযানের আগেও তাকে হত্যার জন্য ২-৩টি অভিযানের পরিকল্পনা করা হয়। তবে সেগুলো পরিচালিত হয়নি। অবশেষে শনিবার রাতে সিরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় ইদলিব প্রদেশে এই অভিযান চালানো হয়।
ট্রাম্প তার ঘোষণায় বলেছেন, বাগদাদি কুকুরের মতো মরেছেন, কাপুরুষের মতো মরেছেন। তিনি জানিয়েছেন, মার্কিন অভিযানে কোণঠাসা হয়ে আত্মঘাতী বোমা দিয়ে নিজেকে উড়িয়ে দিয়েছেন বাগদাদি। এসময় তার সঙ্গে তার তিন সন্তানও নিহত হয়।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, অভিযান চলাকালে প্রাণ বাঁচাতে একটি সুরঙ্গে প্রবেশ করেন বাগদাদি। এসময় তিনি তার নিজের তিন সন্তানকে নিয়ে সঙ্গে নিয়ে গেছিলেন। মৃত্যুর আগ দিয়ে চিৎকার ও আর্তনাদ করছিলেন বাগদাদি। কিন্তু সুরঙ্গটির অপর প্রান্ত বন্ধ থাকায় সেখানেই আটকে পরেন তারা। পুরো সুরঙ্গটিতে তিনি ও তার সন্তানরা ছাড়া আর কেউ ছিল না এসময়। মার্কিন সেনাবাহিনীর প্রশিক্ষিত কুকুরের দল তাকে তাড়া করতে থাকে সুরঙ্গের মধ্যে। এমন অবস্থায় নিজেকে উড়িয়ে দেন বাগদাদি।
ট্রাম্প জানিয়েছেন, বাগদাদি মৃত্যুর পূর্বে চিৎকার করে কাঁদছিলেন। ঘটনাস্থল থেকে মার্কিন সেনারা আরো ১১ শিশুকে উদ্ধার করেছে। তারা সম্পূর্ন সুস্থ রয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন ট্রাম্প। ঘটনায় সেনাবাহিনীর একটি কুকুর আহত হয়েছে বলেও জানান তিনি।
ট্রাম্প বলেছেন, বাগদাদি ছিলেন একজন অসুস্থ মানসিকতা ও দুশ্চরিত্র ব্যাক্তি। তিনি যেমন সহিংস মানুষ ছিলেন, তার মৃত্যুও হয়েছে তেমন নির্মম। অভিযান সফল হওয়ায় মার্কিন গোয়েন্দাদের অভিনন্দন জানিয়েছেন ট্রাম্প। হামলায় বাগদাদি সহ তার বহু সহযোগীও নিহত হয়েছেন বলে জানান তিনি।