ঢাকা: যুবলীগের বহিষ্কৃত নেতা এস এম গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জি কে শামীম ও খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া ওরফে ক্যাসিনো খালেদকে অবৈধ সম্পদ অর্জনের পৃথক দুই মামলায় সাত দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। আজ রবিবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ ও জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতের বিচারক (ভারপ্রাপ্ত) মো. আল মামুন পৃথক আদেশে এই রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
গত ২২ অক্টোবর এই দুজনকে দুই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। একই সঙ্গে দুজনকে পৃথক দুই মামলায় ১০ দিন করে রিমান্ডের আবেদন করা হয়। আদালত আজ আসামির উপস্থিতিতে শুনানির দিন ধার্য করেন। আজ দুজনকেই আদালতে হাজির করা হয়। অন্যদিকে পৃথক জামিনেরও আবেদন করা হয়। আদালত শুনানি শেষে জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে প্রত্যেককে সাত দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে গত ২০ অক্টোবর এই দুজনের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা করে দুদক। মামলায় জি কে শামীম ও তাঁর মা আয়েশা আক্তারের বিরুদ্ধে ২৯৭ কোটি আট লাখ ৯৯ হাজার টাকা এবং খালেদ মাহমুদের বিরুদ্ধে পাঁচ কোটি ৫৮ লাখ ১৫ হাজার ৮৫৯ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়।
জি কে শামীম ও তাঁর মায়ের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন দুদকের উপপরিচালক ও অনুসন্ধান কর্মকর্তা মো. সালাউদ্দিন। একই দিন অনুসন্ধান কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে খালেদ মাহমুদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এই দুজনই তদন্ত কর্মকর্তা।
মামলার বিবরণে জানা যায়, শামীম ২০১৮-২০১৯ করবর্ষ পর্যন্ত ৫০ কোটি টাকার স্থাবর সম্পদের মালিক হয়েছেন। এর মধ্যে আয়কর নথিতে ৪০ কোটি ২১ লাখ ৪০ হাজার ৭৪৪ টাকার তথ্য উল্লেখ করলেও মোট টাকার বৈধ উৎস খুঁজে পায়নি দুদক। এ ছাড়া ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের সময় শামীমের বাসা থেকে উদ্ধার হওয়া নগদ এক কোটি ৮১ লাখ ২৮ হাজার টাকা ও সাত লাখ ৪৭ হাজার টাকার বিদেশি মুদ্রা, শামীম ও তাঁর মা আয়েশা আক্তারের নামে ১৬৫ কোটি ২৭ লাখ ৬৫ হাজার টাকার এফডিআর, মায়ের নামে আরো ৪৩ কোটি ৫৭ লাখ ৪০ হাজার টাকার ব্যবসার অংশীদার এবং জিকেবি অ্যান্ড কম্পানির শেয়ার, গাড়ি ও এফডিআর বাবদ ৩৬ কোটি ৩৫ লাখ ১৮ হাজার ৭১৯ টাকার অস্থাবর সম্পদেও বৈধ উৎস পায়নি দুদক। দুদকের অনুসন্ধানে আয়েশা আক্তারের কোনো বৈধ আয়ের উৎসও খুঁজে পাওয়া যায়নি।
অন্যদিকে খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় চার কোটি ৫০ লাখ টাকার স্থাবর সম্পদ এবং ৯০ লাখ ১৬ হাজার ৭০৯ টাকার অস্থাবর সম্পদেও বৈধ উৎস পাওয়া যায়নি বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া গত ১৮ সেপ্টেম্বর র্যাবের অভিযানে তাঁর গুলশানের বাসা থেকে ১৭ লাখ ৯৯ হাজার ১৫০ টাকার বিভিন্ন দেশের মুদ্রা জব্দ করা হয়। দুদকের অনুসন্ধানে কিংবা জিজ্ঞাসাবাদে এর কোনো উৎস দেখাতে পারেননি খালেদ। এসব মিলিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে মোট পাঁচ কোটি ৫৮ লাখ ১৫ হাজার ৮৫৯ টাকার অবৈধ সম্পদের অভিযোগ আনা হয়েছে।