ঢাকা: মাদক ও অস্ত্র মামলায় গ্রেপ্তার ঢাকা মহানগর যুবলীগের (দক্ষিণ) বহিষ্কৃত সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত (সিএমএম) আজ বৃহস্পতিবার এই আদেশ দেন।
এর আগে গত ১৫ অক্টোবর রমনা থানার অস্ত্র ও মাদক মামলায় ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটকে দশ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দেন আদালত।
আদালত সূত্র বলছে, আদালতের আদেশের পর সম্রাটকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে র্যাবের গাড়িতে করে সম্রাটকে ঢাকার সিএমএম আদালতের হাজতখানায় হাজির করা হয়। আদালতের আদেশে সম্রাটকে প্রিজন ভ্যানে করে কেরানীগঞ্জে কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।
গত ৬ অক্টোবর সম্রাট ও তাঁর এক সহযোগী যুবলীগের সহসভাপতি এনামুল হক আরমানকে কুমিল্লা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। সেখান থেকে তাঁদের ঢাকায় আনা হয়।
এরপর র্যাব সম্রাটকে নিয়ে তাঁর কাকরাইলের কার্যালয়ে অভিযান চালায়। সম্রাটের কার্যালয়ে ক্যাঙারুর দুটি চামড়া, মাদকদ্রব্য, অস্ত্র পাওয়া যায়। এ ঘটনায় র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলমের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত সেদিন তাঁকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন। আটকের সময় মদ্যপ থাকায় সম্রাট ও আরমানকে ছয় মাস করে কারাদণ্ড দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
এ ঘটনায় র্যাব বাদী হয়ে সম্রাটের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য ও অস্ত্র আইনে পৃথক দুটি মামলা করে।
অস্ত্র মামলায় র্যাব দাবি করেছে, ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট ঢাকার দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি হিসেবে দলের ছত্র ছায়ায় ও ক্ষমতার প্রভাব বিস্তার করে রাজধানীর বিভিন্ন ক্লাব পরিচালনা করতেন। তাঁর নিয়ন্ত্রণে ওই সব ক্লাবে ক্যাসিনোসহ জুয়ার আসর বসত। জুয়া খেলা থেকে সম্রাট বিপুল অর্থ সম্পদের মালিক হন। সম্রাট নিজেও ক্যাসিনো খেলায় সিদ্ধহস্ত। প্রতি মাসে খেলার জন্য তিনি সিঙ্গাপুরে যান। সকলের কাছে তিনি ক্যাসিনো সম্রাট হিসেবে পরিচিত। মতিঝিল, আরামবাগ, ফকিরাপুল, পল্টনসহ প্রায় ১০টি ক্লাবে অবৈধ ক্যাসিনো ব্যবসায় তাঁর সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। রয়েছে তাঁর ক্যাডার বাহিনী। সম্রাটের অন্যতম সহযোগী কাউন্সিলর মমিনুল হক সাঈদ ও খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া।
তবে আদালতে সম্রাটের আইনজীবীরা দাবি করেছেন, রাজনৈতিকভাবে হয়রানি করার জন্য তাঁকে মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সম্রাট অপরাধের সঙ্গে জড়িত নন। মিথ্যা মামলায় সম্রাটকে ফাঁসানো হয়েছে।
সম্রাটের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত সহসভাপতি এনামুল হক আরমানকে মাদক মামলায় রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে র্যাব।
আর ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের বহিষ্কৃত সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে হত্যা মামলায় রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। বুধবার খিলগাঁও থানার জোড়া খুনের মামলায় খালেদের সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।