ঢাকা:বিজিবির সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধের পর উদ্ধার করা অস্ত্র ও মাদক
কক্সবাজারের টেকনাফে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও পুলিশের সঙ্গে পৃথক ‘বন্দুকযুদ্ধে’ দুই যুবক নিহত হয়েছেন।
রোববার ভোরে উপজেলার মহেষখালীয়া পাড়া নৌঘাট ও উনছিপ্রাংয়ের মদিনার জোড়া সংলগ্ন নাফ নদীর তীরে এসব বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে।
বিজিবি ও পুলিশের ভাষ্য, নিহত দুজনই মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। ঘটনাস্থল থেকে মাদক ও অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
নিহতরা হলেন– টেকনাফের হোয়াইক্যং কানজর পাড়ার প্রয়াত আবদুল জলিলের ছেলে রহিম উদ্দিন ওরফে রফিক (৩৭) ও সদর ইউনিয়নের ডেইল পাড়া এলাকার ছালে আহমেদের ছেলে মো. আজিজ (২৩)।
টেকনাফ-২ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল মোহাম্মদ ফয়সল হাসান খান বলেন, মিয়ানমার থেকে একটি ইয়াবার চালান নাফ নদী দিয়ে টেকনাফের হোয়াইক্যং উনছিপ্রাংয়ের মদিনার জোড়া নামক এলাকায় প্রবেশ করছে– এমন তথ্যের ভিত্তিতে বিজিবির একটি বিশেষ দল ওই এলাকায় অবস্থান নেয়। এক পর্যায়ে নদীর তীরে একজনকে ঘোরাঘুরি করতে দেখা যায়। কিছুক্ষণ পরে একটি নৌকায় আরও কয়েকজন আসে। এসময় বিজিবি সদস্যরা তাদের থামার নির্দেশ দিলে তারা বিজিবির ওপর গুলি চালায়। আত্মরক্ষার্থে বিজিবিও পাল্টা গুলি চালায়। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে পাচারকারীরা গুলি ছুঁড়তে ছুঁড়তে নৌকা নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে ওই এলাকায় তল্লাশি চালিয়ে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় রহিম উদ্দিনকে উদ্ধার করে টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য কক্সবাজার হাসপাতালে পাঠান। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
বিজিবির এই কর্মকর্তা বলেন, ঘটনাস্থল থেকে একটি দেশীয় এলজি, ৩ রাউন্ড কার্তুজ, ৬০ হাজার পিস ইয়াবা ও দুটি কিরিচ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
এদিকে টেকনাফ মডেল থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাস জানান, শনিবার রাতে একদল পুলিশ টেকনাফ পৌরসভার শাপলা চত্বর এলাকা থেকে মাদক কারবারী মো. আজিজকে আটক করে। পরে তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী রোববার ভোরে তিনিসহ পুলিশের বিশেষ টিম টেকনাফ সদরের মহেষখালীয়া পাড়া নৌঘাট এলাকায় আটক ব্যক্তির আস্তানায় অস্ত্র ও ইয়াবা উদ্ধারে গেলে তার সহযোগীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। এসময় আত্মরক্ষার্থে পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। এই গোলাগুলিতে পুলিশের তিন সদস্য আহত হয়।
তিনি বলেন, পরে ঘটনাস্থল থেকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আজিজকে উদ্ধার করে টেকনাফ উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে চিকিৎসক তাকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। সেখানে নেওয়ার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে নেওয়া হয়।
ওসি বলেন, ঘটনাস্থল থেকে একটি দেশীয় এলজি, ৭ রাউন্ড কার্তুজ ও ৩ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশের তিন সদস্য– উপ-পরিদর্শক মো. কামরুজ্জামান, সহকারী উপ-পরিদশক মো. মিশকাত ও কনেস্টবল রুমান দাশ আহত হয়েছেন।
টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক শঙ্কর চন্দ্র দেবনাথ বলেন, পুলিশ ও বিজিবির সদস্যরা দুজন গুলিবিদ্ধ ব্যাক্তিকে নিয়ে আসেন। তাদের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় গুলির আঘাত ছিল। এছাড়া আহত পু্লিশ সদস্যদের চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।