নোবেল বিজয়ী দম্পতিরা

Slider জাতীয় টপ নিউজ সারাবিশ্ব


ডেস্ক: ২০১৯ সালের অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার ঘোষণা করেছে রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্সেস। চতুর্থ বাঙালি হিসেবে এবার নোবেল জিতেছেন ভারতের কলকাতায় জন্ম নেওয়া অভিজিৎ ব্যানার্জি। তবে শুধু অভিজিৎ নন, একই সঙ্গে এ বছর নোবেল জিতেছেন তাঁর স্ত্রী এস্তার দুফলোও। স্বামী-স্ত্রীর একই সঙ্গে নোবেলজয়ের ঘটনা ইতিহাসে খুব একটা দেখা যায়নি। এই নিয়ে মাত্র পঞ্চম দম্পতি হিসেবে একই বছরে একই বিভাগে নোবেল পেলেন অভিজিৎ-দুফলো দম্পতি। অভিজিৎ-দুফলোর সৌজন্যে অন্য চার নোবেল বিজয়ী দম্পতির গল্পও শুনে নেওয়া যাক।

প্রথম ব্যক্তি হিসেবে দ্বিতীয়বার নোবেল জিতে ইতিহাসের পাতায় নাম লিখিয়েছিলেন মেরি কুরি। অন্য এক দিক থেকেও কিন্তু নিজের নাম অমর করে রেখেছেন তিনি। মেরি কুরি ও পিয়েরে কুরিই প্রথম দম্পতি, যাঁরা একই বছর একই বিভাগে নোবেল পুরস্কার জিতেছেন। ১৯০৩ সালে স্বামী পিয়েরে কুরির সঙ্গে মিলে পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল জেতেন তিনি। শুরুতে অবশ্য মেরি কুরির নাম ওই বছরের নোবেলজয়ীদের তালিকায় ছিল না। কিন্তু স্বামী পিয়েরে কুরির আপত্তির পর পর্যালোচনা করে মেরিকেও নোবেল দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

আইরিন কুরি-ফ্রেডেরিক কুরি
মেরি কুরি-পিয়েরে কুরি দম্পতির পদাঙ্ক অনুসরণ করেছেন তাঁদের পরিবারেরই অন্য দুই সদস্য। ১৯৩৫ সালে রসায়নে নোবেল জেতেন মেরি-পিয়েরে দম্পতির বড় মেয়ে আইরিন কুরি ও তাঁর স্বামী ফ্রেডেরিক কুরি। মা-বাবার প্রতিষ্ঠিত রেডিয়াম ইনস্টিটিউটেই নিজের গবেষণাকাজ শুরু করেন আইরিন। ১৯২৪ সালে মেরি কুরির সহায়ক হিসেবে সেখানে যোগ দেন ফ্রেডেরিক। আইরিনের হাত ধরেই তেজস্ক্রিয়তা–সংক্রান্ত গবেষণায় হাতেখড়ি হয় ফ্রেডেরিকের। ১৯২৬ সালে বিয়ে করেন আইরিন ও ফ্রেডেরিক। এর নয় বছর পর ১৯৩৫ সালে কৃত্রিম তেজস্ক্রিয়তা আবিষ্কারের জন্য রসায়নে নোবেল জেতেন এই দম্পতি।

গার্টি সোরি-কার্ল সোরি
গার্টি ও কার্লের পথচলার শুরু হয়েছিল অনেক আগে থেকেই। একসঙ্গে মেডিকেল কলেজে পড়েছেন, পাস করেছেন, এরপর নোবেলটাও পেয়েছেন একই সঙ্গে। অস্ট্রিয়ায় জন্ম নেওয়া এই দুই বিজ্ঞানী তাঁদের গবেষণার বেশির ভাগটাই করেছেন যুক্তরাষ্ট্রে। প্রায় ৩০ বছরের নিরলস গবেষণার পর ১৯৪৭ সালে গ্লুকোজ ও গ্লাইকোজেনের বিপাক ক্রিয়া সংক্রান্ত গবেষণার জন্য চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল জেতেন গার্টি-কার্ল দম্পতি।

গার্টি-কার্ল দম্পতির পর একই বছরে আর কোনো নোবেল বিজয়ী দম্পতির দেখা পাওয়া যায়নি বহু বছর। অবশেষে ৬৭ বছর পর ২০১৪ সালে এসে চতুর্থবারের মতো একই সঙ্গে নোবেল জেতেন মে ব্রিট মোজার-এডভার্ড মোজার দম্পতি। মস্তিষ্কের পজিশনিং সিস্টেম গঠনকারী কোষ আবিষ্কারের জন্য ২০১৪ সালে চিকিৎসাবিদ্যায় নোবেল জেতেন এই দম্পতি।

অভিজিৎ ব্যানার্জি- এস্তার দুফলো
তালিকায় নবতম সংযোজন হিসেবে আজ যুক্ত হয়েছেন অভিজিৎ-দুফলো দম্পতি। যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজিতে (এমআইটি) সহকর্মী হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করার পর ২০১৫ সালে বিয়ে করেন অভিজিৎ ও দুফলো। এর আগে এমআইটিরই আরেক অধ্যাপক অরুন্ধতী তুলি ব্যানার্জিকে বিয়ে করেছিলেন অভিজিৎ। অরুন্ধতীর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের পর দুফলোর সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন অভিজিৎ। বৈশ্বিক দারিদ্র্য দূরীকরণে পরীক্ষামূলক গবেষণার জন্য ২০১৯ সালে অর্থনীতিতে নোবেল জিতলেন এই দম্পতি।

এই পাঁচটির বাইরে কিন্তু আরও একটি নোবেলজয়ী দম্পতি আছে। এই দম্পতি হলো, আলভা মিরডাল-গানার মিরডাল দম্পতি। ওপরের পাঁচ দম্পতির সঙ্গে এই দম্পতির মূল পার্থক্য হলো, এখন পর্যন্ত একমাত্র দম্পতি হিসেবে আলাদা আলাদাভাবে এবং ভিন্ন বিভাগে নোবেল জিতেছেন আলভা-গানার দম্পতি। ১৯৭৪ সালে অর্থনীতিতে নোবেল জেতেন গানার। আর ১৯৮২ সালে শান্তিতে নোবেল জেতেন আলভা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *