ঢাকা:কুমিল্লার দাউদকান্দিতে ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম সরকার হত্যা মামলায় বাবা ও দুই ছেলেসহ ৯ আসামির ফাঁসি এবং চার আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে প্রত্যেক আসামির এক লাখ টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে দুই বছর করে কারাদণ্ড ঘোষণা করা হয়। সোমবার চট্টগ্রাম বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ আবদুল হালিমের আদালত এ রায় দেন।
রায় ঘোষণার সময় ফাঁসির দুই আসামি ও যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত চার আসামি আদালতে হাজির ছিলেন। এরপর তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।
ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার হাট চান্দিনা গ্রামের মো. হারুণ মিয়া, তার দুই ছেলে মো. সজীব ও মো রাজিব, একই এলাকার মো. শাওন, আমিন, রবু, মো. মমিন, আবু তাহের ও মহসিন। এদের মধ্যে মহসিন ও আবু তাহের রায় ঘোষণার সময় আদালতে হাজির ছিলেন। বাকিরা পলাতক থাকায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা ইস্যু করা হয়েছে।
মামলার অপর চার আসামি মতিন, শাহ পরান, শামিম ও খোকন মিয়াকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। রায় ঘোষণার সময় তারা সবাই আদালতে হাজির ছিলেন। অপরাধ প্রমাণ না হওয়ায় আসামি নয়ন মিয়া, মোছলেম মিয়া ও বিলালকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।
বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের পিপি অ্যাডভোকেট আইয়ুব খান সমকালকে বলেন, ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম সরকারকে খুনের দায়ে ৯ জনের ফাঁসি, চারজনের যাবজ্জীবন ও তিন আসামিকের বেকসুর খালাস দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। রায় ঘোষণার সময় ছয় আসামি আদালতে হাজির ছিলেন। বাকিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা ইস্যু করা হয়েছে।
জাহাঙ্গীর আলমের দাউদকান্দির গৌরিপুর বাজারে একটি মুদি দোকান ছিল। পূর্বশক্রতার জেরে ২০১৩ সালের ১ ডিসেম্বর গৌরীপুরে তাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় ২ ডিসেম্বর জাহাঙ্গীরের বাবা ফজল আলী বাদী হয়ে ১৪ জনকে আসামি করে দাউতকান্দি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। তদন্ত শেষে ২০১৪ সালের ১৬ মার্চ গৌরিপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এসআই মো. আসাদুজ্জামান মিয়া ১৬ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। এরপর ২০১৫ সালে মামলাটি কুমিল্লা আদালত থেকে চট্টগ্রাম দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এরপর ট্রাইব্যুনাল মামলার ১৩ সাক্ষীর সাক্ষ্য শেষে এ রায় দেন।
মামলা বাদী ফজল আলী বলেন, মামলার রায়ে আমি খুশি। এখন খুনিদের দ্রুত ফাঁসি কার্যকর করতে সরকারের কাছে অনুরোধ করছি।