যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী ওরফে সম্রাট কোনো অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয় বলে দাবি করেছেন তার মা সায়রা খাতুন চৌধুরী। ছেলে নির্দোষ দাবি করে প্রধানমন্ত্রীর কাছে মুক্তি প্রার্থনাও করেন তিনি।
আজ রোববার রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে পরিবারের পক্ষ থেকে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন সায়রা খাতুন।
সংবাদ সম্মেলনে সম্রাটের মায়ের পক্ষে তার বোন ফারহানা চৌধুরী লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। বক্তব্যে বলা হয়, সম্রাট গ্রেপ্তারের ১০ দিন আগে থেকে অফিসে ছিলেন না, অফিস ছিল অরক্ষিত। শরীর খারাপ থাকায় অন্যত্র অবস্থান করছিলেন। তার অফিসে মদ, ইয়াবা, পিস্তল কিছুই ছিল না। আমাদের আশঙ্কা, এটি পরিকল্পিত সাজানো নাটক ছাড়া কিছুই না।
সায়রা খাতুন চৌধুরী বলেন, ‘গত ৬ অক্টোবর আমার সন্তানকে গ্রেপ্তার করা হয়। যে স্থান থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় সে স্থান থেকে কোনো প্রকার অস্ত্র কিংবা মাদক পাওয়া যায়নি।
কিন্তু আমরা মিডিয়ার মাধ্যমে দেখতে পেলাম, তাকে কাকরাইল অফিসে নিয়ে যাওয়া হয় এবং প্রায় চার ঘণ্টা তার অফিসে তল্লাশি করা হয়। তল্লাশি চলাকালীন কোনো গণমাধ্যমকর্মীকে ভেতরে প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি। সম্রাটকে নিয়ে অফিসের ভেতরে প্রবেশের সময় বিভিন্ন মিডিয়ায় লাইভ সম্প্রচারে দেখা গেছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কিছু লোক কাঁধে ব্যাগ নিয়ে প্রবেশ করে।’ বিভিন্ন ক্লাবের ক্যাসিনো সঙ্গে সম্রাটের জড়িত থাকার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ঢাকা শহরের প্রতিটি ক্লাব পরিচালনা করার জন্য কমিটি রয়েছে। আমার সন্তান সম্রাট কোনো ক্লাবের পরিচালনা কমিটির সদস্য নয় এবং ডাক গ্রহণকারীও নয়। শুধুমাত্র রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে এবং ব্যক্তিগত আক্রোশে তাকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে জড়ানো হচ্ছে।’
সম্রাটের কার্যালয়ে ক্যাঙ্গারুর চামড়া পাওয়া যাওয়ায় তাকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। এ প্রসঙ্গে সম্রাটের মা বলেন, ‘বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনে যে মামলায় তাকে ছয়মাসের সাজা দেয়া হয়েছে সে মামলার আদেশ আমরা এখনও হাতে পাইনি। ক্যাঙ্গারু বাংলাদেশি বন্যপ্রাণী নয় এবং বাংলাদেশ এই প্রাণীটির বিচরণ দেখা যায় না। যেহেতু এই ক্যাঙ্গারু বাংলাদেশের শিকার হয়নি, তাই এটি বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনের মধ্যে পড়ে না।’
ক্যাঙ্গারু চামড়াটি এক প্রবাসী বাংলাদেশি সম্রাটকে উপহার হিসেবে দিয়েছেন দাবি করে সায়রা খাতুন বলেন, এটি আইনবিরোধী কাজ নয়। এজন্য সাজা দেয়ার বিধান নেই।
সম্রাট দলে অনুপ্রবেশকারী নয় দাবি করে প্রধানমন্ত্রীর কাছে তার সন্তানের উন্নত চিকিৎসার জন্য মুক্তি দাবি করেন মা সায়রা খাতুন চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘আমি একজন মা হিসেবে আপনার কাছে আকুতি করছি, সম্রাটের ভুলত্রুটি ক্ষমা করে ওকে মুক্ত করে দিন। তাকে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দিয়ে আমার সন্তানের জীবন রক্ষা করুন।’