ডেস্ক | ভারত সফর শেষে বাংলাদেশে ফিরেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার এ সম্পর্কে গণভবনে সংবাদ সম্মেলন করবেন তিনি। তবে এরইমধ্যে বুয়েট ছাত্র আবরার ফাহাদের হত্যাকণ্ডনিয়ে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়গুলো উত্তপ্ত হয়ে আছে। ভারতের প্রভাবশালী গণমাধ্যম দ্য হিন্দু এ নিয়ে লিখেছে, প্রধানমন্ত্রীকে হয়ত আবরার হত্যাকাণ্ড নিয়ে ওই সংবাদ সম্মেলনে বিব্রতকর প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হবে।
ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক চুক্তিগুলো নিয়ে প্রশ্ন তোলার পর হত্যার শিকার ছাত্র আবরার ফাহাদের বিষয়টি দ্য হিন্দুতে প্রকাশিত প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে। ফেসবুকে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক চুক্তি নিয়ে প্রশ্ন তোলার পর দ্বিতীয় বর্ষে পড়া ছাত্র আবরার ফাহাদকে ‘জিজ্ঞাসাবাদ’ করতে নিয়ে যায় ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ। এরপর রাত ৩ টায় হলের মধ্যেই তার মৃতদেহ পাওয়া যায়।
ফেসবুকে প্রকাশিত ফাহাদের স্ট্যাটাসটিও তুলে ধরেছে দ্য হিন্দু। এতে ফাহাদ প্রশ্ন করেছিলো, কেনো বাংলাদেশ ফেনি নদী থেকে কেনো কোনো প্রতিদান ছাড়াই ভারতকে ১.৮২ কিউসেক পানি দিচ্ছে? বাংলাদেশ থেকে ভারতে পেট্রোলিয়াম গ্যাস রপ্তানি নিয়েও প্রশ্ন করেছিলো ফাহাদ।
দ্য হিন্দুকে ঢাকাভিত্তিক একজন সাংবাদিক জানান, বাংলাদেশে শেখ হাসিনার ভারত সফরকে দেখা হচ্ছে এভাবে যে- তিনি ভারতকে সব দিয়ে যাচ্ছেন কিন্তু বিনিময়ে কিছু নিয়ে আসেননি। ফলে ওই চুক্তিগুলো নিয়ে প্রশ্ন তোলায় আবরার ফাহাদের হত্যাকাণ্ড বাংলাদেশিদের অনুভুতিকে নারা দিয়েছে। দ্য হিন্দুকে আবরার ফাহাদের এক বন্ধু জানান, ভারত ও আওয়ামীলীগবিরোধী পোস্ট করায় আবরারকে প্রশ্ন করা হয় সে ইসলামি ছাত্র শিবিরের সঙ্গে যুক্ত কিনা। এরপর হলের এক রুমে তাকে দীর্ঘসময় ধরে তাকে পিটানো হয়। ময়নাতদন্তেও চিকিৎসকরা মৃত্যুর কারণ হিসেবে শারীরিক নির্যাতনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এ ঘটনার পর দেশের বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ সমাবেশ অব্যাহত রেখেছে। সাধারণত প্রধানমন্ত্রী বড় ধরণের কোনো বিদেশ সফর শেষে সংবাদ সম্মেলন করে থাকে। তারই ধারাবাহিকতায় বুধবার তিনি ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র সফর নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করবেন। এসময় হয়ত তিনি আবরার হত্যাকাণ্ড নিয়ে সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করবেন। সরকারি কর্মকর্তারা একমত পোষণ করেছেন যে, এই ইস্যুটি কঠিন হয়ে উঠছে এবং প্রধানমন্ত্রী যত দ্রুত বিষয়টি নিয়ে কথা বলবেন ততই ভালো।