ঢাকা: যুবলীগের বহিষ্কৃত নেতা ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটের কার্যালয় রাজধানীর কাকরাইলের ভূঁইয়া ট্রেড সেন্টার ছিল মাদকের আখড়া। ভবনটির চারতলায় সম্রাটের বিশ্রামকক্ষ থেকে এক হাজার ১৬০ পিস ইয়াবা এবং সংরক্ষণের আড়াই হাজার জিপার প্যাকেট উদ্ধার করেছে র্যাব। এসব জিপারে কয়েক লাখ ইয়াবা রেখে বিক্রি বা অন্য স্থানে সরানো হয়েছে। সম্রাটের কক্ষে একটি র করা হয়েছে ১৯ বোতল মদ। তদন্ত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, ভবন থেকে অনেক জিনিস সরিয়ে ফেলার আলামত পাওয়া গেছে। সম্রাটের যোগসাজশে ব্যাপক নিরাপত্তাবলয়ের মধ্যে এনামুল হক আরমান মাদকের কারবার চালাচ্ছিলেন। এই অফিস থেকে ট্রাকভর্তি টাকা সরানো হয়েছে বলেও গুঞ্জন রয়েছে।
গত ১৮ সেপ্টেম্বর ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরুর পর সম্রাট তাঁর কার্যালয়ে অবস্থান নিয়েছিলেন। সেখানে অবস্থানকালে তাঁকে আটকের গুঞ্জনও ছড়িয়ে পড়ে। ওই সময় ভূঁইয়া ট্রেড সেন্টার থেকে পিকআপে করে বেশ কিছু জিনিসপত্র সরিয়ে ফেলা হয় বলে জানিয়েছে স্থানীয় একাধিক সূত্র। কাকরাইলের দুজন ব্যবসায়ী বলেন, অনেক রাত পর্যন্ত ভূঁইয়া ট্রেড সেন্টারে গাড়ি আসা-যাওয়া করত। এর মধ্যে পিকআকও দেখা যায়। ২২ সেপ্টেম্বরের পর ভবনটি নীরব দেখা যায়।
এদিকে ২০ সেপ্টেম্বর ঢাকা থেকে দুই পিকআপ ভর্তি টাকা চট্টগ্রামের দিকে গেছে বলে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে। গোয়েন্দারা এ ব্যাপারে খোঁজ নিচ্ছেন। তদন্তকারীদের কয়েকজনের ধারণা, সেখান থেকে অনেক টাকা সরিয়েছেন সম্রাট। সম্রাটকে রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করার সুযোগ পেলে এসব জানতে চাওয়া হবে।
রবিবারে অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া আরেক র্যাব কর্মকর্তা বলেন, ‘আলামত ও সব কিছু দেখে আমরা নিশ্চিত হয়েছি, ভূঁইয়া ট্রেড সেন্টার থেকে অনেক জিনিসপত্র সরিয়ে ফেলা হয়েছে।’
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের (ডিএনসি) সূত্র জানায়, গত বছরের ২০ মার্চ ফকিরাপুলের কালভার্ট সড়কের ৩৭/২ অমিত-জামান টাওয়ারের ১৩ ও ১৪ তলায় সম্রাটের মালিকানাধীন ক্যাসিনোতে অভিযান চালাতে গিয়ে বেকায়দায় পড়েন কর্মকর্তারা। সেখান থেকে মদ, ফেনসিডিল, বিয়ার, সিসাসহ অনেক মাদকদ্রব্য জব্দ করেন তাঁরা। জব্দ করা হয় প্রায় ৪০ লাখ টাকা। তবে সম্রাটের ক্যাডার বাহিনীর হুমকি এবং ‘বিশেষ ফোনে’ সটকে পড়তে হয় ডিএনসি কর্মকর্তাদের। ডিএনসির ঢাকা মেট্রো উপ-অঞ্চলের উপপরিচালক (ডিডি) মুকুল জ্যোতি চাকমা বলেন, ‘তখন অভিযান চালাতে পারলে আরো অনেক কিছু হয়তো ধরা পড়ত।’