সোনিয়া মন্ডল
গ্রাম বাংলা নিউজ২৪.কম
কলকাতা ব্যুারো: বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জের সেভেন মার্ডারের প্রধান আসামী নূর হোসেনসহ পাঁচ সহযোগীকে গ্রেফতার পশ্চিম ভঙ্গ পুলিশ। আসামীরা বর্তমানে বাবুইহাটি থানায় পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। রোবাবার তাদের বারাসাত আদালতে হাজির করা হতে পারে।
শনিবার কলকাতার নেতাজী সুভাস চন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের (দমদম বিমানবন্দর) নিকটবর্তী বাগুইহাটির একটি বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের স্পেশাল টাস্কফোর্সের একটি দল শনিবার স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ১১টার দিকে তাকে গ্রেফতার করে। ওই বাড়ির চতুর্থ তলায় জুয়ার আসর থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয় বলে জানা গেছে।
নূর হোসেনের সাথে গ্রেফতার হওয়া অন্যরা হলো- ঢাকার দুর্র্ধর্ষ তিন সন্ত্রাসী শামীম, আসিক ও আসিফ। তারা বর্তমানে বাবুইহাটি থানায় পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। রোবাবার তাদের বারাসাত আদালতে হাজির করা হতে পারে।
গ্রেফতারের সময় নূর হোসেনের কাছে একটি রিভলবার ও কয়েক রাউন্ড গুলি পাওয়া যায় বলে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের এক শীর্ষ কর্মকর্তা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।
ওই কর্মকর্তা বলেন, নূর হোসেন কিছু দিন ধরে ওই এলাকার একটি বহুতল ভবনের পাঁচতলায় একটি ফ্যাটে থাকতেন। স্থানীয়রা জানতেন তিনি অসুস্থ এবং চিকিৎসার জন্য কলকাতায় এসেছেন।
গত এক মাসের বেশি সময় নূর হোসেন ওই ভবনে ছিলেন বলে ভবনের অন্য বাসিন্দা ও নিরাপত্তারক্ষীরা পুলিশকে জানিয়েছেন।
গত ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের প্যানেল মেয়র নজরুল ও জ্যেষ্ঠ আইনজীবী চন্দন সরকারসহ সাতজন অপহৃত হওয়ার তিন দিন পর শীতলক্ষ্যা নদীতে তাদের লাশ ভেসে ওঠে।
অপহরণের পরপরই নজরুলের পরিবারের পক্ষ থেকে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নূর হোসেনকে প্রধান আসামি করে একটি মামলা করা হয়।
মামলার পর অভিযোগ অস্বীকার করে সংবাদ মাধ্যমে বক্তব্য দিলেও অপহৃতদের লাশ উদ্ধারের পর লোকচুর আড়ালে চলে যান নূর হোসেন।
নূর হোসেন ও তার সহযোগীরা র্যাবকে ছয় কোটি টাকা দিয়ে নজরুলসহ সাতজনকে হত্যা করিয়েছে বলে নিহত কাউন্সিলরের শ্বশুর শহীদুল ইসলাম অভিযোগ করেন।
তার অভিযোগের ভিত্তিতে র্যাব-১১ এর তৎকালীন কমান্ডার তারেক সাঈদ মোহাম্মদসহ তিন কর্মকর্তাকে প্রথমে দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার এবং পরে সামরিক বাহিনী থেকে চাকরিচ্যুত করা হয়।
এর উচ্চ আদালতের নির্দেশে ওই তিন কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করা হয়, যাদের দুজন হত্যাকাণ্ডে ‘দোষ স্বীকার’ করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।
এরইমধ্যে নূর হোসেনকে ধরতে পুলিশের আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারপোলের সহযোগিতা চায় বাংলাদেশ পুলিশ।
পরিবহন শ্রমিক থেকে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর হওয়া নূর হোসেন শীতলক্ষ্যার তীরে অবৈধ বালু ব্যবসাসহ বিভিন্ন ধরনের অবৈধ ব্যবসা চালাতেন। সিদ্ধিরগঞ্জ ট্রাকস্ট্যান্ডে তার কয়েকটি দোকান থেকে বিপুল পরিমাণ মাদক ও অস্ত্র উদ্ধার করেছে পুলিশ।