ঢাকা: পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র তাহমিদ পড়ে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর দনিয়ার আদর্শ স্কুল অ্যান্ড কলেজে। মা-বাবার সঙ্গে কাজলারপাড়ে থাকে সে। সকাল ১০টা থেকে স্কুল শুরু তার। আজ মঙ্গলবার তার স্কুলে ক্লাস চলাকালে বাইরে শুরু হয় ঝুমবৃষ্টি। ছুটির পর বাইরে এসে সে দেখে স্কুলের সামনে হাঁটুপানি। বাধ্য হয়ে জুতা খুলে হাতে নিয়ে পানি মাড়িয়ে বাসার দিকে রওনা হতে হয় তাহমিদকে। তখনো ঝরছিল বৃষ্টি। এই চিত্র কেবল দনিয়ায় নয়, পুরান ঢাকার অনেক সড়কই আজ বৃষ্টির পানিতে ডুবে যায়।
কিশোর সিরাজুল থাকে দয়াগঞ্জ মোড়ে। বেলা দেড়টার দিকে বন্ধুদের নিয়ে দয়াগঞ্জের সড়কে জমে থাকা বৃষ্টির পানিতে দুরন্তপনা করতে নামে সে। সিরাজুল বলল, ‘অনেকক্ষণ ধরে বৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টিতে এখানে অনেক পানি। তাই বন্ধুদের নিয়ে মজা করতে এসেছি। খুব আনন্দ লাগছে।’
দয়াগঞ্জের এই সড়ক ধরে স্কুলপড়ুয়া মেয়ে তাসলিমাকে নিয়ে ভিজতে ভিজতে আসছিলেন গৃহবধূ আসমা খাতুন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘যাওয়ার সময় দেখেছি সড়কে কোনো পানি নেই। অথচ মেয়ের স্কুল ছুটি শেষে দেখতে পাচ্ছি হাঁটু সমান পানি। একটু বেশি বৃষ্টি হলে এখানে রোজই এমন পানি জমে। মানুষ চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়ে।’
আজকের বৃষ্টিতে পুরান ঢাকার বিভিন্ন এলাকার সড়কে পানি জমে থাকতে দেখা গেছে। একই চিত্র দেখা যায় রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার সড়কে। এতে চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়ে লোকজন।
পুরান ঢাকার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন আবদুল্লাহ। থাকেন যাত্রাবাড়ী। দয়াগঞ্জ মোড়ে হাঁটুপানিতে দাঁড়িয়ে আবদুল্লাহ বলেন, ‘সত্যিই খুব খারাপ লাগছে। অফিস করব কীভাবে? জামাকাপড় ভিজে গেছে।’
দুপুরের দিকে যখন ঝুমবৃষ্টি হচ্ছে, তখন পুরান ঢাকার মুরগিটোলা মোড়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন আব্বাস উদ্দিন। তিনি যাবেন তাঁর ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান নয়াবাজার মোড়ে। আব্বাস উদ্দীন বলেন, ‘বৃষ্টি হলে রিকশাওয়ালাদের দাম বেড়ে যায়। ২০ টাকার ভাড়া ৫০ টাকা হাঁকিয়ে বসে থাকে। কিছু করার নেই, যেতে হয়।’