গ্রাম বাংলা ডেস্ক: সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান হত্যাকাণ্ডের বিচারের জন্য বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও তার বড় ছেলে তারেক রহমানকে আগে রিমান্ডে নিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
চীন সফর অত্যন্ত ফলপ্রসূ ও ফসল হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি। তিনি বলেন, তিনি বলেন, বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে উন্নত ও শান্তির দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। সবার সহযোগিতা থাকলে এ কাজ কঠিন হবে বলে আমি মনে করি না। সার্বিক বিবেচনায় চীনের সাথে সব ক্ষেত্রে সহযোগিতা ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক হবে।
শনিবার বিকেলে গণভবনে তার চীন সফর নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে ‘জিয়া হত্যার জন্য শেখ হাসিনাকে রিমান্ডে নিতে হবে’ তারেক রহমানের এমন বক্তব্যের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়া ১৯৯০ সালে গুলিস্তানের এক জনসভায় জিয়ার হত্যাকাণ্ডের জন্য হঠাৎ এরশাদকে খুনি হিসেবে আখ্যায়িত করেছিলেন। কিন্তু যাকে খুনি হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন তার কাছ থেকেই দুটি বাড়ি ও গাড়ি নিয়েছেন। এছাড়া খালেদা জিয়া ও তার ছেলেকে আমি প্রশ্ন করবো, জিয়া হত্যার পর তারা কেন লাশ দেখতে যায়নি। তাই রিমান্ডে নিলে আগে মা-ছেলেকে নিতে হবে। কারণ তাদের কতটুকু সম্পৃক্ততা আছে সেটা আগে দেখতে হবে।
‘সংলাপে বসতে বিএনপি যে কোন সময় রাজি’ ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন প্রতিনিধিকে দেয়া খালেদা জিয়ার এমন বক্তব্যের বিষয়ে জানতে সাংবাদিকরা চাইলে শেখ হাসিনা বলেন, উনাকে (খালেদা জিয়া) তো আমি নিজে টেলিফোন করেছিলাম। এরপর ফোনে তিনি আমাকে যে ঝাড়ি দিয়েছেন সেটা তো আপনারা দেখেছেন। এছাড়া কাদের সাথে সংলাপে বসবো। খুনিদের সাথে।
গত ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে আন্দোলনে কত মানুষকে হত্যা করেছে, দেশের কি ক্ষতি করেছে। কারণ তারা একদিকে বলে সংলাপ আরেক দিকে বলে রিমান্ডে নেবে। তাদেরকেই আগে ঠিক করতে হবে তারা কি চায়।
ফলমূলে ফরমালিনের ব্যবহার নিষিদ্ধের ব্যাপারে শেখ হাসিনা বলেন, ফরমালিন আমদানি তো আর বন্ধ করা যাবে না। তবে এর ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে চীন সফরের সফলতার নানা দিক তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। এর মধ্যে রয়েছেÑ চীনের সহায়তা বাড়ানোর ঘোষণা, দেশটিতে বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের বৃত্তির পরিমাণ ও সংখ্যা বাড়ানোসহ দ্বিপাক্ষিক নানা সহযোগিতার আশ্বাস।
বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে এমন প্রত্যাশার কথা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ২১২১ সালের মধ্যে আমরা দেশকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করবো। এজন্য আমরা বিদেশী বিনিয়োগ আনার জন্য কাজ করছি। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে উন্নত ও শান্তির দেশে পরিণত করতে চাই। আসুন যার যার অবস্থান থেকে কাজ করে যাই। আর সবাই সহযোগিতা করলে এটা বিষয় না। উল্লেখ্য, গত ৬ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াংয়ের আমন্ত্রণে ছয়দিনের এক সরকারি সফরে ওই দেশে যান। সফরে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে আনুষ্ঠানিক আলোচনা ছাড়াও ঢাকা ও বেইজিংয়ের মধ্যে দুটি চুক্তি ও তিনটি সমঝোতা স্মারক সই রয়েছে।
চুক্তিগুলো হচ্ছে- বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে অর্থনৈতিক ও কারিগরি সহযোগিতা এবং পটুয়াখালীতে যৌথ উদ্যোগে কয়লাভিত্তিক গুরুত্বপূর্ণ বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা।
সমঝোতা স্মারকগুলো হচ্ছে- চট্টগ্রামে চীনের অর্থনৈতিক ও বিনিয়োগ অঞ্চল প্রতিষ্ঠা, কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণ এবং মুন্সিগঞ্জ জেলার গজারিয়ায় গার্মেন্ট পল্লী প্রতিষ্ঠা।